জল্পনা কল্পনার বিশ্বকাপ শেষ হইতে চললো... কত কিছু ভবিষ্যতবানী যে কইরা রাখসিলাম... এবারের মত ব্যাবসায় লস জীবনে খায় নাই ফজলুভাই ক্রিকেট এর চরিত্র যে কি এইটা এবার ভাল দেখা গেসে... নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড কে কয়জন ই বা সেমিতে উঠার কথা কল্পনা করেছিলেন উপমহাদেশে?? এদের মধ্যে একজন আবার ফাইনালে আজকে লড়বে... এটাই ক্রিকেটের চরিত্র, কখন যে কি হবে কেউ বলতে পারবে না
সবচেয়ে খুশির খবর নিজের দেশে ভারত দর্শক এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ খেলা করে মনে যখনই এটা মনে পরে...
সুপার টেনের পারফর্মেন্স নিয়ে আমি আমার স্বপ্নের একাদশ বানাইয়া দিলাম
দেখেন কার কেমন লাগে...
জেসন রয়
এই বিশ্বকাপে বেশ কয়জন ওপেনার এর পারফর্মেন্স ছিল নজরকারা... তাই ওপেনিং এর দুইজন কে বেছে নিতে বেশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগতে হয়েছে আমাকে...
তামিম ইকবাল, ক্রিস গেইল, ক্যান উইলিয়ামসন, মার্টিং গাপটিল, মোহাম্মদ শেহজাদ - কেউ কারো চেয়ে কম ছিল না। কিন্তু আমাকে বিচার করতে হচ্ছে সুপার টেন থেকে সেমি ফাইনালের পারফর্মেন্স। সেই বিচারে তামিম কিছুটা পিছিয়ে পরে, শেহজাদ ও একই কাহিনী। ক্রিস গেইল কে প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির পর আর খুজে পাওয়া যায়নি। আর রানের বিচারে এগিয়ে থাকার কারণে গাপটিল এবং রয় এর দৈরথে আমাকে রয় কেউ নির্বাচন করতে হয়েছে।
এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ১৮৩ রানের সংগ্রাহক এই ক্রিকেটার। সর্বশেষ ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৮ রান করে দলকে ফাইনালে উঠতে বিশেষ সহায়তা করেন। বিপিএল এ চিটাগং কিংসে খেলে এই ক্রিকেটারের উন্থান, ইংল্যান্ড এ কাউন্টি তেও দ্বিতীয় সারির দলে খেলেন। কিন্তু তাকে বিশ্বকাপে খেলানো টা নির্বাচকদের কাছে একটা জুয়াই ছিল। কিন্তু সেই জুয়ায় জেসন রয় দেখিয়ে দিলেন তিনিও পারেন ৩৬.৬ গড়ে এখন পর্যন্ত তার যে পারফর্মেন্স, দল তার দিকে আজকে তাকিয়ে থাকবে দ্বিতীয়বারের মত ট্রফি টা ছোয়ার জন্যেই...
কুইন্টন ডি কক
এই জায়গা ঠিক করতেও বেশ দ্বিধায় ভুগতে হয়েছে। কিন্তু আমাকে একজন কিপার ও তোঁ নিতে হবে। এবার মোহাম্মদ শেহজাদ বাদে তেমন কারো পারফর্মেন্স নজরে পরেনি, ছিলেন একজন, জশ বাটলার। কিন্তু ধারাবাহিকতা এবং ব্যাটিং ওর্ডার ঠিক করতে আমাকে কক কেই বেছে নিতে হয়েছে।
৪ ম্যাচ খেলে ৩৮.২৫ গড়ে তার সংগৃহিত রান ১৫৩। ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিপক্ষে ৩ ম্যাচেই ধারাবাহিক ছিলেন। এই ৩ ম্যাচে যথাক্রমে করেন ৫২, ৪৫, ৪৭। দুর্ভাগ্য দক্ষিন আফ্রিকার, তারা সেমিতে আসতে পারেনি আসলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দের মধ্যে সেরা ৩ এ থাকতেন। এছাড়াও এই বিশ্বকাপে ককের ঝুলিতে থেকে গেছে ৫টি ক্যাচ এবং ২টি স্ট্যাম্পিং...
