আমাদের জীবনের প্রায় অর্ধেকটা চলে যায় লেখা-পড়া করে ভবিষ্যতে নিজেকে একটা ভাল অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেই। উদ্দেশ্য মাতা-পিতা, ভাই-বোনদের আশা পূরণ করা। তবে এর মাঝেই গড়ে ওঠে আর একটি স্বপ্ন, আর তা হলো, বিয়ে করে বউ বাচ্চাদের নিয়ে একটি সুখি জীবন পরিচালনার স্বপ্ন। কিন্তু এই স্বপ্নকে পূরণ করতে দরকার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার দাম্পত্য জীবনকে টিকিয়ে রাখা; আর এর জন্য দরকার নিজেদের মধ্যকার ভালবাসাকে গভীর করা। আসুন তাহলে জেনে নেই, সেই গুরুত্বপূর্ণ টিপস্ গুলিঃ
১। অনেকের জীবনেই অতীতে ঘটে যাওয়া কিছু প্রেম-ভালবাসার সৃতি থাকতেই পারে, আর সেটা একজন আর একজনকে না জানানোটাই ভালো। যদি জোর করে কেউ জানতেই চায় বা জানার জন্য বিভিন্ন কথার ফাঁদ পাতে, তাহলেও এক কথায় না বলাই ভালো। কারণ, এসকল ক্ষেত্রে জীবনের কোন সময়ই রিক্স নেয়া ভাল না।
২। একজন আর একজনকে প্রচন্ড রকম ভালবাসা দরকার, যাতে কারো মন অন্য কারো দিকে যাওয়ার সুযোগ না পায়।
৩। তারপরও অন্ধ বিশ্বাস না করে, উভয় পক্ষেরই কিছু খোজ খবর রাখা দরকার।
৪। স্বামীদের যেরকম উচিত স্ত্রীদের বেশী বন্ধু বান্ধব বা পুরুষদের সংস্পর্শে না নিয়ে যাওয়া, তেমনি স্ত্রীদেরও উচিত স্বামীদের বেশী বান্ধবীদরে সাথে পরিচয় করিয়ে না দেয়া।
৫। স্বামীদের যেরকম উচিত স্ত্রীদের নিজেদের ভাইদের (দেবরদের) থেকে দূরে রাখা, তেমনি স্ত্রীদেরও উচিত নিজের বোনদের (শালীদের) দুলাভাইদের ভরসায় না ছেড়ে দেয়া।
৬। একজন রেগে উঠলে আর এক জন শান্ত থাকার চেষ্টা করা বা এটা ভাবা যে, শান্ত থাকাটাই তার রাগ নামানোর মহাওউষধ। কোন সময়ই দুজন একসাথে রেগে না উঠা বা উঠলেও একজন থেমে যাওয়া।
৭। যে কোন সমস্যাকে সমাধানের জন্য দু'জনে মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া। যদি একতরফা সিদ্ধান্ত মনে হয়, তাহলে খুব ভেবে দেখা, আসলেই কি সে ঠিক বলল; যদি ঠিক মনে না হয়, তবে তা যাচাই করার জন্য যাকে আপনার খুব ভাল মনে হয়, তার দিয়ে যাচাই করানো; যদি সেও আপনার সাথে একমত হয়, তাহলে আগে খুব আদর-সোহাগ করা, তারপর তাকে বলা যে, আমার মনে হয় এরকমটি করলে ভাল হয়।
৮। অন্য কারো জন্য নয়; বরং নিজের স্বামী বা স্ত্রীর জন্যই নিজেকে সব সময় পরিপাটি বা সেজেগুজে থাকা।
৯। একজন আর একজনকে সব সময় একটা আকর্ষণের মধ্যে রাখা। ঘরের বাহিরে থাকলে মোবাইল করে খোজ খবর নেয়া ও কিছু ভালোবাসার কথা বলা।
১০। নিজেদের মধ্যে খাঁটি ভালোবাসা সৃষ্টির চেষ্টা করা, যাতে মনে হয় একজন ছাড়া আর একজনের বেঁচে থাকাটা অনেক কষ্টের হবে।
১১। পরের কথায় কোন প্রকার বিশ্বাস স্থাপন না করা, কারণ সংসার ভাঙ্গার লোক অনেক আছে, কিন্তু গড়ার লোক খুবই কম।
১২। সব সময় অন্যের ভালো করার চেষ্টা করা, তাহলে এর ফল আপনাদের সম্পর্ক্যকেও ভাল রাখবে। কথায় আছে, অন্যের জন্য ফাঁদ পাতলে নিজেই তাতে পড়তে হয়।
