একটা ঝড় এসে এলোমেলো করে দিল সব
ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারময় বিষাদ
মন গহীনে আর্তনাদ করে প্রাণপাখী
খাঁচা ছেড়ে যেতে চেয়েও যায় না
চিকন বাঁশের ডালায় বুনে স্বপ্ন
আর, আর অট্টোহাসি হাসে নিষ্ঠুরতার কাঁকড়াগুলো!
অথচ সেদিন সবুজ ঘাসে নদীর পাশে
ডানা ঝাপটে উড়ছিল দুটি সাদা বক
ঝড় আসার কথা ছিল না
দুঃখ কান্না ঘৃণা কিংবা করুণা?
না, এসবের কোন কথা ছিল না
এসবের কোন কথা হয়নি
কক্ষনো না!
আমি মানি না
আমি জানি না
আমি শুনতে চাই না
আফ্রোদিতি, আমি তোমাকে ছাড়া কিছুই ভাবতে চাই না!
যদি বলো ভালবাসা কি?
যদি বলো, কি এমন মায়ার বাধন?
যদি শুনতে চাও, প্রণয়ের কথামালা
আমি বলবো না
আমি বলতে পারবো না
আমি বলতে চাই না
আমি শুধু পারি চিরে দেখাতে এ হৃৎপিন্ড
যেটা প্রতিনিয়ত ধুকপুক করছে তোমার নামে!
আফ্রোদিতি, ভালোবাসা দাও
শীতের রাতে আমাকে তোমার উষ্ণতা দাও
গৃষ্মের খরতাপে আমাকে তোমার ছায়া দাও
প্রেম সূধা পান করে আমি উন্মাদ হতে চাই
ঝড়ের মাঝে, ঘোরের মাঝে
দুনিয়া জোড়া নীলচে আকাশ
সারি সারি বনের মাঝে
তোমার পিঠ ছড়ানো এলো কেশে
হারিয়ে যেতে চাই আমি
নাম না জানা নদীর মাঝে!
আফ্রোদিতি, ও আফ্রোদিতি ভালোবাসা দাও!
শিশুর মতো কেঁদে উঠেছিলাম আমি সেদিন
আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিলাম তোমার হাত দুখানি
আকুতি জানিয়ে ছিলাম তোমার পদতলে লুটিয়ে
অথচ তোমার পাঁজরাবদ্ধ উল্লাস আমাকে ছুড়ে ফেলেছে
ধূলায়, বড্ড দেরীতে অবেলায়
যেখান থেকে ফেরার আর কোন পথ নাই
ঘৃণার চোরাবালিতে আটকে মরিচিকার পিছু ছুটি আমি
তোমার আশায়, ভালবাসায় হন্যে হয়ে বন্য হয়ে!
আফ্রোদিতি, আমাকে তোমার ফুসফুস ভরা বাতাস হতে দাও
তোমার শিরায় ধমনীতে প্রবাহিত লাল টকটকে রক্ত হতে দাও
তোমার চোখের পলক না পড়া পাতা হতে দাও
তোমার ঘামে ভেজা শরীরের গন্ধ হতে দাও
তোমার হাতের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ হতে দাও
কোমর জড়িয়ে থাকা রূপার বিছা হতে দাও
বাহু বন্ধনে আবদ্ধ নকশী বাজু হতে দাও
তোমার বাঁকানো নাখের নথ হতে দাও
পায়ের সোনালী জোড়া নূপুর হতে দাও
আফ্রোদিতি, ওহ্ আফ্রোদিতি আমাকে একটু বাঁচতে দাও
আমি আর পারছি না সইতে দূরত্ব
এর চেয়ে মরণও ভাল আফ্রোদিতি
আমাকে একটু শান্তিতে মরতে দাও!
আকুতি
নভেম্বর ১৫, ২০১৫.
-------------------------------------------------------------------
জীবনের আরেক নাম পিশাচ
যদি জানতে সব কিছু এভাবে
ছিন্নভিন্ন এলোমেলো হবে না
তবু কি বদলাতে না
বর্ণচোরা গিরগিটির মতো
অনবরত পাড় ভেঙে
দানবীয় ধ্বংশলীলা চালানো
খরস্রোতা নিঠুর গহীন নদীর মতো
এক গুচ্ছ আগুনে পুড়তে থাকা
সাদা কাগজে মোড়া নিকোটিন
আর একরাশ ধোঁয়া, ছাইয়ের মতো
ইট চাপা পড়া মলিন ধূুসর
রুগ্ন নেতানা ঘাসের মতো
কিংবা কখনো না জন্মানো শিশুর
ক্ষুধাক্লিষ্ট তীক্ষ্ণ কান্নার শব্দের মতো?
আফ্রোদিতি, আমি বলছি শোন
জীবনের আরেক নাম পিশাচ
যার রক্তে রাঙা লকলকে জিভ
করে হাজারো স্বপ্নের শিখা লেহন
গলাটিপে মারে আকাঙ্খা স্বাধ আহ্লাদ
বিণিময়? শুধু অবিরাম করুণ আর্তনাদ!
যদি তুমি বলো শুধুই পিশাচ
শুধু কি যন্ত্রণা
তবে জেনে রেখো আছে শান্তি সাফল্য
যে জীবনের কথা আমি বলবো না
কারণ দীর্ঘতম যাতনার বিষে
বিষাক্ত পথে কয়েক ফোঁটা সুখবিন্দু
আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয়
জীবনের আরেক নাম পিশাচ!
পিশাচ
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৫.
-------------------------------------------------------------------
প্রচণ্ড ক্রোধ নিয়ে চেয়ে দেখি অর্থের উলঙ্গ নৃত্য
তাদের মস্তিষ্কের মানবিক দিক গুলোর অসহায়ত্ব
ঘৃণা করতে শেখায় সভ্যতায় মোড়ানো সমাজকে
জড় পদার্থেরও তো একটা ইহজাগতিক স্থান আছে
তবু কেন হিঁচড়ে টেনে চলে কালের দগ্ধ হায়েনা
তাদের পচে যাওয়া হৃদয়কে?
সভ্যতার মুখোশ
২৫ আশ্বিন ১৪২২.
কবিতা কখনো জীবন, কবিতা কখনো দর্শন, কবিতা কখনো বাস্তবতা, কবিতা কখনো বিপ্লব-বিদ্রোহ আবার কবিতা কখনো কিছুই না!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০৫