somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“এবং ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই কর যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং দ্বীন একান্তভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়।” (আনফালঃ ৩৯)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

This is for those who want to know, not for those who don't want, it is my duty to massage ..........
তাওহীদের সঠিক জ্ঞান অর্জনে ও সকলক্ষেত্রে তাওহীদ প্রয়োগ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
ইনশাআল্লাহ আমরা আ’কিদাহ ও শারিয়াহ এর কিছু কারণ আলোচনা করব যা, চিহ্নিত করতে ব্যর্থতা ও পালন করার ব্যর্থতার কারনে ইসলামের পথে আমাদের নিজেদের চলা এক বিরাট বাধার সম্মুখিন। সর্বোপরি ইসলামের পুনর্জাগরনের পথে এই ব্যর্থতা বিরাট বাধা। কারণগুলি নিম্নরুপ:

১. শিরককে চিনতে না পারার ব্যর্থতা।
২. হারাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৩. মুশরিকদের সকল আমল ব্যর্থ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৪. মুশরিকদের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের অধীন থাকা মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৫. মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৬. তাওয়াগিতদের কর্তৃত্ব, বিচার ও আইন মান্য করলে কোন ব্যক্তি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৭. বাতিল শাসকদের আইন মানা ও তাদের জুলুম ও শিরককে মেনে নেয়া ইহজীবনে আল্লাহর শাস্তি ডেকে আনে ও ইসলামের পুনরাবির্ভাবে বাধার কারন; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৮. আল্লাহ ততক্ষণ আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবেন না যতক্ষণ আমরা আমাদের আকীদা ও কাজে পরিবর্তন না ঘটাব; ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
৯. আমরা যদি তাগুত, তার সৈন্যবাহিনী ও তার সমর্থকদের প্রত্যাখান করতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের দাওয়াত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১০. মুসলিম বিশ্বের কাফের শাসকদের কর্তৃত্ব স্বীকারের মাধ্যমে সকল তাওয়াগিতকে স্বীকার করে নেয়া হচ্ছে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১১. এসকল শাসকদের শিরক সহ্য করে নেয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হচ্ছে ব্যপক নিপীড়ন নির্যাতন; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১২. মুরতাদের শাস্তি (যদি কেউ মুসলিম হওয়ার পর শিরকে লিপ্ত হয় ও এর থেকে ফিরে আসতে ব্যর্থ হয়) বা তার উপর হদ (শাস্তি) কার্যকর করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১৩. শুধুমাত্র মুমিনরা একে অপরের জন্য হারাম; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১৪. শিরকের বাহিনী সরিয়ে তাকে তাওহীদপন্থী লোকদের দ্বারা প্রতি স্থাপন করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১৫. রাসূল (সাঃ) এর কথার অপপ্রয়োগ, মানব রচিত আইন ও আইন প্রণয়নের অধিকার কুফররূপে স্বীকার না করার ব্যর্থতা।
১৬. তাগুতের বাহিনীর সাথে সহযোগিতা মুসলিমদের ক্ষতি সাধন করবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
১৭. তাগুতকে রক্ষা করা ও তাগুতের সহযোগিতা করা কুফর; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা।
***************************************************
১. শিরককে চিনতে না পারার ব্যর্থতাঃ
`````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
তাওহীদ সঠিকভাবে জানার ক্ষেত্রে ভুল (তাওহীদুল ইলমি) যার ফলে সৃষ্টি হয় তওহীদকে কাজে প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভুল (তাওহিদুল আমালি) আল্লাহ (সুবহানু ওয়া তায়ালা) বলেনঃ

َاعْلَمْ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ

“সুতরাং জেনে নাও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (মুহাম্মদঃ ১৯)

তাওহীদের প্রথম শর্তই হলো জ্ঞান এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে সকল মুহুর্তে তাওহীদ নিশ্চিত করতে ও শিরককে প্রত্যাখান করার জন্য তাওহীদ বোঝা ও অনুধাবন করা অত্যন্ত জরুরী।
২. হারাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
`````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
কুফর কোন ব্যক্তিকে ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে দেয় অথচ হারাম কাজে বা কবীরা গুনাহ আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা মাফ করতে পারেন। শিরকের গুনাহ আল্লাহ কখনই মাফ করেন না কেননা আল্লাহ বলেনঃ

“আল্লাহ কেবল শিরকের গুনাহ মাফ করেন না। উহা ব্যতীত আর যত গুনাহ আছে তা যার জন্য ইচ্ছা মাফ করে দেন। যে লোক আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করল সে তো গুনাহের কাজ করল” (নিসাঃ ৪৮)