ভিরাট কোহলি
এখন ঘটনা হচ্ছে, এই লোক কে আমি দুই চোখে দেখতে পারিনা। কিন্তু যোগ্য লোককে তার মর্যাদা দিতেই হবে, কিন্তু সেটা তার কাজের মর্যাদা। সম্মান এবং মর্যাদা এক জিনিষ না, সম্মান অর্জন করতে হয় আচরণ দিয়ে
৫ম্যাচে ২৭৩ রান, ৯১ গড়ে... এই পজিশনে তার কোন প্রতিদ্বন্দি- ই খুজে পাওয়া ভার... ৩টি ফিফটি, ৩ইনিংস এ নট আউট, এর মধ্যে ৩টিতেই দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে মাঠ ছেরেছেন। ১টা উইকেট ও আছে তার ঝুলিতে। কিন্তু, ঐযে, উইকেট টা পাওয়ার পর যে বুনো উল্লাস টা করেছিলেন, ঐ ধরনের আচরণ ই তোঁ সমস্ত সম্মান কেড়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট
জো রুট
আমার ব্যাটিং অর্ডারে চেঞ্জ আনার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার রুট কে ৪-এ নামাতে হচ্ছে। কারণ আর কাউকে নজরে পরছে না টপ অর্ডারে নামানোর জন্য। কোহলি কে জায়গা করে দিতে তাই রুট ৪-এ।
৫ ম্যাচে তার সংগ্রহ ১৯৫। গড় ৪৮.৭৫!! এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের ৮৩ রানের ইনিংস টি এই বিশ্বকাপের সেরা ৫-এ থাকবে। সর্বশেষ ম্যাচেও ২৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন...
সাকিব আল হাসান
এই জায়গার জন্য দৌড়ে ছিলেন সাকিব এবং সান্টনার। এই দুজন ছাড়া বাহাতি স্পিনার হিসাবে কাউকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে ব্যাটিং অর্ডারের খাতিরে এবং ধারাবাহিকতা বিবেচনায় আমাকে সাকিব কেই প্রাধান্য দিতে হচ্ছে
বাছাই পর্বে সাকিব ভাই এর বোলিং পারফর্মেন্স ছিল অনবদ্য। কিন্তু সেই জিনিষ আমি বিবেচনায় আনছি না।
সুপার টেন সাকিব আল হাসান এর রান সংগ্রহ ছিল ১০৭ এবং উইকেট সংখ্যা ৪টি। অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে বোলিং এ ছিলেন বেশ ধারাবাহিক। কদিন ধরেই তেমন একটা ভালো করতে পারছিলেন না, কিন্তু এই বিশ্বকাপে স্বরুপে ফিরেন সাকিব। সামনে যে দলগুলার জন্য কি অপেক্ষা করছে...
মোহাম্মদ নবী
পুরোদস্তর অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে থাকার জন্যই তাকে আমার নির্বাচন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে শেষ ম্যাচে তার করা শেষ ওভারে তার বিচক্ষনতা ছিল প্রশংসনীয়। সুপার টেন এ তার সংগ্রহে আছে ৫উইকেট। সেইসাথে ব্যাটিং ও করতে পারেন লেট অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডারের যে কোন জায়গায়। এই যোগ্যতার কারনেই মূলত তাকে দলে নেয়া
জেমস ফকনার
এই বিশ্বকাপে ব্যাটীং এর খুব একটা সুযোগ পাননি, যাএ পেয়েছেন ঠিকমত কাজে লাগাতে পারেননি তিনি কিন্তু ফকনার কি পারে তা তোঁ সবাই জানে সেইসাথে ডেথ অভারের বোলিং এ যে তিনি কিরকম পারদর্শী তাও তোঁ বলার অপেক্ষা রাখে না। এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২টি ৫-উইকেটের মধ্যে ১টির মালিক তিনি। ৪ম্যাচে মোট প্রাপ্ত উইকেট ৮টি। এই জায়গায় বিবেচনায় এনেছিলেম সান্টনার এবং হার্দিক পান্দ্যিয়া'র সাথে ক্রিস জর্ডান কে। কিন্তু একজন বাহাতি স্পিনার দলে আছেন, সেইসাথে স্পিন অ্যাটাক আমার যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ন লেগেছে, ক্রিস জর্ডান এবং পান্দ্যিয়া'র বোলিং ভাল হলেও তাদের ব্যাটিং টা একদমই কাজে দেয়নি এবার। তাই ফকনার ই আমার পছন্দ
