- আমি তোকে ভালোবাসি। সিক্সটি সেকেন্ডের জন্য আমার গার্লফ্রেন্ড হবি?
- গার্লফ্রেন্ড কি চাইলেই হওয়া যায় বাবু?
- সময় ফুরিয়ে যাইতেছে। হবি কিনা বল। জলদি বল!
- হবো। এক কোটি বার হবো! আই লাভ ইউ।
- হাত ধর। চল ফ্লাইওভারের উপ্রে থেকে লাফ মারি।
- কি !
- হু। এই জীবনে তো আমার হইলি না, চল একসাথে মইরা যাই। হাহাহাহ।
- তুমি পাগল!
- হ কথা সত্য। মনে রাখিস, এই জন্যই প্রেমে পড়ে গেছিলি তুই।
- তুমি এমন ক্যান?
- তোকে চুমু খাবার জন্য আমি মইরা যাইতেছি। শেষ একবার চুমু খেতে দিবি?
- উঁহু।
- তুই কিন্তু এই মুহূর্তে আমার গার্লফ্রেন্ড। তোর উপ্রে আমার হক আছে, সেই হক নষ্ট করলে কিন্তু পরকালে ঠ্যাকা থাকবি।
- চুমু খেলে আমি যাইতে পারবো না, তুমি জানো। আমাকে শক্ত থাকতে দাও। প্লিজ।
- হুম। আমি দাবী ছাড়বো না। কইয়া দিলাম।
- তোমার সিক্সটি সেকেন্ড শেষ। এখন আড়াই মিনিট হয়ে গেছে।
- তুমি একটা ফাজিল মেয়ে ! ব্রেকাপ হচ্ছে আমাদের, আর তুমি ঘড়ি দেখতেসো !
- আমাকে যাইতে দাও। তুমি ভালো থাকো।
- এই ব্রেকাপটা ভালো না? তুমি ভাবছিলা তোমার মতো ভেউ ভেউ করে কান্তে কান্তে আমি ব্রেকাপ করবো? নট মাই স্টাইল। হাহাহা।
- তুমি কি এখনও একটু সিরিয়াস হবা না? আমি চলে যাইতেছি।
- আমি অনেক সিরিয়াস। হু।
- আমার বাবুটার খেয়াল রাইখো। প্লিজ।
- ভাদাইম্যা ছেলেরা নিজের খেয়াল রাখে না। তুই আমার বাবুনিরে দেইখা রাখবি। ওরে আমি ভালোবাসি।
- রাখবো।
- যাও এখন।
ছেলেটা খুব স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটার হাত ছেড়ে দিলো। মেয়েটা শাদা পঙ্খী স্কুটিতে উঠলো, হেলমেট মাথায় পড়ে একবার পেছনে তাকালো। ছেলেটা সৌম্য, শান্ত মুখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, চশমার কাঁচ ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। এখনও বাতাসে মেয়েটার গায়ের উথালপাথাল ঘ্রাণ।
শাদা স্কুটিটা ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে, আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভিড়ের মাঝে আলাদা করে চেনা যাবে না। মেয়েটার লালচে চুল, গলার সবুজ স্কার্ফ বাতাসে উড়ছে। ছেলেটা তাকিয়েই আছে। ছেলেটার আসল নাম বাবু নয়, মেয়েটাকেও কেউ বাবুনি নামে চেনে না। তাতে অবশ্য পাঠকের খুব বেশি কিছু আসে যায় না।
"আমরা দুজন কাল যেখানেই থাকি,
গল্পটাকে রাখিস বুকে তুলে।
এই আমাদের একটা যে গান ছিলো,
কাউকে সেটা দিস নে যেনো ভুলে।"