সুতরাং কোন মুশরিককে মুসলিম ঘোষণা দেয়ার অর্থই আল্লাহর এই আয়াতকে খাটো করে দেখা এবং তুচ্ছ জ্ঞান করা এবং এটা একটা বড় ধরনের বিপর্যয়।
৩. মুশরিকদের সকল আমল ব্যর্থ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
বর্তমানের শাসক, বিচারক ও আইন প্রণয়ণকারী সংস্থাদের পূর্ণ সহযোগিতা ও তাদেরকে মান্য করার মাধ্যমে তাগুতের কাছে যারা সমর্পণ করছে তারা তাগুতকে গ্রহণ ও শিরক আত-ত’আ (আনুগত্য আল্লাহর সাথে অন্যদেরকে শরীক) তে লিপ্ত হওয়ার কারণে মুশরিকে পরিণত হয়েছে। তার মানে তাদের সকল আমল নিষ্ফল যদিও বাইরে থেকে তাদের যতই ইসলামপন্থী মনে হোক না কেন। আল্লাহ বলেনঃ

“তোমার প্রতি এবং পূর্বে গত হওয়া সমস্ত নবী রাসূলদের প্রতি এই ওহী পাঠানো হয়েছে যে, তুমি যদি শিরক কর তাহলে সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” (যুমারঃ ৬৫)

৪. মুশরিকদের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের অধীন থাকা মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
যারা তাওয়াগিত মুসলিমদের উচিত নয় তাদের কর্তৃত্ব স্বীকার করা বা তাদের মান্য করা। আল্লাহ বলেনঃ

“কিছুতেই আল্লাহ কাফেরদের মুসলিমদের উপর বিজয় দান করবেন না। (নিসাঃ ১৪১)

“এবং কাফের মুনাফিকদের সামনে আদৌ দমে যেয়ো না, তাদের নিপীড়নকে বিন্দুমাত্র পরোয়া করো না। (আল আহযাবঃ ৪৮) এবং

“তুমি যদি দুনিয়াবাসীদের অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে ভ্রষ্ট করে দিবে” (আনআমঃ ১১৬)

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি কাফেরদের ইশারা অনুযায়ী চলা শুরু কর তবে তারা তোমাদেরকে বিপরীত দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত ও ব্যর্থ হবে।” (আলে ইমরানঃ ১৪৯
৫. মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
আল্লাহর আইন পরিবর্তনকারি অত্যাচারী শাসকরা মুসলিম নয় এবং তাদের সাথে সম্পর্ক পরিবর্তন হওয়া জরুরী। মুশরিককে বিয়ে করা যায় না।

“আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্ববান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহব্না করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।” (আল বাকারাহ- ২২১)

মুশরিক মুসলিমদের সম্পত্তি থেকে উত্তরাধিকারী হতে পারে না বা তার সম্পত্তি থেকে মুসলিম কোন অংশ পেতে পারে না এবং মুসলিম জনগণের সম্পদের দায়িত্ব বা রক্ষণাবেক্ষণও তার জন্য হারাম বা নিষিদ্ধ। উসামা বিন যায়েদ রাসূল (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, “মুসলিম কাফিরের উত্তরাধিকারী হতে পারে না এবং কাফির মুসলিমের উত্তরাধিকারী হতে পারে না। (বুখারী, মুসলিম)

