somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাফিউর রহমান ফারাবী
ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাংলাদেশের প্রান্ত হতে আপনাকে হাজার সালাম! ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক

কুরবানী প্রথাকে যারা কটাক্ষ করছেন তাদের সেই সব হাস্যকর প্রশ্নের জবাব

২৪ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভার্চুয়াল জগতে নাস্তিকরা বর্তমানে মুসলমানদের কোরবানী প্রথা কে কটাক্ষ করতে চাচ্ছে। নাস্তিকরা বলতে চাচ্ছে যে আমরা মুসলমানরা নাকি ঈদুল আযহার নামায পড়ে উৎসব করে পশু হত্যায় মেতে উঠি। আচ্ছা ধরেন আপনার বোনের বিয়ে ঠিক হল। বোনের বিয়ের উপলক্ষ্যে আপনারা একটা গরু কিনলেন। তো আপনাদের পরিবারের সকলেই কিন্তু খুশী মনে আনন্দ সহকারে ঐ গরু টাকে জবাই করে রান্না করবেন যাতে আপনার বোনের বিয়েতে যারা আসবে তাদের কে এই গরুর মাংস দ্বারা আপ্যায়ন করতে পারেন। এই যে খুশী মনে গরুটিকে জবাই করা হবে এতে কি কোন অন্যায় থাকার কথা ? গ্রাম এলাকায় ঘরে কোন মেহমান আসলে মেহমানের সম্মানার্থে কিন্তু ঠিকই ঘরের বড় মোরগ টাকে জবাই করে। এই মোরগ টাকে জবাই কিন্তু আমরা সবাই আনন্দ সহকারেই করি কারন এর দ্বারা ঘরের মেহমান কে ভাল ভাবে আপ্যায়ন করা যাবে। এই যে বোনের বিয়ের উপলক্ষ্যে খুশি মনে একটা গরু জবাই দেয়া বা মেহমানের সম্মানার্থে ঘরের বড় মোরগ টাকে জবাই করা এই খুশী টা অবশ্যই মানব জীবনের একটা স্বাভাবিক দিক। ঠিক তেমনি দীর্ঘ দিন পর আমরা পেট পুড়ে গরুর মাংস খাবো এই আনন্দে যদি আমরা ৪-৫ জন শরীক মিলে একটা গরু কুরবানী দিয় তাতে কি কোন দোষ বা অন্যায় থাকার কথা ? আর এই খুশিতে যদি কোন দোষ থাকে তাইলে এখন থেকে আপনারা বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানেও আর কোন গরু জবাই দিবেন না।

আপনি হয়ত বলতে পারেন যে এক সাথে এত গরু কোরবানী দিলে মাংসের অপচয় হবে। তখন আমি আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দিব যে যখন দেশে ফ্রীজ ছিল না তখনও কিন্তু আমাদের দাদী/নানীরা কুরবানীর মাংস চুলায় জাল করে করে অনায়াসেই ১ মাস ধরে খেয়েছে। কুরবানীর পর দেশের সব এলাকায় ঘরে গরুর মাংস দিয়ে নানা রকম খাবার যেমন গরুর মাংসের সমুচা ইত্যাদি তৈরী করা হয়। তাছাড়া সকাল বেলায় ভাতের বদলে মাংস ঝুড়ঝুড় করে খাওয়া হয়। অর্থ্যাৎ কুরবানীর মাংস যেটা গরীব লোকদের কে দান করে ঘরে থাকে তার এক টুকরা মাংসও অপচয় হয় না। এটা আমাদের দাদী/নানীর সময়েও হত না আর এখন তো ফ্রীজের যুগ। এখন তো আমরা সবাই কুরবানীর মাংস ফ্রীজে রেখে একটানা ২ মাস ধরে খাই।

বাংলাদেশের নাস্তিকদের আদি পিতা আরজ আলী মাতুব্বর সেই পাকিস্তানী পিরিয়ডে উনার "সত্যের সন্ধান" নামক বইতে বলতে চেয়েছেন যে প্রতি বছর এত এত পশু কোরবানী দিলে নাকি কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পশুর অভাব পড়বে। আচ্ছা মুসলমানরা তো আর প্রতিদিন কোরবানী দেয় না, বছরে একবার দেয়। দেখা যায় কোরবানীর পর প্রায় ২ মাস কসাইখানায় আর তেমন একটা পশু জবাই হয় না। ফলে পশুর সংখ্যার মাঝে ঠিকই কিন্তু একটা ভারসাম্য বজায় থাকে। তাছাড়া ট্রাক্টর আবিস্কারের পূর্বে মুসলমানরা যে এত এত গরু কোরবানী দিল কই ইতিহাসে তো কখনো কোথায় লেখা নেই যে জমি চাষ করতে যেয়ে গরুর অভাব পড়েছে। কোরবানী ছাড়াইতো প্রতিদিন হাজার হাজার পশু জবাই হচ্ছে আমেরিকার শিকাগো শহরে কই তখন তো আরজ আলী মাতুব্বরের কোন সমস্যা হয় না ? হিন্দুরাও তো বিভিন্ন পূজায় পশু বলি দেয়, তখন কি পশুর সংখ্যা কমে না? আরজ আলী মাতুব্বরদের কাছে খালি মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করলেই দোষ হয়। বর্তমানে ভারতে গো খাদ্যের পিছনে অহেতুক প্রচুর অর্থ খরচ হচ্ছে। এই ট্রাক্টরের যুগে এত গরু দিয়ে ভারত কি করবে ? :( :( :(

