একদিন ভোর বেলা ঘুম ভেঙে দেখি
আকাশটা ঘন কালচে সবুজ হয়ে গেছে
মাটি, গাছ, ফুল, ফল, পাখি আর সব?
না না, আর সব ঠিক আছে, ঠিক আছে!
শুধু আকাশটা কালচে সবুজ ঘন শেওলার মতো
আধভাঙ্গা এঁদো পুকুর ঘাটে যে জমে থাকে
বছরের পর বছর, বছরের পর বছর!
তবে কি ঈশ্বর তার রেডিয়ামের মতো
জ্বলজ্বল করতে থাকা চোখ মেলে তাকিয়েছে?
তবে কি শুরু হল সত্যের মহা বিজয়ের লগ্ন?
তবে কি অবশেষে এল কলি যুগের অবসান?
একি!
আমার হরতালের পেট্রল বোমায় পুড়ে মরার অধিকার কোথায়?
ধনীদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার অধিকার কোথায়?
আমার লোকাল বাসের হ্যান্ডেল ধরে বাদুড় ঝোলার অধিকার কোথায়?
আমার অবরোধে হাঁটতে হাঁটতে রাত্রি বেলা বাড়ি ফেরার বা না ফেরার অধিকার কোথায়?
যখন তখন যেখানে সেখানে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার হয়ে সংবিধান মেনে চলার অধিকার কোথায়?
রাজ সভাসদদের জন্য রাস্তা ছেড়ে সিগন্যালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার অধিকার কোথায়?
ছুটন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়া আমার থেঁতলানো দেহখানির মর্গে পড়ে থাকার অধিকার কোথায়?
আমার...আমার একটু খানি বাঁচতে চেষ্টা করার অধিকারটুকু কোথায়?
আমি নিশ্চিত স্বপ্ন দেখছি দুঃস্বপ্নের ভেতরে কুণ্ডলী পাকিয়ে
যেখানে হুটহাট উড়ে যাচ্ছে বিড়ালমুখো শান্তির পায়রা
সম্ভবত আমি ঘুমাচ্ছি বেঘোর হয়ে কৃমির কারনে পেট ফুলে থাকা শিশুর মতো
যে ঘুম ভেঙ্গেছিল বলে ভাবছিলাম সেটা ভুল একটা বিভ্রাট!
তারপর আরেক দিন ভোর বেলা ঘুম ভেঙে দেখি
আকাশটা গাঢ় কটকটে হলুদ হয়ে গেছে
মাটি, গাছ, ফুল, ফল, পাখি আর সব?
সে গল্প না হয় আরেক দিন বলি, কেমন?
ঘুম না ভাঙ্গার কবিতা
বাড্ডা, ২৯ ফাল্গুন ১৪২১।
ফাল্গুনী পূর্ণিমার নিশ্চুপ রাতে
রূপালী চাঁদ রক্তে ভেজা পথে
সাথে মন্থর গতিতে হাঁটে
মিটিমিটি জ্বলা দূর আকাশের তারা
নীল ঝিঝি পোকার ডাকে
পথ হারানো কুকুর ছানা
ঘাপটি মেরে বসে আছে গুবরে পোকা
যার এতক্ষনে বহুক্রোশ পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল!
দক্ষিণা বাতাসে ভেসে আসা
একটা অশ্লীল গোঙানী শুনে
তখনই আমি থমকে দাঁড়ালাম
আমি চমকে দাঁড়ালাম কৌতুহলে!
অশরীরি আত্মার অনাহুত কান্না
ডুবন্ত জাহাজের তীক্ষ্ণ সাইরেন
গাঙচিলের ঝলসানো রোস্ট দেখে
অতৃপ্ত ড্রাকুলা জিভ চাটে আক্রোশে
বালিশে বাসা বেঁধেছে সামন্ত ছারপোকা
রাজপথ দাবড়ে চলছে সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন
চেঁচিয়ে চিৎকার করে প্রতিধ্বনিত হয়
কঙ্কালসার মৃতপ্রায় প্যারা হাইড্রোলিক শিশুর কান্না!
তবু নাকি কবিরা কোন কবিতা খুঁজে পাচ্ছে না, আশ্চর্য্য!
কবিতা সংকট
বাড্ডা, ২৮ ফাল্গুন, ১৪২১।
[পর পর কয়েকটি লাইন প্যাঁচিয়ে প্যাঁচিয়ে লিখলেই সেটা কবিতার মতো দেখায়, বাহ্!]