কোন মুশরিকের পিছনে নামায আদায় করা যাবে না, তার জানাযায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ এবং মুসলিমদের সাথে মুশরিকের বিয়ে নিষিদ্ধ। এজন্য এটা প্রচন্ডভাবে মুসলিমদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও সমাজ জীবনকে প্রভাবিত করে।
৬. তাওয়াগিতদের কর্তৃত্ব, বিচার ও আইন মান্য করলে কোন ব্যক্তি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
`````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
“আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি অবর্তীর্ণ হয়েছে আমরা সে বিষয়ের উপর ঈমান এনেছি এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীন হয়েছে। তারা (তাদের মধ্যে) বিরোধীয় বিষয়কে শয়তানের দিকে নিয়ে যেতে চায়, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা ওকে মান্য না করে (প্রত্যাখ্যান করে) পক্ষান্তরে শয়তান তাদেরকে প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায় । তাহাদিগকে যখন বলা হয় যে, আল্লাহ যাহা নাযিল করিয়াছেন সেই দিকে এস ও রসূলের নীতি গ্রহণ কর তখন এই মুনাফিকদিগকে তুমি দেখিতে পাইবে যে, তাহারা তোমার নিকট আসিতে ইতস্ততঃ করিতেছে ও পাশ কাটাইয়া চলিয়া যাইতেছে।” (সূরা নিসাঃ ৬০, ৬১)

এবং আল্লাহ বলেনঃ

“অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষন না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায় বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হৃষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।” (নিসাঃ ৬৫)

সুতরাং এই আয়াত সেসব লোকদের ঈমান বাতিল করে দেয় যারা কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী বিচার প্রত্যাখ্যান করে এবং এই আয়াত তাদের কুফর প্রমাণ করে যারা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক আইন প্রণয়ণ করে এবং সাথে সাথে তাদেরও কুফর প্রমাণ করে যারা এ সকল তাগুতের (বাতিল শাসক আইন প্রণয়নকারী, বিচারক ) কাছে বিচারের জন্য যায়।
৭. বাতিল শাসকদের আইন মানা ও তাদের জুলুম ও শিরককে মেনে নেয়া ইহজীবনে আল্লাহর শাস্তি ডেকে আনে ও ইসলামেরপুনরাবির্ভাবে বাধার কারন; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
“এই যালেমদের প্রতি একটুও ঝুঁকিওনা। নতুবা জাহান্নামের আওতার মধ্যে পড়িয়া যাইবে এবং তোমরা এমন কোন বন্ধু বা অভিভাবক পাইবে না যে তোমাদিগকে আল্লাহ হইতে বাঁচাইতে পারে। আর অন্য কোথাও হইতে তোমরা সাহায্যও পাইবে না।” (হুদ ১১৩)

এই আয়াত সরকারী আলিমদের জন্য প্রচন্ড সতর্কবাণী যারা অত্যাচারী শাসকদের শাসনকে ন্যায়সংগত ঘোষণা করেছে। আমাদের উচিত সকল ধরনের যুলুমকে প্রত্যাখ্যান করা যদি আমরা আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালার আশ্রয় ও সাহায্য লাভ করতে চাই এবং শিরক হলো সবচেয়ে বড় জুলুম। যদি আমরা নামায ও রোযা রাখি অথচ মানব রচিত আইনের শিরককে মেনে নেই তাহলে আমরা এই আয়াতের সতর্কবাণীর আওতায় পড়ে যাই।

“কিন্তু আজ সেই তোমরাই নিজেদের ভাই-স্বজনের হত্যা করিতেছ, নিজেদের গোত্রের কিছু লোকদের তোমরা ঘরবাড়ী হইতে নির্বাসিত করিতেছ, যুলুম ও অত্যধিক বাড়াবাড়ী সহকারে দল পাকাইতেছ এবং যখন তাহারা যুদ্ধ বন্ধী হইয়া তোমাদের নিকট পাকাইতেছে এবং যখন তাহারা যুদ্ধে বন্দী হইয়া তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়, তখন তাহাদের মুক্তির জন্য তোমরা বিনিময়ের আদান প্রদান কর। অথচ তাহাদিগকে ঘর হইতে নির্বাসিত করাই ছিল তোমাদের প্রতি হারাম (নিষিদ্ধ)। তবে তোমরা কি কিতাবের একাংশ বিশ্বাস কর এবং অপর অংশকে কর অবিশ্বাস? জানিয়া রাখ, তোমাদের মধ্যে যাহাদেরই এইরূপ আচরণ হইবে তাহাদের এতদ্ব্যতীত আর কি শাস্তি হইতে পারে যে, তাহারা পার্থিব জীবনে অপমানিত ও লাঞ্চিত হইতে থাকিবে এবং পরকালে তাহাদিগকে কঠোরতম শাস্তির দিকে নিক্ষেপ করা হইবে। তোমরা যাহা কিছু করিতেছ তাহা আল্লাহ মোটেই অজ্ঞাত নহেন।” (বাকারাহঃ ৮৫)

৮. আল্লাহ ততক্ষণ আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবেন না যতক্ষণ আমরা আমাদের আকীদা ও কাজে পরিবর্তন না ঘটাব; ; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
`````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
আল্লাহ আমাদের ততক্ষণ বিজয় দান করবেন না যতক্ষণ আমরা তাঁর অধিকার না দিব এবং তাদেরকে প্রত্যাখ্যান না করব যারা অন্যায়ভাবে ঐ সকল অধিকার গ্রহণ করেছে। আল্লাহ বলেনঃ

“তাহার জন্য সমস্ত একই রকম রক্ষক রহিয়াছে যাহারা আল্লাহর হুকুমে তাহার দেখাশুনা করে। প্রকৃত কথা এই যে, আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন না করে। আর আল্লাহ যখন কোন জাতির অকল্যাণ করার সিদ্ধান্ত করিয়া লন তখন তাহা কাহারো প্রতিবাদে রুদ্ধ হইয়া যায় না। না আল্লাহর বিরুদ্ধে এই রকমের জাতির কেহ সহায়ক ও সাহায্যকারী হইতে পারে।” (রাদঃ ১১) এবং

“ইহা সেই শাস্তি, যাহার আয়োজনে তোমাদের হাতসমূহ পূর্বাহ্ণেই করিয়া রাখিয়াছে, নতুবা আল্লাহ্ তো তাঁহার বান্দাদের প্রতি যুলুমকারী নহেন। এই ব্যাপারটি তাহাদের সহিত তেমনিভাবে করা হইয়াছে, যেমন করিয়া ফিরাউনের লোকজন ও তাহাদের পূর্ববর্তী অন্যান্য লোকদের সহিত ঘটিয়া আসিয়াছে। তাহা এই যে, তাহারা আল্লাহর আয়াতসমূহ মানিয়া লইতে অস্বীকার করিয়াছে, আর আল্লাহ্ তাহাদের গুনাহের কারণে তাহাদিগকে পাকড়াও করিয়াছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা শক্তিশালী এবং কঠিন শাস্তি দাতা।” (আনফালঃ ৫২-৫৩)

