আমেরিকা সরকার কর্তৃক নর্থ সাউথের নাফিস কে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ফাসানো ও ২ দিন আগে রেজওয়ান কাউসারের ১৭ বছর জেল হওয়া এই ২ টি ঘটনা টা নিয়ে সারা বাংলাদেশ এখন উত্তাল। আপনি Google এ জিহাদ/Zihad লিখে Search দিলেই অনেক ফেইক ওয়েবসাইট পাবেন যেইখানে আপনাকে জিহাদ করতে উত্সাহিত করা হবে এমনকি তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করে জিহাদের সরঞ্জাম পৌছানোরও ব্যবস্থা করে দিবে।
বারাক ওবামা একজন কৃষ্ণাজ্ঞ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার অনেক শ্বেতাঙ্গ যুবকই বারাক ওবামাকে পছন্দ করে না। হোয়াইট হাউসে প্রতিদিন অনেক ইমেইল আসে বারাক ওবামা কে হত্যার হুমকি দিয়ে। অনেক শ্বেতাঙ্গ যুবকই ইনিয়ে বিনিয়ে বারাক ওবামাকে হত্যা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে Facebook, Twitter ও অনেক সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। FBI এর স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে কখনই কি আপনারা শুনেছেন যে একটি শ্বেতাঙ্গ যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে বারাক ওবামাকে হত্যা করার ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য ? FBI কিন্তু চাইলেই খুব সহজেই পারে কোন কট্টর শ্বেতাঙ্গ যুবককে ভুল ভাল ভুলিয়ে তার মনে বারাক ওবামা কে হত্যা করার ইচ্ছা জাগ্রত করে তারপর তারা নিজেরাই ঐ শ্বেতাঙ্গ যুবককে নকল বোমা সরবরাহ করে হোয়াইট হাউসে নিয়ে যাবে। আমেরিকার কোন ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠান বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করার জন্য যদি রেজোয়ান কাউসারের ১৭ বছর সাজা হতে পারে তাইলে বারাক ওবামা কে হত্যা করার ইচ্ছা পোষণ করার জন্য তো ঐ শ্বেতাঙ্গ যুবকের ৩৪ বছর জেল হওয়া উচিত। নাকি আমরা ধরে নিব যে FBI এর স্টিং অপারেশন শুধুমাত্র কিছু সহজ সরল বাংলাদেশী মুসলিম যুবককে তথাকথিত জিহাদ নামক বিভ্রান্তির জালে জড়িয়ে তারপর সেই মুসলিম যুবকের মাধ্যমে তার পুরা বাংলাদেশটার গায়ে পাকিস্তান আফগানিস্তানের ন্যায় একটা জংগী রাষ্ট্রের তকমা জুড়ে দেয়ার একটা কুটিল প্রচেষ্টা। আমেরিকার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে তো পাকিস্তান আফগানিস্তানের অনেক ছেলে পড়াশুনা করে। কই কখনো তো শুনলাম না যে FBI এর স্টিং অপারেশন এর মাধ্যমে কোন পাকিস্তান/আফগানিস্তানের ছেলেকে ধরা হইছে। বাংলাদেশকে সারা পৃথিবী একটা জঙ্গীমুক্ত অসাম্প্রদায়িক মুসলিম দেশ হিসাবেই জানে। FBI এর স্টিং অপারেশন এর মাধ্যমে মনে হয় অতিশীঘ্র আমাদের দেশ একটা জংগী রাষ্ট্রের তকমা পাবে।
এখন আমাদের কে বুঝতে হবে জিহাদ বা ক্বিতাল পৃথিবীর কোন কোন দেশে হতে পারে। ইসলামী শরীয়তে রাষ্ট্র ৩ ভাগে বিভক্ত। দারুল ইসলাম, দারুল কুফর, দারুল হারব। দারুল ইসলাম মানে খিলাফত রাষ্ট্র যেটা বর্তমান পৃথিবীর কোন দেশেই নাই। দারুল কুফর মানে দেশের জনগন মুসলমান কিন্তু দেশটি চলে কুফরী আক্বীদা দ্বারা যেমন গনতন্ত্র সমাজতন্ত্র রাজতন্ত্র ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা। আর দারুল হারব বা যুদ্ধের দেশ বলতে বুঝায় যেইখানে শত্রু সৈন্যের উপস্থিতি আছে বা মুসলমানরারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে যেমন আফগানিস্তান কাশ্মীর ফিলিস্তিন চেচনিয়া। হ্যা ঐসব দেশে জিহাদ বা ক্বিতাল করা বৈধ কিন্তু ঐসব দেশ ছাড়া আর কোন দেশেই সেটা আমেরিকাই হোক বা ইংল্যান্ড বা ফ্রান্স হোক সেইসব দেশে জিহাদের নামে কখনোই ঐসব দেশের নিরীহ বেসামরিক লোকদের কে হত্যা করা ইসলামী শরীয়তে পুরাপুরী হারাম। আল ক্বায়েদা মূলত ইমাম ইবনে তাইয়িমার একটা ফতোয়া ব্যবহার করে যেই ফতোয়াটা ইমাম ইবনে তাইয়িমা তাতার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুসলমানদের জিহাদের সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু ইমাম ইবনে তাইয়িমার এই ফতোয়াটা দারুল হারব ছাড়া আর অন্য কোন দেশে প্রযোজ্য হবে না। আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন না যে আল ক্বায়েদা শুধু আরবদের সংগঠন। অনারবদের আল ক্বায়েদায় কোন প্রবেশাধিকার নাই। আর এখন আরব বসন্ত শুরু হইছে আরব বিশ্বে। আল ক্বায়েদার উচিত এখন আফগানিস্তান ছেড়ে আফগান লোকদেরকে মুক্তি দিয়ে আরব বিশ্বে চলে যাওয়া।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



