আগের পর্ব
নতুন বিদ্যালয়ে আসলে সাধারণত অনেক সমস্যা শুরু হয়, যেমন, পুরানো বন্ধুদের মনে পরা, নতুন বিদ্যালয়ে যারা আছে তারা ঠিক মতো সাহায্য না করা, পড়াশুনা বুঝতে দেরী হওয়া ইত্যাদি,ইত্যাদি। কিন্তু আল্লাহর রহমত যে আমাকে ফরহাদ এর মতো একজন বন্ধু পাইয়ে দিয়েছিলেন। ফরহাদ ছিল আমাদের ক্লাসের রোল ১, পরে ওর সাথে আমার প্রতিযোগীতা ছিল দারুন। ওর কারণে এই বিদ্যালয় আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছিল।
এই বিদ্যালয় ছিল আমাদের বাসা থেকে বেশ দূরে, হেঁটে যেতে প্রায় ৪০-৫০ মিনিট লাগতো, তারপর ও এই জায়গাটা ছিল দারুন, দেড় বছর এই বিদ্যালয়ে ছিলাম, কিন্তু কখনো মনে পড়ে না স্কুল খোলা অবস্থায় আমি বাসায় ছিলাম। এর অন্যতম কারণ ছিল স্কুল পরিবেশ, নতুন বন্ধুরা এবং আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ
রামগন্জ মডেল বিদ্যালয়টা ছিল মূল রাস্তার সাথে লাগানো, ইংরেজী "এল" অক্ষরের মতো, একপাশে বেশ বড় একটা পুকুর, পেছনে বিশাল একটা বন-জঙ্গল, আর সামনে ছিল খেলার মাঠ। পেছনের জঙ্গলটা ছিল আমাদের জন্য এডভেন্চারের জন্য উপযুক্ত স্থান, কারণ এমনিতে জঙ্গলটা ছিল আয়তনে বিশাল, চট্টগ্রামের প্যারেড মাঠের সমান হবে। আর অনেক ধরনের ফলের গাছ ছিল সেখানে, সত্যি বলতে গাছের ফলগুলো ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য
এই স্কুলের স্যারদের মধ্যে খুবই ভালো লাগতো মোশারফ স্যার (অংক) এবং করিম স্যার (ইংরেজী)। মোশারফ স্যার শুধু অংকই পড়াতেন না, তিনি ছিলেন আমাদের শারিরীকশিক্ষার শিক্ষক। স্যারের হাতে কখনো বেত দেখেছি কিনা মনে পড়েনা। করিম স্যার ছিল ঠিক তার উল্টো, জীবনে কখনো ডাবল বেত ছাড়া ক্লাসে এসেছেন কিনা সন্দেহ আছে, তবে ইংরেজী পড়াতেন দারুন, স্যার প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটারের মতো সাইকেল চালিয়ে আসতেন, একদিন ক্লাসে আমাদের হেভী মার লাগাইছিল, ছেলে-মেয়ে কেউ বাদ নাই, সেটার শাস্তিস্বরূপ উনার সাইকেলের দুইটা চাকাই অঙ্গতা কারণবশত লিক হয়ে গিয়েছিল, বেচারাকে দুইদিন হেঁটে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়েছিল, কাজটা ছিল, আমি, ফরহাদ এবং কামালের, তবে স্যারের মারামারিটা অনেক কমে গিয়েছিল। স্যারের কাছে পরে অবশ্য মাফ চেয়ে নিয়েছিলাম, স্যার কিছু না বলে একটা সবজান্তা মার্কা হাসি দিয়ে মাফ করে দেয়।
পরের পর্বে আমার বন্ধুদের কথা থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