৯. আমরা যদি তাগুত, তার সৈন্যবাহিনী ও তার সমর্থকদের প্রত্যাখান করতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের দাওয়াত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা:
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
মানুষকে মিথ্যা আকীদা ও বাতিল ব্যবস্থার দিকে ডাকতে থাকলে তা জুলুম ও শিরকের দরজা খুলে দেয়।

“হে মুহাম্মদ (সাঃ) আপনি এখন সেই দ্বীনের দিকে দাওয়াত দিন ও হুকুম অনুযায়ী অবিচল (আকীদা ও শরীয়াহ অটল) থাকুন। আপনি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করবেন না।” (সূরাঃ ১৫)

“মিথ্যার আবরণে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করে তুলো না এবং জেনে শুনে সত্য আবরণে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করে তুলো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না” (বাকারাহঃ ৪২)

“প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তা তাদেরই জন্য ঠিকপথে তারাই পরিচালিত যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে যুলুমের সাথে মিশ্রিত করে নি।” (আনআমঃ ৮২)

“তুমি তাহাদের স্পষ্ট বলিয়া দাও যে, “আমার পথ তো এই, আমি আল্লাহর দিকে আহবান জানাই। আমি নিজেও পূর্ণ আলোকে আমার পথ দেখিতে পাইতেছি, আর আমার সংগী-সাথীরাও। আর আল্লাহ তো মহান পবিত্র; আর মুশরিক লোকদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।” (ইউসুফঃ ১০৮)

সুতরাং আল্লাহর পথে আহবান অবশ্যই খালেস তওহীদের ভিত্তিতে হতে হবে এবং তা হবে শিরকমুক্ত। যদি তাগুতকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলা না যায় তাহলে এরা যে কোন সময় আত্মপ্রকাশ করবে ও মুসলিম জনগণকে ধ্বংস করবে।

১০. মুসলিম বিশ্বের কাফের শাসকদের কর্তৃত্ব স্বীকারের মাধ্যমে সকল তাওয়াগিতকে স্বীকার করে নেয়া হচ্ছে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা:
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
অত্যাচারী শাসকরা যারা বিভিন্ন মুসলিম দেশে জনগণের উপর শাসক হিসাবে জেঁকে বসেছে তারা বিশ্বব্যাপী ইসলামের শত্র“দের সাথে পূর্ণ সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকাশ্যে বা খোলাখুলি কুফর করছে, তারা কাফেরদের আইন ও সংস্থাসমূহের মাধ্যমে সবাই ঐক্যবদ্ধ। ইসলামের শত্র“রা এ সকল পাপেট সরকারকে সমর্থন ও ফান্ড সরবরাহ করছে এবং মুসলিমদের দমনের জন্য তারা সমবেতভাবে কাজ করছে। এ সকল স্বৈরাচারীরা কাফিরদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে মুসলিম বিশ্বে সামরিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আঘাত হানার জন্য। এতে কোন সন্দেহ নেই যে অন্যান্য কাফির শাসক, দেশ ও সংস্থাসমূহের সাথে সহযোগিতার কারণে তারাও কাফিরে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ

“যে সব মুনাফিক ঈমানদার লোকদের বাদ দিয়া কাফের লোকদিগকে নিজেদের বন্ধু ও সংগীরূপে গ্রহণ করে তাহাদিগকে এই ‘সুসংবাদ’ শুনাইয়া দাও যে, তাহাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি নির্দিষ্ট রহিয়াছে। ইহারা কি সম্মান লাভের সন্ধানে তাহাদের নিকট যায়? অথচ সম্মানতো সমস্তই একমাত্র আল্লাহর জন্য।” (নিসাঃ ১৩৮-১৩৯)


“হে ঈমানদার লোকগণ! ইয়াহুদী ঈসায়ীদিগকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করিওনা, ইহারা নিজেরা পরষ্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেহ যদি তাহাদিগকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তাহা হইলে সে তাহাদের মধ্যেই গণ্য হইবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ যালেমদিগকে নিজের হেদায়াত হইতে বঞ্চিত করেন।” (মায়িদাঃ ৫১)

