
অনেক চিন্তা, অনেক গবেষণা, অনেক পুস্তক পাঠ, অনেক বিবেক-বিবেচনা ইত্যাদির ফল অবিশ্বাস। আর বাবা-মা বিশ্বাস করে বলে লোকেরা বিনা কষ্টে বিশ্বাস করে। আমাদের বাবা-মা আমাদেরকে বলেছেন, অবিশ্বাসী তোমার বিশ্বাসের বিপক্ষে অনেক দলিল দিবে, তখন তুমি বলবে বিনা দলিলে আল্লাহ এক। সাবধান অবিশ্বাসীর কথায় কান দিবে না, তাহলে তুমিও তারমত অবিশ্বাসী হয়ে যাবে। সেজন্য অবিশ্বাসীগণ বিশ্বাসসীদেরকে বলে অন্ধবিশ্বাসী।
অবিশ্বাসীদের পথপ্রদর্শক হলেন- বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সাহিত্যিক, শিল্পি, আউল-বাউল এসব গুণিজন। আর বিশ্বাসীদেরকে চালায়- সাধু বাবা, পীর বাবা, পাদ্রীবাবা নামক সুবিধাভোগীদের দল। তথাপি বিশ্বাসীদের পাল্লাভারী- এখানেই অবিশ্বাসীদের কষ্ট। আমি বিশ্বাসীদের পক্ষে কিছু বললেই তারা আমার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কারণ এতে তাদের অবিশ্বাসের অনিভূতিতে আঘাত লাগে। কারো বিশ্বাসে আঘাত লাগলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার মামলা হয়। কারো অবিশ্বাসে আঘাত লাগলে অবিশ্বাসের অনিভূতিতে আঘাত লাগার মামলা হয় না। এটাই বড় সামাজিক বৈসাম্য।
একবার এক অফিসার বললেন, আমাদের কত ভাগ্যভালো যে আমাদের বাবা-মা মুসলিম। সেজন্য আমরাও মুসলিম হতে পেরেছি। ইত্যাকার বিবিধ কারণে অবিশ্বাসীরা বলে বিশ্বাসের আসলে কোন ভিত্তি নাই। অবিশ্বাসের তবে ভিত্তি কি?
শিক্ষক জিজ্ঞাস করলেন, পৃথিবী গোলাকার তুমি ক্যামনে বুঝলে? ছাত্র বলল, প্রথম পরীক্ষায় আমি লিখলাম পৃথিবী চার কোনা পাইলাম একটা শূন্য। দ্বিতীয় পরীক্ষায় লিখলাম পৃথিবী তিন কোন, পাইলাম একটা শূন্য। যেহেতু পৃথিবী চার কোনা নয়, যেহেতু পৃথিবী তিন কোন নয়, সেহেতু পৃথিবী গোলাকার- স্যার এভাবে বুঝলাম পৃথিবী গোলাকার। অবিশ্বাসী দেখলো, সে আল্লাহকে দেখেনি, তাঁর কথা শুনেনি, আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস করায় তাঁর কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নেই।সেজন্য সে আল্লাহকে অবিশ্বাস করেছে। শেষ বিচারে অবিশ্বাসী সেটাই বলবে। সে বলবে, আপনাকে দেখিনি, আপনার কথা শুনিনি, আপনাকে অবিশ্বাস করায় আপনার কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখিনি, সেজন্যই তো আপনাকে বিশ্বাস করিনি। আল্লাহ বলবেন, যারা বিশ্বাস করেছে- তারা কি আমাকে দেখেছে? তারা কি আমার কথা শুনেছে? আর বিশ্বাস করায় তারা কি আমার কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখেছে? তারা তবে বিশ্বাস করলো