আন্দ্রে রাসেল
এই জায়গার জন্য বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে রাসেল বাদে কেউই নেই, থাকলেও পাত্তাই পাবেন না রাসেলের কাছে
এই বিশ্বকাপে বোলিং স্টার্ট করতে প্রথম দেখা যায় তাকে। সেইসাথে ডেথ অভারেও বোলিং করে মোট ৮উইকেট পুরে নেন ঝুলিতে। সেইসাথে তার বিস্ফোরক ব্যাটিং এর কথা তোঁ অজানা নয় কারো। সেইদিন ভারতের বিপক্ষে উপরে উঠে এসে দলকে জিতিয়ে নিজের সামর্থ্যের কথা জানিয়ে দিয়ে গেছেন সবাইকে। এই বিশ্বকাপে সংগৃহিত রান তার ৯০, কিন্তু সেদিন ভারতের বিপক্ষে তার দায়িত্বশীল ব্যাটীং সব সমীকরণ ছাড়িয়ে যায়।
স্যামুয়েল বদ্রী
ওয়েস্ট ইন্ডীজ দলটাই আজব... সেই দলে লেগ স্পিন দিয়ে বোলিং স্টার্ট করে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছিলেন এক বিস্ময় হয়ে।
আসলে কথা হচ্ছে, লেগ-স্পিন কে ক্রিকেটে জুয়া বলা হয়। লেগ-স্পিন কে হয় মারো না হয় মরো... তাই লেগ-স্পিন টা টি-২০ তে অনেকটাই কম দেখা যায়। কিন্তু এই বিশ্বকাপে বেশ কজন লেগি অনেক ভাল করেছেন। ইশ সোধি, আফগানিস্তানের তরুন বিস্ময় রশিদ খান, ইংল্যান্ড এর আদিল রশিদ, ইমরান তাহির... কিন্তু এদের মধ্যে আমাকে বেছে নিতে হয়েছে স্যামুয়েল বদ্রিকে। তার মূল প্রতিদ্বন্দী ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ইশ সোধী। ইশ সোধীকে বদ্রী পেছনে ফেলেন তার ইকোনমি রেট এবং ডেথ এ বোলিং এর যোগ্যতা দিয়ে। যদিও ইশ সোধির উইকেট বেশি, কিন্তু বদ্রীর ইকোনমি রেট শুধু ভাল নয়, খুবই ভাল
মুস্তাফিজুর রহমান
পুরা বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পান নাই, মাত্র ৩ম্যাচে খেলেছেন। পুরা বিশ্বকাপ খেললে যে কি হইতো......
৩ম্যাচে তার সংগৃহীত উইকেট ৯টি। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান রা তার কাটারে যেভাবে নীল হয়েছেন, ছোট দলগুলা হয়তো শোকরিয়া আদাত করসে যে উনি বাছাইপর্ব খেলেন নাই দেখে... তাকে দলে নেয়ার পেছনে তার প্রতিদ্বন্দী খুজে পাওয়া গেছে তার স্বদেশী আল-আমিন হোসেন কে। কিন্তু ৭ম্যাচে ৮উইকেট পাওয়া আল-আমিন এর চেয়ে নিঃসন্দেহে তিনি এগিয়ে থাকবেন
কাইল অ্যাবোট
স্টেইন এর দুর্দিনে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রাতা হিসেবে ছিলেন এই বিশ্বকাপে। ৩ম্যাচে খেল উইকেট নেন ৭টি। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২উইকেট নেন মাত্র ১৪ রান দিয়ে। এতেই তার সামর্থ্যের প্রমান মিলে। তার প্রতিদ্বন্দী হিসেবেও বিবেচনাইয় আনা হয়েছিলে আল-আমিন কে, কিন্তু সুপার টেন এর পারফর্মেন্স বিবেচনায় তাকেই নিতে হয়
ইয়ার ফাইনাল চলার কারণে ঠিকমত খেলাগুলা দেখতে পারেন নাই ফজলুভাই
তাও যতটুক খোজ খবর রাখসেন আর গুগুল এ গুগলি কইরা, ক্রিকইনফো ঘাইটা, ক্রিকবাজ ঘাইটা, আইছিছি'র ওয়েবসাইট এ হাইলাইটস দেইখা যা বুঝসেন তা দিয়া দল বানাইসেন কোন তথ্যে ভূল থাকলে অগ্রিম দুঃখিত।
সবাই তার ড্রিম ইলেভেন নিয়া হাজির হইতে পারেন আলোচনা করলে ভালাই হবে
আর ভারত বাদ পড়ায় সবার মনের অবস্থা জানাইয়া কমেন্ট করলে আরো খুশি হবো
-MSDL_fajlupedia
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