এই কুফরকে বুঝতে মুসলিমরা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আমরা যখন এ সকল নেতাদের গ্রহণ করছি তার ফলে পুরো কাফির বিশ্বের মুসলিমদের প্রতি অত্যাচার নিপীড়নের পথ উন্মুক্ত হচ্ছে এবং তওহীদ ও এর সর্বক্ষেত্রে প্রয়োগে বিরাট বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
১১. এসকল শাসকদের শিরক সহ্য করে নেয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হচ্ছে ব্যপক নিপীড়ন নির্যাতন; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
`````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
আল্লাহ বলেন “নিশ্চয়ই শিরক হলো সবচেয়ে বড় জুলুম।” (লুকমানঃ১৩)

“এবং দুরে থাক সেই ফিতনা হতে যার অশুভ পরিণাম বিশেষভাবে কেবল সেই লোকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তোমাদের মধ্যে যারা গুণাহ করেছে। আর জেনে রাখ আল্লাহ কঠোর শাস্তিদানকারী” (আনফালঃ ২৫)

যেহেতু মুসলিম উম্মাহ তাওহীদ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে, শাসকরা কুফর আইন প্রণয়ণ করেছে ও কারাগারে নিক্ষেপ ও নির্যাতনের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করেছে ও কারাগার নিক্ষেপ ও নির্যাতনের মাধ্যমে একে রক্ষা করেছে। এজন্য আমরা দেখতে পাচ্ছি সব ধরনের দুনীর্তির আখড়া হয়ে উঠেছে মুসলিম দেশগুলো এবং যারা শাসকদের অন্যায় ও কুফরের প্রতিবাদ করছে তাদেরকে জেলখানায় বন্দী করা হচ্ছে অথবা মৃত্যুদন্ড দেয়া হচ্ছে।
১২. মুরতাদের শাস্তি যদি কেউ মুসলিম হওয়ার পর শিরকে লিপ্ত হয় ও এর থেকে ফিরে আসতে ব্যর্থ হয় তখন তার উপর হদ (শাস্তি) কার্যকর করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
ইবনে আব্বাস নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন “যে কেউ তার দ্বীন পরিবর্তন করে তাকে মেরে ফেল” এবং জায়েদ ইবনে আসলামের মুরসাল গ্রন্থে এই শব্দগুলো ব্যবহার হয়েছে “ তার গর্দান উড়িয়ে দাও” (মালিক কিতাবুল আকদিয়াহ ভলিয়ম ২ নং ১৪৪৪) কুফর কি এ সম্পর্কে না জানলে এই হদ প্রয়োগ সম্ভব নয় এবং এইভাবে শরীয়াহর বিধানকে উপেক্ষা করে দুই জগতে (দুনিয়া ও আখেরাতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।)

১৩. শুধুমাত্র মুমিনরা একে অপরের জন্য হারাম; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
মুসলিম রক্ত, ইজ্জত ও সম্পদ সকল অবস্থায় নিরাপদ শুধুমাত্র বিশেষ হুদুদ ছাড়া (বিশেষ কিছু গুনাহের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত শাস্তি) কিন্তু এই নিরাপত্তা তাদের জন্য নয় যারা ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে।

আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত নবী (সাঃ) বলেন “কারণ প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, তার সম্মান, তার সম্পদ অন্য ভাইয়ের জন্য হারাম” (বুখারী, মুসলিম)

ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত নবী (সাঃ) বলেন “যে মুসলিম ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল তার রক্ত নিম্নোক্ত তিন কারণ ছাড়া ঝরানো যেতে পারে না। কোন বিবাহিত ব্যক্তি যেনা করলে জানের বদলে জান এবং সে ব্যক্তি যে দ্বীন থেকে ফিরে যায় ও জামাহ থেকে পৃথক হয়ে যায়” (বুখারী, মুসলিম)।

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেন “একজন মুসলিমকে শরীয়াহ মুতাবিক শুধুমাত্র তিন কারণে হত্যা করা যেতে পারে কোন বিবাহিত লোক জেনা করলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা, কোন মুসলিম ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করলে এবং যে ব্যক্তি ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সেক্ষেত্রে তাকে হত্যা করা অথবা শূলবিদ্ধ করা অথবা দেশ থেকে নির্বাসিত করা।” (আবু দাউদ, আন নাসাঈ-আল হাকিম কর্তৃক সহীহ বর্ণিত)

তথাকথিত আলেমরা যারা তাগুতের বিরোধিতা করছে তাদেরকে খারেজী আখ্যায়িত করেছে এবং এভাবে হকপন্থীদের কারাগারে বন্দী করা ও হত্যা করাকে পুরোপুরি ন্যায়সংগত ঘোষণা করেছে এবং তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে।

