চায়না ল্যাবের মুরগীগুলাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাদের অসাধারন মেধা, পরিশ্রম দিয়ে এই মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। কারন, তাদের এই জ্ঞান-বিঞ্জানে অসামান্য অবদানের কারনে হয়তো ভবিষ্যত প্রজন্ম জানবে - 'ডিম-ই আগে, মুরগীর কোন ভূমিকা নেই।'
ব্যাচেলর জীবনে চলতে গেলে খাবারে ডিমের বিকল্প নেই। সস্তায় অধিক পরিমানে প্রাণীজ পুষ্টি একমাত্র ডিম দিয়েই পূরণ করা যায়। কিন্তু আজকাল সেই পুষ্টির আশা নিয়ে ডিম খাওয়া যেন গুড়েবালি। অনেকদিন আগে চীনামানবদের সায়েন্টিফিক ইনভেনশন সম্পর্কে একটা প্রতিবেদন পড়েছিলাম, যেখানে "রাসায়নিক ল্যাবের মাধ্যমে সিনথেটিক ডিম উৎপাদন" বিষয়টি এসেছিল। কিন্তু সেটার প্রসার বছর ঘুরতে না ঘুরতে সারা বিশ্বব্যাপী বাজারজাত হবে তা বুঝতে পারিনি।
একসময় প্রচুর ডিম খেতাম। ভাতের সাথে একটা ডিম হলেই আমার দিনের পর দিন চলতো। এই ডিম-ই একমাত্র খাবার যাতে কখনো অভক্তি আসতো না। কিন্তু চীনামানবেরা এমন কৃত্তি করে বসলো যে, এখন ডিম দেখলেই মনে হয় এটা মুরগী পাড়েনি, চীনামানবেরা পেড়েছে। ঘটনাটি প্রথম পরিলক্ষিত হয় রংপুর মেডিকেল কলেজে। দু'জন রোগীর জন্য চারটা ডিম দেয়া হলে সেটা নিয়ে তিনবন্ধুর মাঝে বন্টনে সমস্যা দেখালে এক পর্যায়ে কাড়াকাড়ি চলতে থাকে। ইতঃমধ্যে, একটা ডিম গলাধঃকরন হলে কিছুটা অস্বস্তি অনুভুত হয়। দ্বিতীয় ডিমটি ছিলতে গিয়ে অনুসন্ধানী মন একটু সতর্কতা অবলম্বন করতেই বুঝতে পারলো কিছুটা গড়মিল রয়েছে। প্রথমেই খোসা ছাড়াতেই চোখে পড়লো ডিমের সাদা অংশের মাঝে একটা কালো ময়লা (বাচ্চা ফুটানোর জন্য প্রস্তুত ডিমে যে ময়লার মতো অংশ দেখা যায় তা কিন্তু নয়, প্রকৃতপক্ষেই সেটি ময়লা।) তারপর চোখে পড়লো অস্বাভাবিক সাদা অংশ- কুসুমের অনুপাত, আকৃতি, স্বাদ এবং গন্ধ। অতঃপর অনেকদিন আগে পড়া সেই প্রতিবেদনটির কথা মনে পড়লো। বুঝতে পারলাম সস্তায় খাবার সরবরাহের জন্য হয়তো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তুলনামূলকভাবে কমদামী ডিমটাই বেছে নিয়েছেন। তারপর থেকে অসংখ্যবার এই সিনথেটিক ডিম চোখে পড়েছে। বিশেষতঃ হোটেলগুলোতে এর আধিক্য বেশ লক্ষণীয়। একসময় বাজারে ডিম কিনতে গেলে দেখা যেত ডিমের কেইসের মাঝে কিছু ডিমে মুরগীর বৃিষ্ঠা লেগে আছে। সেই ডিমটা যদি দোকানদার দিতে চাইতেন তবে সেটা নিতে ইতঃস্ততবোধ করতাম। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি পুরোটাই উল্টো হয়ে দাড়িয়েছে। বৃিষ্ঠালাগানো ডিম দেখলে একটু হলেও মনে আশার আলো জ্বলে - আজ বোধহয় প্রকৃত ডিমের পুষ্টি পেতে চলছি।
যা হোক, বিশ্ব খাদ্য ঘাটতি মেটাতে চীনাদের এই অসামান্য কৃতিত্ব ফেলবার নয়। মাসখানিক আগে আরেকটি প্রতিবেদন পড়লাম, যার শিরোনাম ছিল - "চীনা প্লাস্টিক চাউলের আতংকে ভারত।" সাম্প্রতি চীন ডিম উৎপাদন ও বিপণণে বেশ সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি এবার বিশ্ববাজারে তাদের আেকটি পণ্যের প্রসার ঘটাতে যাচ্ছে। আর সেটি হলো - জৈব প্লাস্টিক থেকে চাউল উৎপাদন। যে চাউল ভাতের মতোই দেখতে কিন্তু ভাতের প্রকৃত গুনাগুন থাকবে না। ভাত প্রধান দেশগুলিতে খাদ্য ঘাটতি মেটাতে হয়তো বিশ্বায়নের এই যুগে খুব শীঘ্রই দখল করে নিবে চীনামানবদের আবিষ্কৃত প্লাস্টিকের চাউল। ইতঃমধ্যে আমরা যখন ডিম খেয়েছি, তখন হয়তো খুব বেশি দেরি নেই ভাত খাওয়ার। শুধু সময়ের অপেক্ষা।।
বিস্তারিত জানতে পারেনঃ
http://www.ibtimes.com.au/made-china-top-5-fake-gross-chinese-products-gutter-oil-viral-video-1322565
http://wereblog.com/fake-rice-from-china
http://gistandrhymes.com/how-to-make-fake-rice-the-chinese-way
http://m.thejakartapost.com/news/2015/05/26/china-ready-share-results-synthetic-rice-test.html
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