হাতে ঘড়ি নাই, মোবাইলে চার্জ নাই, খর রোদে বারোটা পার হইয়া গিয়াছে নিশ্চিত হওয়া গেল। আমি বেকার, সময়ের বেকার, কাজের বেকার, অকাজেরও বেকার। ইহা বেকারির বেকার নহে। আই রিপিট, ইহা কক্ষনই Bakery এর Baker নহে। ইহা হইল বাপের বেকারিতে বসিয়া বেকিং করা বেকারি প্রডাক্ট বাক বাকুম বদনে বিশাল বিশাল আকৃতির হা করিয়া হাভাতের মত ফ্রি ফ্রি গিলিতে থাকা। আমি হইলাম সেই বেকার। এখনও হালাল হই নাই, আই মিন হালাল বেকার হই নাই। হইবই বা কেমনে !!! মাস্টার্স না কি যেন বলে ছাতা ওইটাকে, হা হা, ওইটাই। সেই হতভাগা কাগজে কলমে ধরা দিতে যে এক্ষনো তিন মাস বাকি। তবে ঐযে কাহারো কাহারো মুখে কাভি কাভি বেশ শুনিয়াছিলাম। মোর জীবনের অমুক সময় ছিল স্বর্ণ সময়, মোর অমুক সময় ছিল স্বপ্নের চোরাবালি। একেবারে আটকাইয়াই গিয়াছিলাম। আহা, মধু...মধু। এইসব আগে শুনিতাম আর ভাবিতাম। আমার জীবনে কখন আসিবে এই সময়। আর যাবি কোথা !!! এই নে এক্কেবারে ঢালিয়া দিলাম। জি জি জি...... আগা মাথা পুরাটাই ধরিয়া ফেলেছেন। আমি সেই সময়ের পালঙ্কে শুইয়া শুইয়াই লিখিতেছি। ঝামেলা একটাই, বেশি আরামি দিনাতিপাত করিতেছি তো, একটা ঘোরের মধ্যে সময়গুলো পার করিতেছি। এরকম সময় বড্ড খারাপ। না না ... আমার জন্য মোটেই না। (সাধু বাদ, চলিত সর্বোত্তম) ...... যারা অতি আগ্রহী হয়ে আমার ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করতে চান, তাদের জন্য। এইতো সেদিন, এক বড়ভাই অতি স্নেহের সাথে পুছলেন,
- তোর থিসিসের কাজ শেষ?
- হু। ওইটা তো সেকেন্ড সিমেস্টারেই খতম।
- এখন কি করিস? বিসিএস টিসিএস পরতাছিস তো, নাকি ??
- ভাই, বই তো সবডি বেচা দিছি।
- তাইলে?
- আপাতত ঘুমাচ্ছি, আর না ঘুমাইলে গোসল করছি।
- ??????????????????????????????????????????????????
ভাই, আমার কথার আগা মাথা কিছু বুঝলেন বলে মনে হল না। আমি নিজেই বুঝি নাই। তবে কথা সত্য। আমি সকালে ফজর পরে ঘুমাই। দুপুরে উঠে গোসল করে, নামাজ পরে আবার ঘুমাই। খাইতে ইচ্ছা করলে খাই, নাইলে নাই। বিকালে ছাদে উঠে মুরগির মত ঝিমাই। রাতে আবার ঘুমাই
একই প্রশ্ন যখন বাপ মায়ের কাছ থেকে।
ক্রিং ক্রিং...... ( মোবাইল স্ক্রিনে মায়ের নাম্বার দেখিয়াই হাতে একখান ক্যামব্রিজ আই ই এল টি এস বই খামচাইয়া ধরি। )
- মা.........
- কি করিস?
- পড়ি। (কক্ষনই মিথ্যা নয়। আমি এক লাইন পড়ার পর ই কল রিসিভ করি )
- কি পড়িস?
- আই ই এল টি এস।
মায়ের মমতা যেন ঝরে পরে।
- আহহারে, বাবা। এত পড়িস না। একটু আরাম দে শরীরে।
আমি সাথে সাথে জি আচ্ছা বলে বইটা আলগা ভাবে পাশে রেখে দেই। হাজার হলেও, মায়ের আদেশ, অমান্য করলে মাথায় ঠাডা পরবে
এইগুলান আলুছানা। প্রতিবেলাতেই থাকে, প্রতিদিন ই থাকে। বলে শেষ করা মুশকিল। তবে আসলে আমি বড় শান্তিতে আছি। এই শান্তি প্রতিদিন ক্লাস করার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবার শান্তি, এই শান্তি...... আর কিছু না। একমাত্র ওইটাই। ক্লাসরুম। আমার ক্যাম্পাস লাইফে একমাত্র ওই জিনিসটাই নেগেটিভ আর সব পজিটিভ। ............ মনে রাখার মত কিছু থাক্লে ক্লাস সেভেন টু টেন। মোর দ্যান ইনাফ। আহা মধু... মধু