এটা আমার প্রথম ব্লগ লিখা, এটা লিখার পেছনে আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খুঁজে বের করার ইচ্ছা আছে, সেইসব মধুর স্মৃতিকে স্মরন করা, যে গুলো আমার ছোটবেলা কে রঙিন করে রেখেছিল, স্মরন করতে চাই সেই সব বন্ধুদের, যাদের কারণে আমার প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল খুবই আনন্দদায়ক, যাক আসল কথা শুরু করি।
রামগঞ্জ, লক্ষীপুর জেলার একটি থানা, মফস্বল শহর, আমার বাবা সরকারী চাকুরে, যার জন্য বাংলাদেশ এর অনেক জায়গায় আমাদের যেতে হয়েছিল। রামগঞ্জে ও সে কারণে যাওয়া, আমার বয়স যখন ৫ তখন গিয়েছিলাম সেখানে, ৪ বছর পর সেখান থেকে চলে আসি, তা ও আব্বুর চাকরির কারনে, এখন ও মনে পরে প্রথম যে দিন রামগঞ্জ যাই, সে দিনের কথা, রামগঞ্জ পৌছেছিলাম সকাল ৭ টায়, আমরা থাকতাম ওয়াপদা কলোনীতে, রামগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড এর পাশে ছিল। কলোনীটা ছিল খুব সুন্দর, বাসার সামনে ছিল বেশ বড় একটা খেলার মাঠ, একটা বিশাল দিঘী ছিল, আমার প্রথম সাঁতার শেখা এই দিঘী তে, মনে পড়ে প্রথম যেদিন বিদ্যালয়ে যায় সেদিনের কথা, বিদ্যালয় টা ছিল কলোনী থেকে ১০ মিনিটের, এখনকার মতো এতো বেশী রিকশা অথবা সিএনজি ছিল না, তাই পদযুগল ই ছিল ভরসা, প্রথম বিদ্যালয়ের স্মৃতি তেমন কিছুই মনে নেই আমার, শুধু তিন জন মানুষ ছাড়া, ফাতেমা আপা, খুব ভাল অংকের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি, থাকতেন আমাদের উপরের তলায়, আপার একটা বাচ্ছা ছিল ১ বৎসর বয়স, খুবই আদুরে, দ্বিতীয় জন হচ্ছে হুজুর স্যার, কেন জানি না, এই স্যারকে আমার খুবই ভাল লাগতো, স্যার ও আমাকে খুবই আদর করতো, এখন ও মনে আছে, স্যার আমার জন্য উনার বাড়ি থেকে পাকা আম নিয়ে এসেছিল, তৃতীয় জন হচ্ছে বিষ্ণু, একটা মেয়ে, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী আমি এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছিলাম, বিষ্ণু সবসময় আমার পাশেই বসতো, ওর আম্মা ছিল পাশের উচ্চ বিদ্যালয়ের (মেয়েদের) শিক্ষিকা। যা হোক, এই বিদ্যালয় আমার ভাল লাগে নাই, এই বিদ্যালয়ে থাকার সময় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো প্রথম শ্রেণীতে উপজেলা বৃত্তি পাওয়া, তখনকার সময় এই বৃত্তিটা ছিল খুবই রাজসিক, উপজেলার সবগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরাই এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছিল, প্রথম শ্রেণীতে আমি প্রথম হয়েছিলাম, ৩০০ টাকা পেয়েছিলাম পুরস্কার হিসেবে।
পরের বৎসর চলে এলাম "রামগঞ্জ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়", এখানে এসে বুঝলাম প্রতিযোগীতা কাহাকে বলে, উহা কত প্রকার ও কি কি? এখানে এ্যাডমিশান এর সময় একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল, সাধারণত, নতুন কোন বিদ্যালয়ে আসলে নতুন ছাত্র এর রোল নাম্বার হয় সবার পরে, কিন্তু আমার হয়েছিল ৩। শোভন নামে একজন ছাত্র বিদ্যালয় ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তখন শ্রেণী শিক্ষিকা আপা জিজ্ঞেস করলো "তোমাকে রোল নাম্বার ৩ দিলে সেটা ধরে রাখতে পারবে?" আমার আগের বিদ্যালয়ে রোল নাম্বার ছিল ১, তাই কিছুটা হলে ও আতেঁ ঘা লেগেছিল, আপাকে বললাম "আগে তো দিয়ে দেখেন", আমার জীবনের প্রথম ত্যারা উত্তর, আপা কি বুঝছে জানি না, উনি আমাকে আর কিছুই বলেন নাই, এখানে এসে পেলাম এক ঝাঁক বন্ধু, ফরহাদ, টিপু, জোবায়ের, কামাল, কামরুল, তাহমিনা, শিখা রাণী দাশ সহ আরো অনেকে, নাম মনে করতে পারতেছিনা বলে কষ্ট লাগছে।
পরের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