১৪.শিরকের বাহিনী সরিয়ে তাকে তাওহীদপন্থী লোকদের দ্বারা প্রতি স্থাপন করতে হবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
শাসকরা যারা আইন প্রণয়নের অধিকার গ্রহণ করেছে তাদের শিরক মানার মধ্যে দিয়ে মুসলিমরা তাদের উপর শিরক দূর করার যে হুকুম ছিল তা থেকে বহু দূরে সরে গেছে-

“এবং ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই কর যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং দ্বীন একান্তভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়।” (আনফালঃ ৩৯) এবং

আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী (সাঃ) বলেন “আমি ততক্ষণ পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) আদিষ্ট যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। আর তারা নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। তারা এগুলো করলে তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার কাছ থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের হক (অপরাধের শাস্তি) তাদের উপর থাকবে। আর তাদের প্রকৃত ফয়সালা আল্লাহ তায়ালার উপর সমর্পিত ” (মুসলিম কিতাবুল ঈমান নং ৩৩ বুখারী)

আজকে মুসলিম বিশ্বের দিকে আমরা তাকাই দ্বীন কি সত্যিই আল্লাহর জন্য? শাসকরা আর্ন্তজাতিক কুফর আইনের কাছে নিজেদের সমর্পণ করে ঐসব আইন প্রয়োগ করছে, তারা কুফর জাতিসংঘের সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে কুফরদের তৈরীকৃত সীমানা গ্রহণ করেছে। মুসলিম দেশসমূহ সুদ দিয়ে সয়লাব করে ফেলেছে এবং ষাটজন শাসকের শাসন জায়েয করেছে যেখানে মহান আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন এক খলিফার অধীনে এক উম্মাহতে পরিণত হওয়ার জন্য।
১৫. রাসূল (সাঃ) এর কথার অপপ্রয়োগ যদি মানব রচিত আইন ও আইন প্রণয়নের অধিকার কুফররূপে স্বীকার করা না হয়ঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
দুনীর্তি পরায়ন ও ভন্ড আলেম ও বাতিল আন্দোলনগুলো ইমামের ব্যাপারে ধৈর্য্যধারণ ও আনুগত্যের হাদীসগুলো এসকল শাসকদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ শুরু করবে। এর ফলে উম্মাহ কুফরকে উৎখাত করার জন্য কোন প্রচেষ্টা না চালিয়ে মুসলিম দেশসমূহ শিরককে সহ্য করতে থাকবে ও যুলুম নিপীড়ন ও কুফরের কাছে সমর্পণ করে চিন্তা করবে যে তারা সবর করছে। এটা আকীদার মধ্যে এক প্রচন্ড ভুল চিন্তাধারা এবং অনেকেই বর্তমানে এই হাদীসের ভুল প্রয়োগ করছে। প্রকৃতপক্ষে এই হাদীসে যেসকল শাসকদের আনুগত্যের কথা বলা হয়েছে তারা উম্মাহর শরয়ী ইমাম (খলীফা) ও তার নিযুক্ত করা আমীরের জন্য যারা শরীয়াহ মুতাবিক অর্থাৎ আল্লাহর আইন অনুযায়ী শাসন করে কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে গাফেল ও অত্যাচারী কিন্তু কখনই আইন রচনাকে নিজেদের হাতে তুলে নেয়নি।

এটা প্রমাণিত হয় উবাদ ইবনুস সামিত (রাঃ) বর্ণিত রাসূলের (সাঃ) এই হাদীস দ্বারা “নবী (সাঃ) আমাদের বায়াত গ্রহণ করেছিলেন এই মর্মে যে “শুনো ও মানো সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিতে সুদিনে ও দুর্দিনে তোমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ যাই হোক না কেন, তাদের কাছ থেকে কর্তৃত্ব সরিয়ে নিবে না যতক্ষন না তাদের মধ্যে প্রকাশ্য কুফর দেখতে পাও (কুফর কথা বলে) যার ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণ পেয়ে যাও (শাসককে সরিয়ে দেয়ার জন্য) ” [মুসলিম কিতাবুল ইমারাহ ৪৫৪১ বুখারী ইংলিশ/এরাবিক ভলিয়ম ৯১৭৮]।

আজকের শাসকরা স্পষ্ট কাফির সুতরাং তাদের ব্যাপারে ধৈর্য্যধারণের কোন প্রশ্নই আসে না যতক্ষন না তারা তওবা করে ও তাগুতকে পুরোপুরি অস্বীকার করে ও ইসলামিক শাসনের সকল নীতি গ্রহণ করে। যদি আমরা আমাদের আকীদাকে সুস্পষ্টরূপে জানতে সক্ষম হই তখন আমরা কিছুতেই ইমামের ব্যাপারে আনুগত্যের হাদীসকে তাগুতের আনুগত্যের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করব না।

১৬. তাগুতের বাহিনীর সাথে সহযোগিতা মুসলিমদের ক্ষতি সাধন করবে; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
