তেলাপোকা সম্পর্ক যতটুকু জানা যায় - ৩৫০ মিলিয়ন বছরের পুরানো ফসিল পাওয়া গেছে তেলাপোকার - যা বিবর্তনকে এড়িয়ে নিজেদের অবিকৃত রেখেছে। পরিবেশের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে তেলাপোকার যে দক্ষতা - বাংলাদেশে জামাত শিবির তাদের টিকে থাকার দক্ষতা প্রায় সমপর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে এরাও টিকে আছে।
যেমন একটা ঘটনা দেখা যেতে পারে। ভাষা আন্দোলনে ঘটনাচক্রে গোলাম আজম নামক কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ঘোষনাপত্র পাঠ করেছিলো। সেই কারনে ওর আক্ষেপের শেষ ছিলো না। বারবার বাংলা ভাষার পক্ষে একবারের একটু সময়ের অবস্থানের জন্যে দুঃখিত হয়েছে এই মৌদুদীবাদী।
কিন্তু আজকাল যেহেতু বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠিত - বাংলাদেশ একটা বাস্তবতা। তাই গোলামের চামচারা নেমে পড়েছে নিজেদের গ্রহযোগ্যতা বাড়ানোর সর্বেশেষ খড়কুটা ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টায়।
৩০ লক্ষ মানুষের হত্যার সহযোগী আর ২ লক্ষ মায়ের সন্মান হারানোর সহায়তা কারী জামাতি গোলাম আজমকে ভাষা সৈনিক হিসাবে প্রচার করা চেষ্টা আমাদের ভাষা আন্দোলনের প্রতি অপমানজনক।
২০০৮ সালে ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন সুস্পষ্ঠ ভাষায় ভাষা আন্দোলনে গোলাম আযমের অসম্পৃত্ততার কথা জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও ভাষা হিসাবে বাংলাকে সমর্থনের বিষয়ে গোলাম আজমের নিজের অবস্থাটাও এখানে গুরুত্বপূর্ন। যে কিনা বাঙ্গালী জাতি হিসাবে আমাদের জাতিকে মানতে নারাজ - সে ভাষার জন্যে সংগ্রাম করেছে, বিষযটা কেমন যেন পরষ্পর বিরোধী হয়ে গেল না?
আসলেই তাই। সেইদিন যখন স্বারকলিপি পাঠ করা ছাড়া আর কি কোন পথ খোলা ছিলো গোলামের জন্যে। যদি সে স্বারকলিপি পাঠ করতে অস্বীকার করতো তা হলে সাধারন ছাত্রদের হাতে কি পরিমান নাজেহাল হতো সেইটা উপলদ্ধি করেই সে মঞ্চে উঠেছিলে। মুসলিম লীগের সমর্থক আর উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে মনে প্রানে বিশ্বাস করতো গোলাম আজম। তাইতো সেইদিন স্বারকলিপি পাঠের পর তাকে পুরো ভাষা আন্দোলনে দেখা যায়নি।
তাই তাকে ভাষা আন্দোলনের দলত্যাগী বেঈমান হিসাবে দেখা গেছে পরবর্তীতে।
বটতলায় বাংলা ভাষার দাবীতে স্বারকলিপি পাঠ করার জন্যে যে কষ্ট পেয়েছে গোলাম আজম - তা পরবর্তীতে তার বহু বত্তৃতা বিবৃতি থেকে জানা যায়।
দৈনিক পাকিস্থানের ১৯শে জুন প্রকাশিত সংখ্যায় জানা দেখা যায় - (তখনো মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়নি)
"পশ্চিম পাকিস্তানের শুক্কুরে ১৮ই জুন (১৯৭০) এক সংবর্ধনা সভায় জামায়াত নেতা গোলাম আযম বলেন, উর্দু পাক ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদের সাধারন ভাষা। তিনি বলেন, ৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তিনিও তাতে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তা ভুল হয়েছিল।"
তখনকার পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) বাংলা ভাষাকে সংগ্রাম আর রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের পরও যে লোক উর্দুকে তার ভাষা মনে করে - তাকে ভাষা সৈনিক হিসাবে প্রচার সত্যই কৌতুকের জন্ম দেয়।
যারা ধর্ম নিয়ে ভন্ডামী করে সেই জামাতিদের পক্ষে সবাই সম্ভব - কারন জামায়ত একটা ভন্ড দল।
(সূত্র - বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস - ড. মোহাম্মদ হাননান পৃষ্ঠা ৩৯৯)
গোলাম আজমের ভাষা সৈনিকগিরি আর তেলাপোকার জীবন বৃত্তান্ত
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।
১ম ধাপঃ
দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি
গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জানা আপুর আপডেট
জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।
বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন
বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।
এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন
অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!
দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন