সুরুজ মিয়া যাচ্ছেন হাটে। কিছু কলা কিনবেন। তবে খুব কাঁচা কলা। তিনি কেন কাঁচা কলা কনিবেন, তা তিনি যানেন না। কিন্তু টাকা খরচ করতে হলে কিছু না কিছু কিনতে হবে।
পাকা কলার দাম কাঁচা কলার চেয়ে বেশি, তাই তিনি কাঁচা কলা কিনবেন। তার পকেটে যে পরিমাণ টাকা আছে, তাতে তিনি বড় জোড় ১৬ ডজন কলা কিনতে পারবেন। তিনি হাট-এ যাচ্ছেন হেঁটে। মেটে পথ। তার মাথায় ছাতা ধরা। কিন্তু নেই কোন রোদ, নেই কোন বৃষ্টি। তিনি যে পথ দিয়ে বাজারে যাচ্ছেন, সেটা পুরোটাই গাছের ছায়ায় ঢাকা। এটা সুরুজ মিয়ার একটি বড় বিরক্ত করার বিষয়। ছাতা ক্ষয় না হলে তিনি আরো নতুন ছাতা কেনার জন্য টাকা পাবেন কিভাবে??? সুরুজ মিয়া যে টাকা খরচ করেন, তা হচ্ছে সমিতির টাকা। সমিতির দেখ-ভাল করা তার দায়িত্ব। তিনি বেতন হিসেবে সমিতি থেকে ভোরণ-পোষেণের টাকা পান। তিনি যে টাকায় কলা কিনবেন, সেটাও সমিতির টাকা।
পথে দেখা হলো মিঝি মোল্লার সাথে। তিনি বললেন, আরে সুরুজ মিয়া যে। কই যাইতাছেন? সুরুজ মিয়া খুব ব্যস্ততার সহিত বললেন, হাটে। মিঝি বললো, কেন? সুরুজ মিয়ার উত্তর- "সমিতির ছাগল গুলান কাঁঠাল পাতা খায় না, তাই কাঁচা কলা আনতে যাই। দেখি ছাগল গুলায় কাঁচা কলা খায় কিনা।"
মিঝি মোল্লা বললো, আরে ভাই ছাগলে কি কাঁচা কলা খায়? সুরুজ মিয়ার বিজ্ঞবিচারির মতো বলেলন, আরে খায় খায়। খাওয়ালেই খায়। এরপর সুরুজ মিয়া গেলেন হাটে। তিনি দশ দোকানির কাছ থেকে কলার দাম জানলেন। ডজন প্রতি ৬ টাকা থেকে ৮ টাকা। তিনি ৬ আর ৮ যোগ করলেন। মোট হলো ১৪ টাকা। তিনি পকেটের দিকে তাকালেন, দেখলেন তার পকেটে আছে ৩২০ টাকা। তিনি এক দোকানির সাথে দামা-দামি করে নাড়ে ৪ টাকায় খুব নিম্ম মানের কাঁচা কলা কিনলেন ১২ ডজন। এরপর তিনি হাঁটা শুরু করলেন সমিতির অফিসের দিকে। তার পকেটে থাকলো ২৬৬ টাকা।
সমিতি অফিসের সাথেই তার থাকার ঘর। তিনি ঘরে বসে হিসাব কষতে লাগলেন:
১। ছাতার উপযোগের মূল্য : ১৫ টাকা
২। জুতোর উপযোগের মূল্য: ৪০ টাকা
৩। মিঝি মোল্লার সাথে আলোচনায় সময় মূল্য: ৫০ টাকা
৪। দশ দোকানে দামা-দামির পারিশ্রমিক : ৮০ টাকা
৫। কলার মূল্য : ১৪ টাকা ডজন
৬। মোট কলার মূল্য : ২২৪ টাকা
-----------------------------------------------------------------------
সর্ব মোট খরচ : ৪০৯ টাকা
ঘাটতি : ৮৯ টাকা

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