বাজারে বর্তমানে গরুর মাংসের কেজী ২৮০ টাকা। আমি আপনি কি কখনোই বাজার থেকে ৫ কেজি গরুর মাংস কিনে নিয়ে এসে গরীবদের কে দিয়েছি ? না কখনোই দেয় নি। কিন্তু কুরবানীর ঈদের দিনে একটা মধ্যবিত্ত পরিবার যারা কিনা প্রতিবেশী বা কোন আত্মীয় স্বজনের সাথে ১ ভাগ গরু দিয়েছে তারাও কিন্তু নিজ হাতে কম পক্ষে ৫ কেজী গরুর মাংস গরীব মিসকীন দের কে দিয়েছে খুশী মনে। এই যে একটা মধ্যবিত্ত পরিবার খুশী মনে ৫ কেজী গরুর মাংস দুঃস্থ মানুষ কে দান করল এটা কি কোন ছোট খাট ঘটনা ? চিন্তা করে দেখুন ঈদুল আযহার দিনে বাংলাদেশের একজন কৃপন গৃহ স্বামীও কিন্তু ৫ কেজী গরুর মাংস নিজের ঘর থেকে খুশী মনে দিবে দুঃস্থ ব্যক্তিদের কে। এই যে বাংলাদেশের মত ৩য় বিশ্বের একটা দেশের নাগরিক যারা কিনা প্রতিদিন দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করেও নিঃস্বার্থ ভাবে ৫ কেজী গরুর মাংস দান করার মত এতবড় একটা ঔদার্য্য দেখিয়েছে এটা কে কিছু আবাল নাস্তিক, তথাকথিত মুক্তমনা ও ইসলাম বিদ্বেষীরা পশু হত্যা নামে চালিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা বলতে চাচ্ছে মুসলমানরা নাকি খুব নিষ্ঠুর। বাজারে মুরগী কিনার পর মুরগীটাকে যখন যবাই করা হয় তখনও কিন্তু আমাদের সবার খারাপ লাগে। কিন্তু কি করবো ভাই আমাদের তো হাত পা বাধা। বেচে থাকতে হলে মুরগীর মাংস আমাদের কে খেতেই হবে। মুরগীর চেয়ে গরু মহিষ আকারে অনেক বড় বলেই তাদের ছটফটানীটা আমাদের চোখে একটু বেশীই পড়ে। কিন্তু জবাই করার সময় একটা মুরগীর ও যে কষ্ট হয় গরু মহিষেরও ঠিক একই কষ্ট হয়। কুরবানীর ২ দিন আগে দেশের প্রত্যেকটা শহুরে বাড়িই বলতে গেলে গৃহস্থের বাড়িতে পরিনত হয়। ঈদের ২ দিন আগে থেকেই গরু কে পালতে হয়, গরুকে খৈল ভুষি খাওয়াইতে হয়। অনেকটা গ্রামের গৃহস্থের বাড়ির মতন। শহরের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা যারা জীবনে কখনোই ঐ রকম ভাবে গরু ছাগলের কাছে আসে নাই তারাও তখন গরু ছাগলের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। ভাই এটাও কিন্তু একটা জীবনের সৌন্দর্য্য। কসাই পেশা এটা কোন খারাপ পেশা নয়। সমাজের ৮-১০ টা হালাল পেশার মত কসাইও একটা হালাল পেশা। কুরবানীর দিন আমরা আমাদের জীবনের স্বাভাবিক প্রয়োজনের তাগিদায় শুধু একদিনের জন্য কসাই হই। ব্যাস আর কিছু না। এর সাথে তথাকথিত পশু হত্যা বা নিষ্ঠুরতার কোন সম্পর্ক নাই। নাস্তিক ভাইয়েরা দয়া করে জ্ঞান পাপী হবেন না।

একটা কথা আছে বাংলা সাহিত্যে "যাকে দেখতে পারি না তার চলন বাকা" ধরেন আপনি কোন মেয়েকে ভালবাসার কথা বলে উল্টা ঐ মেয়ের কাছ থেকে একটা চড় খাইলেন। ;) ;) ;) এরপর থেকে আপনি ঐ মেয়ের ভাল কথা তার কোন ভাল কাজ কেও আর পছন্দ করবেন না। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে শুধু বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা করা। নাস্তিকতার নামে ক্রমাগত মিথ্যা চর্চা করতে করতে বর্তমানে নাস্তিকরা এখন মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে ইসলামের বিরোধীতা করতে যেয়ে অদ্ভুদ অদ্ভুদ সব যুক্তি দিচ্ছে আর নিজেরা এইসব হাস্যকর কথা বার্তা বলে আমাদের কাছে সার্কাসের জোকারে পরিনত হচ্ছে। :-P :-P :-P
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০৫
৪১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×