গতকাল রাত ১১.৩০ টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। দেখতে পেলাম অনেকেই আড্ডা, গল্প করছে, শহুরে বাস্তুহারাদের কেউ কেউ আবার ঘুমুচ্ছে।
প্রথমত, একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম যে, মূল বেদিতে সবাই জুতাসহকারেই উঠেছে এবং হাতে চায়ের কাপ, সিগারেট, অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যসহ যাবতীয় আবর্জনা ওখানেই ফেলে যাচ্ছে। অদূরেই সম্ভবত কেউ গাজাঁ সেবন করছিল, যার ঘ্রান বাতাসে মিশে বাতাসটা বেশ ভারী হয়ে উঠেছিল।
একজন বাঙ্গালী হয়ে, বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক হয়ে বিষয়টা মেনে নেয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছিল। ভাবছিলাম গর্ব, অহমিকার জায়গাটার এই অবমূল্যায়ন। সরকার কি চাইলে পারে না জায়গাটিতে পুলিশ, আনসার অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর ২০ জন সদস্য মোতায়ন করতে? পারে না চার পাশের খোলা জায়গাগুলিতে ৫ জন মালী রেখে ফুলের বাগান করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পরিপাটী করে রাখতে?
এখন মনে হচ্ছে আমরা জাতি হিসেবে বড়ই অকৃতজ্ঞ। যারা আমাদের মুখের বুলির জন্য এতটুকু ত্যাগ স্বীকার করে গেল, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো তো দূরে থাক, কৃতজ্ঞতা প্রকাশটুকুই করতে পারি না। মৌসুমী ১ দিন মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেই আমরা খালাস। বাকি ৩৬৪ দিন চলুক না স্বাধীন বাংলার, স্বাধীন নাগরিকদের ইচ্ছে মতো!!
যে জায়গাটির গল্প বিশ্ব ইতিহাস, ঐতিহ্যে যুক্ত করেছে আমাদের গৌরবময় অধ্যয়, পরিচিত করেছে আমাদেরকে 'বাঙালী' হিসেবে; নতুন প্রজন্মের বাঙালী হিসেবে সেই বাঙালীত্বের এই রকম অধঃপতন আমি চাই না। চাই ভাষা শহীদদের প্রকৃত সম্মান। মুখ থেকে নয়, হৃদয় থেকে। জানুক তাদের ত্যাগ এবং কৃতিত্বগাথা। এই ইতিহাস বয়ে চলুক যুগ থেকে যুগান্তরে- গর্বে, শ্রদ্ধায়, আত্মতৃপ্তি আর যথাযথ মর্যাদায়; আজ এবং আগামী প্রজন্মে।।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