somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রশ্নঃ প্রেম কি? প্রেমের যুগ বিবর্তন বর্ণনা কর।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



উত্তরঃ প্রেম দুটি নারী পুরুষের ভালবাসাময় সম্পর্কের একটি রূপ। অন্যভাবে বলতে গেলে, শরীরবৃত্তিয় চাহিদার মনস্তাত্ত্বিক প্রকাশকে প্রেম বলে। কবি বলেছেন,

'স্বর্গ থেকে আসে প্রেম
স্বর্গে যায় চলে!"

এই আসা যাওয়ার মাঝে রেখে যায় নানান স্মৃতি। যে স্মৃতি কারো জন্যে আনন্দের, আবার কারো জন্যে বেদনা বা যন্ত্রণার স্মৃতিরেখা।

প্রেমের যুগ বিবর্তনঃ



একসময় প্রেম হতো চিঠিতে। তখন প্রেমিক-প্রেমিকারা লম্বা লম্বা চিঠি লিখে জবাবের প্রতিক্ষায় বসে থাকতো! সেই চিঠি পৌঁছানোও ছিল অনেক ঝামেলা! আর মুরুব্বীদের কাছে ধরা পড়ে গেলে তো খবরই আছে। তবে চিঠি যুগের প্রেম গুলোর স্থায়ীত্বকাল ছিলো অনেক বেশী। কারন চিঠি লিখে দুজন মানুষ দুজনের কথা আর কতটুকু জানতো পারতো! বেশীর ভাগ কথাই থেকে যেত অজানা। তাই পরস্পরকে জানার জন্যই সম্পর্কের স্থায়ীত্ব বেশী হতো।



এরপর এলো টিএন্ডটি যুগ। ফোনে কথা শুরু হলো গুটুর গুটুর করে। কিন্তু ফোনের সহজলভ্যতা এবং প্রাইভেসী সমস্যার কারনে ফোনে বেশী কথা বলা যেত না। তবে ফোন যুগে প্রেমের স্থায়ীত্ব চিঠি যুগের চেয়ে কমে যায়। কারন সারাদিন ফোনে টুকটাক কথা হওয়ায় ভালবাসার সাথে সাথে ঝগড়া বিবাদও বেড়ে গেছিলো।



মোবাইল যুগকে আধুনিক প্রেম কমিউনিকেশন সিস্টেমের পথিকৃত বলা যায়। হাতে হাতে মুঠোফোন প্রেমিক প্রেমিকাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেয়। খুব সহজেই তারা একে অপরের সঙ্গে নিজেদের কথা গুলো শেয়ার করতে পারে। যার ফলে তারা যখন একটা পরিণয়ের দিকে আগায় তখন সমস্যার শুরু হয়। সবাই সেই ফোনের প্রেমিক বা প্রেমিকাকে খোঁজে বাস্তবের মধ্যে। এসময় প্রেমের স্থায়ীত্বকাল কমতে থাকে। হুটহাট প্রেম শুরু হয়, হুটহাট আবার ভেঙে যায়!



মোবাইল যুগের অন্যতম একটা সময়কাল ডিজুস এবং একটেল জয় যুগ! এসময়েই মুলত বাংলার দামাল ছেলেমেয়েরা রাতের পর রাত জেগে পরস্পরের সব কথা, গল্প, মাণ-অভিমান, ভালবাসা শেয়ার করা শুরু করে। এ যুগের অন্যতম অবদান “নিশাচর প্রজন্ম তৈরী!” এ যুগে প্রেমের স্থায়ীত্বকাল আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। যার ফলে এখনো স্বল্প স্থায়ীত্বের প্রেমকে অনেকে ডিজুস প্রেম বলে!



