
ব্লগ, ব্লগিং এবং ফাতরামি
লিং থেকে পোষ্ট পড়ে তারপর আপুর মন্তব্য পড়ুন। আর আপুর সন্তান তুল্য ব্লগটিকে আসুন আমরা সবাই ভালোবাসতে শিখি।
জানা বলেছেন: খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্টের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্গতা জানবেন ভাইয়া।
অনেকদিন ধরেই আমি নানান বিপদে থাকায় এখানে মাঝেসাঝে চোখ বুলিয়ে গেলেও কখনও দুলাইন লেখার শক্তি পাইনি! বলতে গেলে দীর্ঘদিন ধরে কঠিন অসুস্থতায় কাটছে আমার। আমার এই কষ্ট পরিবারের সদস্যদেরতো বটেই, আমার প্রিয় ব্লগারদেরও সাংঘাতিকভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, জানা হারিয়ে গেছে! আল্লাহর রহমতে তা ঘটেনি। সন্তান, স্বামী, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি সাধারণ দায়িত্বটুকু পালন করার শক্তি বা সামর্থ আল্লাহ্ অন্তত বহাল রেখেছেন। সাথে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এবং পরিবারের প্রিয়জনদের ভালবাসা এবং যত্নে পরিস্থিতি ভালোর দিকেই যাচ্ছে বলে বিশ্বাস করি।
বিগত প্রায় ছ'টা বছরে জীবনের ওপর দিয়ে যেন 'টর্ণেডো' বয়ে গেল! প্রথম তিনটে বছরের কষ্টের ভার কোনমতে সয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। মনের জোরে, স্বামী ও পরিবারের বিপুল ভালবাসায় এবং ব্যক্তিগতভাবে শক্তিশালী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের( আল্লাহ্র কাছে কৃতজ্গতা অশেষ) কল্যাণে সোজা হয়ে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই অপ্রত্যাশিত এবং অসহনীয় কিছু বিষয় ঘটে যায় পরিবারে, যা আমাকে অন্য মানুষে পরিণত করেছে। আমি পরিবারের খুব কাছের কিছু মানুষের সাথে নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া প্রায় কারোর সাথেই যোগাযোগ করতে পারিনি/পারছি না বিগত তিনটে বছর!
২০১৯ এর ডিসেম্বরে আমি ১৭ বছর বয়সী ফুটফুটে সুদর্শন, উজ্জ্বল-উচ্ছ্ল, বুদ্ধিদীপ্ত, সঙ্গীত-নাট্যকলা সহ হাজারও গুনে গুনান্বিত নিজের সন্তানসম ভাগ্নেকে (আমার বোনের বাচ্চা) হারাই! আমার মেয়ের জন্মের প্রায় দেড় বছর আগে ওর জন্ম এবং সেই হিসেবে আমি প্রথমে ওরই 'মা' হই। আমাদের সম্পর্কটাও একেবারেই মা-ছেলের মতই! হারিয়ে গেল চীরদিনের জন্যে!! অন্ধকারে ছেয়ে গেলো ওর মা-বাবা এবং একমাত্র ছোট্ট বোনটার জীবন!! আর আমি....!
২০২০-২১ শে করোনাসহ নানান অসুস্থতায় পরিবারের তিন তিনটে খুব আপন মানুষ অনেক কম বয়সে চলে গেলেন পরপর!
২০২১ এর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বর পুরো তিনটে মাস ডাক্তার, হাসপাতাল ছুটোছুটি করে নভেম্বরের শেষে 'মা' আমাদের চলে গেলেন! মা ছাড়া পৃথিবী এত.....!
২০২২ এর ফেব্রুয়ারীতে চলে গেলেন প্রিয় শ্বাশুড়ী মা! এতদিনের বৈবাহিক জীবনে একদম নিজের 'মায়ের' মত করেই আদরে আহ্লাদে, মিষ্টি সম্পর্কে আগলে রাখা মানুষটাও চলে গেলেন টুপ করে! আমার সবকিছু কেমন যেন ওলোট-পালোট হয়ে গেল!
এতকিছুর পরেও পরিবারের সহযোগিতা আর ভালবাসায় একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছি। নিজেকে মানষিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ্ পারবো।
ন্যায়-অন্যায়, ভুল-ভ্রান্তি, সুন্দর-অসুন্দর সবকিছু নিয়েই বা সয়েই মাতৃভাষায় প্রতিষ্ঠিত এই প্ল্যাটফর্মটা (সামহোয়্যার ইন ব্লগ) এখনও আছে। সুস্থ ও সুরুচীপূর্ণ চিন্তার প্রকাশ, মাতৃভাষা এবং নিজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ও ইতিহাসের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে বাঙালী মাত্রই এই প্ল্যাটফর্মে বিচরণ করার পূর্ণ অধিকার রাখেন। একইভাবে যে কোন বিষয়ে সুস্থ আলোচনা-সামালোচনা, মানবিক বাক-বিতর্ক, হাস্য-রসিকতা, খুনসুটি ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে এখানে পূর্ণ আনন্দে মাতৃভাষা চর্চার অধিকার এবং সুযোগ আমাদের সবারই সমান।
বিনীতভাবে সবার জন্যেই সমানভাবে বলতে চাই, যে কোন ধরণের 'অশ্লীলতা' বা অশোভন আচরণ মানুষকে কেবল ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র করে তোলে এবং ব্যক্তির সাথে সাথে তার নির্দোষ-নিষ্কলুষ মা-বাবা এবং পরিবারের পরিচয়টিও মর্মান্তিকভাবে কলুষিত ও চুড়ান্ত অপদস্ত করে বৈ আর কোন ইতিবাচক কিছু ঘটেনা। এটা যে শুধু আমি বলছি বা এই পোস্টের লেখক বলেছেন তা তো নয়। বিষয়টি সবাই জানেন, সবাই বোঝেন।
মা-বাবা, মাতৃভাষা আর স্বদেশকে অপমান করে কোন মানুষ কখনও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেনা, পারবেনা নিশ্চিত। খুব মর্মান্তিক প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রকৃতির ভুল 'মানুষ'গুলো কিভাবে স্বাভাবিক পরিবার/সন্তান তৈরী করবেন এবং কিভাবে সন্তানদের কাছে একজন সম্মানীয় মা-বাবা বা অভিভাবক হয়ে উঠবেন?? তবে, কিভাবে একটা সভ্য ও সুস্থ্য মনুষ্যসমাজ আমরা পাবো??
কথাগুলো দয়া করে বিবেচনায় রাখুন। আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে সঠিক পথেই হাঁটি, সুস্থ-সুন্দর এবং যোগ্য পরিবার ও সমাজ তৈরীতে অংশ গর্বিত অংশীদার হই।
সবাইকে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা এবং শান্তি কামান করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