মুসলিম উম্মাহর বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য আমাদের কিছুতেই (তাগুত সরকার ও তাগুতের সেনাবাহিনী) কাফেরদের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। যেহেতু তারা কাফের তাদের উপর নির্ভর করা কুফর ও অর্থহীন।

“আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে, এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তাঁরাই হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্য রয়েছে, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী। আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদের অর্ন্তভূক্ত। বস্ততঃ যারা আত্মীয়, আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশী হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যাবতীয় বিষয়ে সক্ষমও অবগত।” (সূরা আল-আনফাল ৮ঃ ৭৪-৭৫)

“হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা যদি আমার পথে জিহাদ করার জন্য ও আমার সন্তোষ লাভের মানসে (দেশ ছাড়িয়া ঘর হইতে) বাহির হইয়া থাক, তাহা হইলে আমার ও তোমাদের শত্র“দিগকে বন্ধু বানাইও না। তোমরা তো তাহাদের সহিত বন্ধুত্ব স্থাপন কর অথচ যে সত্য তোমাদের নিকট আসিয়াছে তাহা মানিয়া লইতে তাহারা ইতিপূর্বেই অস্বীকার করিয়াছে। আর তাহাদের আচরণ এই যে, তাহারা রাসূল এবং স্বয়ং তোমাদিগকে শুধু এই কারণে দেশ হইতে নির্বাসিত করে যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহর প্রতি ঈমান আনিয়াছ। তোমরা গোপনে তাহাদিগকে বন্ধুতাপূর্ণ বাণী পাঠাও, অথচ তোমরা যাহা কিছু গোপনে কর, আর যাহা কর প্রকাশ্যে, প্রত্যেকটি ব্যাপারই আমি ভালভাবেই জানি। তোমাদের যে ব্যক্তিই এইরূপ করে, নিশ্চিত জানিও, সে সত্য পথ হইতে ভ্রষ্ট হইয়া গিয়াছে। তাহাদের আচরণ তো এই যে, তাহারা তোমাদিগকে কাবু ও জব্দ করিতে পারিলে তোমাদের সহিত শত্র“তা করে, হাত ও মুখের ভাষা দ্বারা তোমাদিগকে জ্বালাতন দেয়। তাহারা তো ইহাই চায় যে, কোন না কোন ভাবে তোমরা কাফের হইয়া যাও।” (সূরা মুমতাহিনাঃ ১-২)

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা নিকট যমীনের বুকে বিচরণশীল জন্তু প্রাণীর মধ্যে নিকৃষ্টতম হইতেছে সেই সব লোক যাহারা মহাসত্যকে মানিয়া লইতে অস্বীকার করিয়াছে; পরে তাহারা কোন প্রকারেই তাহা কবুল করিতে প্রস্তুত হয় নাই। (বিশেষ করিয়া) তাহাদের মধ্যে সেই লোকেরা যাহাদের সহিত তুমি সন্ধি-চুক্তি করিয়াছ, পরে তাহারা প্রত্যেকটি সুযোগেই উহা ভংগ করে এবং আল্লাহকে এক বিন্দু ভয় করে না।” (আনফালঃ ৫৫-৫৬)

এসকল কাফের নেতারা শুধুমাত্র নিজেদের দুনিয়াবি স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত ও তারা ইসলামের জাগরণকে যে কোন মূল্যে দবিয়ে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আল্লাহ এইসব কাফেরদের ব্যাপারে বলেন:

“কোন মুসলমান ব্যক্তির ব্যাপারে ইহারা না নিকটাত্মীয়তার কোন খেয়াল করে আর না কোন চুক্তির দায়িত্ব পালন করে। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি সব সময় তাহাদের পক্ষ হইতেই হইয়াছে।” (আত-তাওবাহ ১০)
১৭. তাগুতকে রক্ষা করা ও তাগুতের সহযোগিতা করা কুফর; ইহা বুঝতে না পারার ব্যর্থতাঃ
``````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
“তোমরা কখনো এমন দেখিতে পাইবে না যে, আল্লাহ্ ও পরকালের প্রতি ঈমানদার লোকেরা কখনো তাহাদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করে যাহারা আল্লাহ এবং তাহার রাসূলের বিরুদ্ধতা করিয়াছে তাহারা তাহাদের পিতাই হউক কিংবা তাহাদের পুত্র-ই হউক বা ভাই-হউক অথবা হউক তাহাদের বংশ পরিবারের লোক। ইহারা সেই লোক যাহাদের দিলে আল্লাহ তায়ালা ঈমান দৃঢ়মূল করিয়া দিয়াছেন এবং নিজের তরফ হইতে একটা ‘রুহ’ দান করিয়া তাহাদিগকে শক্তিশালী করিয়াছেন। তিনি তাহাদিগকে এমন সব জান্নাতে দাখিল করিবেন যেসবের নিম্নদেশে ঝর্ণধারা প্রবহমান হইবে। তাহাতে তাহারা চিরদিন থাকিবে। আল্লাহ তাহাদের প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছেন এবং তাহারাও সন্তুষ্ট হইয়াছে তাহার প্রতি। ইহারা আল্লাহর দলের লোক। জানিয়া রাখ, আল্লাহ দলের লোকেরাই কল্যাণপ্রাপ্ত হইবে।” (মুজাদালাঃ ২২)