বর্তমানে চলছে ফেসবুক, স্কাইপি, হোয়াটঅ্যাপ, ভাইবার এর জয় জয়কার! এখন ছেলেমেয়েরা সারাদিন পুটুর পুটুর, গুটুর গুটুর করে মোবাইলে, পিসিতে, ল্যাপিতে চ্যাট করতে পারে। এখন আর ভাব বিণিময়ের জন্য কথা বলার দরকার হয় না। বোতাম টিপে বার্তা পাঠিয়ে দিলেই হয়। যোগাযোগ মাধ্যমের সহজলভ্যতার কারনে প্রেমিক-প্রেমিকারা পরস্পরের সাথে সহজেই সব কথা শেয়ার করতে থাকে। ফলে খুব দ্রুতই দেখা যায় পরস্পরকে জানার আর কিছু থাকে না। এছাড়াও অধিক কথা বলার সুযোগ পাওয়ােয় যেটা বলা উচিত না সেটাও বলা হয়ে থাকে বা যেটা না সেটাও বলা হয়ে থাকে। ফলে একসময় দেখা যায় দুজনের মধ্যে কারনে অকারনে মনমালিন্য। এ যুগে প্রেম এগিয়েছে না পিছিয়েছে সেটা যার যার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বুঝে নিতে হবে। তবে প্রেমে বহুগামিতার সংখ্যা বেড়েছে। একই স্ক্রিনে একই সাথে জেরিন, জরিনা এবং জয়িতা হয়ে প্রেম করা করার সুবিধার কারনে প্রেমের গতিবিধি পালটে যাচ্ছে! এযুগের প্রেমের স্থায়ীত্বকাল সম্পর্কে বলা মুষ্কিল! কখন কিভাবে কে কার প্রেমে পড়ে যায় সেটা ঈশ্বরই ভালো বলতে পারবেন।

বিভিন্ন যুগের প্রেম পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পূর্বের চেয়ে প্রেমের প্রকাশ, ব্যাপ্তি এবং হাউকাউ বেড়ে গেলেও বর্তমানে প্রেমের স্থায়ীত্ব কমে গেছে।

মোরালঃ প্রেমে আবদ্ধ দুটি মানুষ পরস্পরের বিষয়ে যত দ্রুত জানতে থাকে প্রেমের স্থায়ীত্বকাল ততই কমতে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তুই পাগল তোর বাপে পাগল

লিখেছেন আজব লিংকন, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



রাতে অর্ধেক কাউয়া ক্যাচাল দেইখ্যা হুর বইল্যা— মোবাইল ফোনের পাওয়ার বাটনে একটা চাপ দিয়া, স্ক্রিন লক কইরা, বিছানার কর্নারে মোবাইলটারে ছুইড়া রাখলাম।

ল্যাপটপের লিড তুইল্যা সার্ভারে প্রবেশ। বৃহস্পতিবারের রাইত... ...বাকিটুকু পড়ুন

যত দোষ নন্দ ঘোষ...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০১

"যত দোষ নন্দ ঘোষ"....

বাংলায় প্রচলিত প্রবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। যে যত দোষ করুক না কেন, সব নন্দ ঘোষের ঘাড়েই যায়! এ প্রবাদের সহজ অর্থ হচ্ছে, দুর্বল মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমাদের বাহাস আর লালনের গান

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪১


দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হৈচৈ হচ্ছে, হৈচৈ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। একটা পক্ষ আগের সরকারের সময়ে হৈচৈ করত কিন্তু বর্তমানে চুপ। আরেকটা পক্ষ আগে চুপ ছিল এখন সরব। তৃতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ থাকে না কেউ থেকে যায়

লিখেছেন বরুণা, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০৩


চমকে গেলাম হঠাৎ দেখে
বহুদিনের পরে,
নীল জানালার বদ্ধ কপাট
উঠলো হঠাৎ নড়ে।

খুঁজিস না তুই আর খুঁজিনা
আমিও তোকে আজ,
আমরা দু'জন দুই মেরুতে
নিয়ে হাজার কাজ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরও একটি কবর খোঁড়া

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০৪

গোরস্থানে গিয়ে দেখি
আরও একটি কবর খোঁড়া
নতুন কেউ আজ মরেছে
এমন করে বাড়ছে শুধু
কবরবাসী, পৃথিবী ছেড়ে যাবে সবাই
মালাকুল মওত ব্যস্ত সদাই
কখন যে আসে ঘরে
মৃত্যুর যে নেই ক্যালেন্ডার
যে কোন বয়সে আসতে পারে
মৃত্যুর ডাক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×