somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উচাটোনিয়ান দিনকাল!!!

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বিয়ের কাজীর ব্যাবসাতে যে একটা হালাল কামাই আছে সেটা অনেকেই জানে না। বিয়ের দেনমোহরের একটা নির্দেষ্ট অংশ হয়ে থাকে কাজী সাহেবের চার্জ। দেশের উন্নয়নের ফলে আজকাল গ্রামের বিয়েতেও লাখ টাকার দেনমোহর হয় আর সাথে ভালো মন্দ খাবার তো আছেই আর বিয়ে পড়ানোর ব্যাবসার বেশ ভালোই পসার জমেছে। কিন্তু সবক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সুখকর নয় যেটার অবশ্য ধারনা করা মুস্কিল। আর হঠাৎ যদি খবর বেরোয় বিয়ের কাজী বা ঘটকের নিজেরই বিয়ে হয়নি তাহলে তো সর্বনাশ। নিশ্চিত নগদ নারায়ন ছুটে যায়। আর বাঙ্গালী টাকা পয়সা দেবার বেলায় কোনো ছুতো নাতা যে সহ্য করবে না সেটা বিশ্বসমাদৃত।

বন্ধু শাহেদ ছোটখাটো চাকরীর পাশাপাশি ঘটকালী ও কাজী দুটোই পার্ট টাইম শুরু করলো। কিন্তু ভাগ্যের শিকে ঠিক ছিড়ছিলো না। যখন ঘটকালী চুড়ান্ত পর্যায়ে দেখা যায় মেয়ের বোনের সাথে ছেলে নাকি ভেগে গেছে অথবা মাঝে মাঝে মেয়েই অন্য কারো সাথে ভেগে যায়। ২০১৮ সালেও যদি জেল পালানোর মতো ভাগাভাগি চলে তাহলে বলতেই হয় দেশের উন্নয়ন হয় নি।

তো মাঝরাতে খবর পেয়ে শাহেদের বাসাতে ছুটে যাওয়া। গিয়ে দেখি সেকি তুলকালাম! ভাবী ফিফটি সেন্টসের মতো নন স্টপ র্যাপ সংগীতের স্টাইলে গালি দিয়ে যাচ্ছে আর বন্ধু শাহেদ কপালে হাত দিয়ে চৌকাঠে বসে।

এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিলাম,”দুস্ত, একটা গান ধরো। ঐ যে কুমার ছাগলাটা গাইছিলো.. সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে.... ট্যাট্টেটো ট্যাট্টোটো ট্যাও...”

আমার হাতের থেকে গ্লাসটা ছো মেরে দূরে ছুড়ে মারলো,”আমার ঘর পুড়তেছে আর উনি ট্যাও ট্যাও শুরু করছে!”

আমি একটু থতমত সুরেই কাশলাম,”ভাবী তো দেখি র্যাপ সং গায়.... তাও মাঝরাইতে। কি আকাম করছো দোস্ত?”

: আর কইস না! ভাবছিলাম ব্যাবসার বনী টা হইয়াই গেলো। পাত্রী রেডি। পাত্র সকালে কইছে আপনে ওদিক ঠিক রাখেন। আমরা টাইম মতো আইসা পড়ুম।

: তারপর? তুমি কি বাড়ি গিয়া পাত্রী পাও নাই?
: পাত্রী তো তিনদিন আগের থিকাই রেডি। হুলস্থুল আয়োজন। আমি তো সকাল থিকা প্লেটে হাত ডুবাই রাখছি। এক্সট্রা সিকিউরিটি হিসেবে পাত্রের বাসায় শামসুরে রাখছিলাম।
: শামসু তোমার এসিস্ট্যান্ট না? সে কি পাত্রের বাসায় আকাম করছে?
: আকাম করলে তো ভালো হইতো। পরে শুনছি ওরে নাকি গোয়াল ঘরে গরুর লগে বাইন্ধা রাখছে। পাত্রকে নাকি আরেক ঘটক আরো সুন্দরী পাত্রী ঠিক কইরা দিছে। শামসুরে গোয়ালে রাইখা তারা এদিকে রওনা দিছে।
: কও কি! কাহিনীর তো মোড়ে মোড়ে টুইস্ট। মুভিতে দেখি একটু গরুও আইসা গেছে।
: মজা লও না? এদিকে রাইত হয়, শামসুর মোবাইলে কল ঢুকে না। পাত্রের বাসায়ও কল যায় না। এদিকে পাত্রী পক্ষ আমারে ছাড়ে না। বুঝলাম যে আমাকেও বান্ধনের পালা। রাত শেষ হইলে একটা শর্ত দিলো।
: কি শর্ত?
: মান সম্মান রক্ষার্থে আমার গলায় পাত্রী ঝুলাইতে চায়।
: কও কি? তারপর?
: নাইলে নাকি আমারে গুম করে ফেলবো।
: কেন তাদের বংশে কোনো পোলা নাই?
: আছে, কিন্তু সব বিবাহিত
: তুমিও তো বিয়াইত্তা।
: বেশীর ভাগ বেকার।
: তুমি রাজী হইয়া গেলা?
: জানতো বাচাইতে হইবো।
: পাত্রী কৈ? চেহারা কেমুন?
: বাইরে রিক্সায় বইসা আছে।
: নয়া বৌ বাসর রাত করবো তা না তুমি রিক্সায় বসায় রাখছো? রিক্সা আলার সাথে যদি ভাইগ্যা যায়?
: তোর ভাইস্তা আছে।
: ঐ পাকনাটা?

এমন সময় পাকনাটার আগমন,” আস্লামুয়ালাইকুম আংকেল!”
: ঐদিককার কি খবর? চেহারা কেমন? পছন্দ হইছে?
: আর বইলেন না! সারা বিশ্ব যেখানে জ্ঞানে বিজ্ঞানে আগাইয়া যাইতেছে সেখানে আমাদের সংসারে একটা তুচ্ছ বিবাহ নিয়ে কি তুলকালাম কান্ড!

ঘটনাটা ঠিক বুঝলাম না! কোথা থেকে ভাবীর আগমন ঘটলো এবং ক্ষীপ্র গতিতে ভাইস্তার দুইগালে দুটা বন চটকানা মেরে বললো,”ওরে আমার রবীন্দ্রনাথ! গত বার্ষিক পরীক্ষায় অংকে ফেল মারনের সময় দুনিয়ার জ্ঞানে বিজ্ঞান খেয়াল ছিলো না?”

প্যালেস্টাইনের ওপর শক্তিশালী আমেরিকার এমন ক্ষীপ্র আক্রমন দেখে আমি আমার নিজের জান নিয়া কিঞ্চিৎ শংকিত হইলাম।

*ঘটনা কাল্পনিক!!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৫১
৪৮টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×