১৩। যেভাবেই হোক নিজেদের সম্পর্ক্যকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা। তালাকের দিকে অগ্রসর না হওয়া। আল্লাহ্ বলেছেন, "আমি তালাকের ব্যবস্থা রেখেছি, কিন্তু এটা ঘৃণিত কাজ গুলির মধ্যে একটি।"
১৪। যদি আপনি নিজেই প্রমাণ পান যে, আপনার স্বামী বা স্ত্রী আসলেই অন্য কাউকে পছন্দ করে, এবং তার সাথেই থাকতে বা ঘর করতে চায়, সেক্ষেত্রে জোর করে বিষন্ন জীবন যাপন যতদূর সম্ভব না করাটাই ভালো। এক্ষেত্রে ভালো কোন আলেম ধরনের মুরব্বীর সরনাপন্ন হয়ে তার মতামত নেয়া এবং তাকে ভালোবাসার সাথেই ত্যাগ করা।
১৫। স্বামীরা স্ত্রীদের বিছানায় ডাকলে সাথে সাথে সাড়া দেয়া, এক্ষেত্রে মহানবী (সাঃ)-এর কঠোর হাদিস আছে, " যদি কোন স্ত্রী, স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয় বা বিছানায় না যায়, তবে বিছানায় না আসা পর্যন্ত ফেরেশতারা সে স্ত্রীকে অভিশাপ দিতে থাকে।" আর "স্বামীর উপস্থিতিতে স্বামীর অনুমতি ব্যাতীত স্ত্রী নফল রোযাও (তবে রমজান মাসে মহিলাদের ছুটে যাওয়া ৬/৭ ফরজ রোযা, যা পরবতীর্তে অবশ্যই আদায় করতে হয়, তা এর আওতায় পড়বে না।) রাখতে পারবে না।" আর "আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করার অনুমতি দেয়া হতো, তাহলে স্ত্রীদের বলা হতো স্বামীদের সিজদা করার জন্য।"
১৬। স্বামীদেরও উচিত অফিসের বা ব্যবসার কাজকর্ম বাসায় নিয়ে না আসা ও স্ত্রীদেরও সময় দেয়া, ভালবাসা দেয়া এবং তাদের হক আদায় করা।
১৭। অবশ্যই কোরআন-হাদীস পড়া। এরসাথে "মহানবীর (সাঃ) জীবনী", "দশ জান্নাতী রমনী" সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী বই নিজে পড়া ও স্ত্রীকেও পড়তে দেয়া।
১৮। নিজের সমমর্যাদার বা সমান সমান আর্থিক অবস্থা দেখে বিয়ে করা। এতেকরে একজন আর একজনের অবস্থা বুঝার সুয়োগ থাকে।
১৯। স্বামীকে তার স্ত্রীকে ভালবাসার সাথে তার কোন বিষয়ের (আর্থিক ও হতে পারে) অপরাগতার কথা বুঝাতে হবে। স্ত্রীকেও বুঝতে হবে যে, তার বার বার জেদের কারণে স্বামী আয়ের জন্য যাতে খারাপ কোন পথ বেছে না নেয়, কারণ এতে সাময়িক সুখ দেখা গেলেও পরবতীর্তে এর বিরাট কুফল ও বাকী জীবনের অশান্তিভোগ করতে হবে।
২০। তাছাড়া মহানবী (সাঃ) বলেছেন, " স্ত্রীদের স্বামীদরে বাঁকা হাঁড় দিয়ে তৈরী করা হয়েছে, বেশী জোর দিলে ভেঙ্গে যাবে, আবার ছেড়ে দিলেও বাঁকাই হতে থাকবে।"
আশাকরি আমার এই চেষ্টা আপনারদের জীবনে সুখ-শান্তি নিয়ে আসবে, আর এভাবেই আমার লেখা সার্থকতা পাবে।
বিবাহিত নর-নারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস্, অবিবাহিতরাও জেনে রাখতে পারেন !!!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?
অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।

১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন
=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?
যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!
যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।