ক্যামনে? অবিশ্বাসী বলবে, তাদের বাবা-মা বিশ্বাস করেছে বলে তারাও বিশ্বাস করেছে। আর তোমার বাবা-মা বিশ্বাস করেনি বিধায় তুমিও বিশ্বাস করোনি? ঠিক আছে, তোমার বাবা-যেখানে আছেন তুমিও সেখানে চলে যাও বলে আল্লাহ অবিশ্বাসীকে টুটি চেপে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। আর যদি বলে তার বাবা-মা বিশ্বাসী ছিলো, কিন্তু সে অবিশ্বাসী হয়েছে তবে বাবা-মার অবধ্য হিসাবে সে জাহান্নামে যাবে। তারমানে অবিশ্বাসীর জাহান্নামের রেহাই নেই।
অবিশ্বাসীদের কেউ কেউ তাদের অবিশ্বাসের মহাসত্যের দাওয়াত দিতে আমার সাথে অনেক বাতচিত করেছে। আমি বললাম, মানুষ তাহলে কোথা থেকে আসলো? তারা বললো, মানুষ বিবর্তনের মাধ্যমে হয়েছে। আমি বললাম, বিবর্তনের মাধ্যমে আল্লাহ হতে সমস্যা কি? তাহলে আল্লাহ নাই কেন বল? আরেক দল বলে, সব কিছু এমনি এমনি হয়েছে। আমি বললাম, এমনি এমনি আল্লাহ হতে অসুবিধা কোথায়? তাহলে আল্লাহ নাই কিভাবে বলা যায়? যেভাবেই হোক, আল্লাহ আছেন, মহাজগতের শৃঙ্খলায় সেটা বোধগম্য। আর মোহাম্মদ (সা.) তো স্বীকৃত সত্যবাদী, সেজন্য ২৫% মানুষ তাঁর কথায় বিশ্বাসী হয়েছে।
অবিশ্বাসীরা মোহাম্মদের (সা.) অনেক দোষের কথা বলে, কিন্তু তাতে এটা প্রমাণ হয় না যে তিনি নবী নন। অবিশ্বাসীরা আল্লাহরও অনেক দোষের কথা বলে, তাহলে এক দোষীর নবি আরেক দোষি হলে ক্ষতি কি? তারমানে অবিশ্বাসীরা বহু কষ্টে যে অবিশ্বাস অর্জন করে সেটা আসলে একেবারেই ভিত্তিহীন।
স্যার বললেন, এখান থেকে দিল্লির দূরত্ব এক হাজার মাইল হলে আমার বয়স কত? ছাত্র বলল, স্যার পঞ্চাশ বছর। স্যার বললেন, কিভাবে বললে? ছাত্র বলল, আমাদের এলাকায় এক পুরা পাগল আছে তার বয়স একশ বছর। আপনি যেতেু আধ পাগল সেহেতু আপনার বয়স পঞ্চাশ বছর। তারা আল্লাহ ও নবির (সা.) কিছু দোষের কথা বলে বলছে, আল্লাহ নাই। নবি আল্লাহর নবি নন? দোষ থাকলে আল্লাহ দোষী হিসাবে বিদ্যমাণ। কারো দোষ থাকলে সে নাই এটা কেমন হিসাব? আর দোষ থাকলে নবি না হয় ক্যামনে? দোষী লোককেই যদি নবি বানানো হয় তাহলে কি করার আছে?
অবিশ্বাসীর অবিশ্বাস অদ্যাবধি আমার বোধগম্য হয়নি। কিন্তু বিশ্বাসীর বিশ্বাস একবারেই সহজ বোধ্য বিধায় আমি বিশ্বাসী। আল্লাহও বলেছেন বিশ্বাস অনেক সহজ। অবিশ্বাসী অনেক কষ্ট করে অনেক কষ্টের স্থান জাহান্নামে গিয়ে অনন্ত কাল কষ্ট পেতে থাকবে। তাদের কষ্টের ফল হবে অন্তহীন কষ্ট। আর বিশ্বাসী সহজে বিশ্বাস করে সহজ-সরল লোকদের আবাসস্থল জান্নাতে গিয়ে অনন্তকাল অন্তহীন সুখভোগ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