“মুমিনগণ যেন কখনো ঈমানদার লোকদের পরিবর্তে কাফেরদিগকে নিজেদের বন্ধু, পৃষ্টপোষক ও সহযাত্রীরূপে গ্রহণ না করে। যে এইরূপ করিবে আল্লাহর সহিত তাহার কোন সম্পর্ক থাকিবে না। অবশ্য তাহাদের যুলুম হইতে বাঁচিবার জন্য বাহ্যতঃ এইরূপ কর্মনীতি অবলম্বন করিলে তাহা আল্লাহ ক্ষমা করিবেন। আল্লাহ তোমাদিগকে তাঁহার নিজের সম্পর্কে ভয় দেখাইতেছেন, তোমাদিগকে তাঁহারই দিকে ফিরিয়া যাইতে হইবে।” (আলে ইমরানঃ ২৮)

“হে ঈমানদার লোকেরা, নিজেদের পিতা ও ভাইকে নিজের বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না যদি তাহারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে অধিক ভালবাসে। তোমাদের যে লোকই এই ধরনের লোকদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করিবে সে-ই যালেম হইবে।” (তওবাহঃ ২৩)

“হে ঈমানদারগণ! ঈমানদারলোকদিগকে ত্যাগ করিয়া কাফেরদিগকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না। তোমরা কি আল্লাহর হাতে নিজেদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট দলিল তুলিয়া দিতে চাও?” (নিসাঃ ১৪৪)


“আজ তোমরা এমন বহু লোক দেখিতে পাইতেছ যাহারা (ঈমানদার লোকদের বিপরীত) কাফেরদের সহিত বন্দুতা ও সহযোগিতা করিতে ব্যতিব্যস্ত। নিশ্চয়ই অত্যন্ত খারাব পরিণামই সম্মুখে রহিয়াছে যাহার ব্যবস্থা তাহাদের প্রবৃত্তিসমূহ তাহাদের জন্য করিয়াছে। আল্লাহ তাহাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছেন এবং তাহারা চিরস্থায়ী আযাবে নিমজ্জিত হইবে। তাহারা যদি বাস্তবিকই আল্লাহ, রসূল এবং সেই জিনিস মানিয়া লইতে প্রস্তুত হইত যাহা নবীর প্রতি নাযিল হইয়াছে তবে তাহারা কখনই (ঈমানদার লোকদের বিরুদ্ধে) কাফের লোকদিগকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না কিন্তু তাদেও মধ্যে অনেকেই দুরাচার।” (মায়েদাঃ ৮০-৮১)

উপসংহার
*************************************************** ******************
মুসলিম উম্মাহকে অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে যে তওহীদের সঠিক জ্ঞান অর্জনে ও সকলক্ষেত্রে তাওহীদ প্রয়োগ অবহেলাই হচ্ছে সকল সমস্যার মূল বা শিকড়। যদি মুসলিমরা তাগুতকে তার সকল বাহিনী ও সমর্থকসহ প্রত্যাখান না করে তাহলে জনগণ কখনই এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য পরিশ্রম করবে না এবং অনেক লোক যদি পরিবর্তনের জন্য কাজও করে কিন্তু সাথে সাথে তাগুত ও তার সমর্থকদের সহযোগিতাও করে তাহলে এটা শুধু এক ধরনের যুলুম ও শিরকের পরিবর্তে আরেক ধরনের যুলুম ও শিরককে নিয়ে আসবে। যদি আমরা বর্তমানে শাসকদের কাফের বলতে ব্যর্থ হই বা কাফের বলতে দ্বিধাবোধ করি তাহলে প্রকারান্তরে আমরা এটাই ঘোষণা করছি তাদের কাজকর্মও ইসলাম অনুযায়ী হচ্ছে অথচ এসকল নেতারা ইসলাম থেকে নিজেদের অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে। একজন শাসক যদি তাগুত হয় তাহলে শুধুমাত্র সে-ই অনৈতিক নয় বরং তার সরকার, তার সেনাবাহিনী তার পুলিশবাহিনী ও তার সমর্থক সকলেই কাফের। আল্লাহ সুবহানু তায়ালা বলেন। “যারা কাফের তাদের সাহায্যকারী হচ্ছে তাগুত।” (বাকারাহ ২৫৭) “এবং যারা কাফের তারা লড়াই করে তাগুতের পথে।” (নিসা ঃ ৭৬) আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। কোন উপকারী পরিবর্তনই ঘটবে না যতদিন আমরা তাদেরকে মুসলিম মনে করব যারা আমাদের সৃষ্টির কারণ অর্থাৎ ইবাদতে প্রতিকুলতা সৃষ্টি করছে ও তাওহীদ বিনষ্ট করছে। সুতরাং তাগুত বা আল্লাহ প্রদত্ত সীমা অতিক্রমকারীদের কাফির হিসাবে অনুধাবন ব্যর্থ হওয়া আকীদার মধ্যে প্রচন্ড ভুল এবং এ এর ফলে যে কাজ করা হয় তাও ভুল বেশীর ভাগ মুসলিম তাওহীদের শত্র“দের তাদের নেতা, শাসক, সেনা বাহিনী ও পুলিশ হিসাবে মন থেকে গ্রহণ করেছে, যতক্ষণ না আমরা আমাদের চিন্তা-বিশ্বাস ও কাজকে না পরিবর্তন করছি, আমাদের জানা উচিত আল্লাহ বলেছেন
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×