
ইসরাইলী জাতির রাষ্ট্র ছিলো না। আমালিকা জাতিকে পরাজিত করে তারা প্রথম তাদের রাষ্ট্র দখল করে ছিলো। তাদের সেই রাষ্ট্র একদা আরবরা দখল করে ফিলিস্তিন বা প্যালেষ্টাইন রাষ্ট্র গঠন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্যালেষ্টাইন পরাজিত হলে মিত্রশক্তি সেখানে ইসরায়িলীদেরকে আমদানী করে। তারপর ইসরাইলীরা প্যালেষ্টাইন বা ফিলিস্তিন দখল করে ইসরায়েলী রাষ্ট্র গঠন করে।তারপর থেকে ফিলিস্তিনিরা তাদের হারানো রাষ্ট্র ফিরেপেতে লড়াই করছে। কিন্তু ইসরাইলীরা ফিলিস্তিনীদের থেকে কেড়ে নেওয়া রাষ্ট্র তাদেরকে ফেরত দিয়ে তারা যাবে কোথায়? সেজন্য তারা ফিলিস্তিনীদেরকে একবারে শেষ করে দিয়ে তাদের থেকে কেড়ে নেওয়া রাষ্ট্রে পাকাপোক্তভাবে থাকতে চায়। এদিকে ফিলিস্তিনীরাও যে কোন মূল্যে তাদের অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখতে চায়। তারাও তাদের রাষ্ট্র ফিরে পেতে হলে ইহুদী বিনাশের বিকল্প নেই। আর সেজন্যই ইসরাইল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হয়ে শেষ হচ্ছে না। কারণ এখনো তাদের উভয় জাতির অস্তিত্ব টিকে আছে।
ইসরাইলের শত্রু শুধু ফিলিস্তিনিরা নয়। মুসলিম জাতির একটা বিরাট অংশ তাদের শত্রু। হাদিসে আছে ফিলিস্তিনের বাইরের মুসলিমরা ইমাম মাহদীর (আ.) নেতৃত্বে ইহুদী বিনাশ করবে। তারমানে ফিলিস্তিনীদেরকে বিনাশ করেই ইসরাইলী ইহুদীজাতি রক্ষা পাচ্ছে না। তারপরও তাদেরকে শতকোটি মুসলিম শত্রুর অপেক্ষায় থাকতে হবে।
মুসলিম জাতি কারো দয়ায় পৃথিবীতে আছে ঘটনা এমন নয়। তারা এখন বিশ্ব বিস্তৃত একটা জাতি। তাদের রাষ্ট্র আছে সাতান্নটি। অথচ তিনটি রাষ্ট্র থাকা হিন্দু যখন মুসলিম জাতির বিনাশের কথা বলে তখন অবাক হতে হয়। অথচ হিন্দুদের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রটি মুসলিমরা শাসন করেছে শত শত বছর।
ইসলাম ধর্মের শুরুতে যে মুসলিম জাতি যুদ্ধে জড়িয়েছে এখনো তারা সেই যুদ্ধের মধ্যেই আছে। সুতরাং যুদ্ধ হচ্ছে মুসলিম জাতির নিত্যনৈর্মিত্তিক ঘটনা। সেজন্য হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে আমি উত্তেজিত হইনি। কারণ যে ঘটনা নিতান্ত চলমান ঘটনা তা’ নিয়ে আসলে উত্তেজিত হওয়ার মত কিছু নাই। আর যুদ্ধে মানুষ মরছে এ নিয়েও আমি ভাবি না। কারণ যুদ্ধ হলে মানুষ মরেই।সেটা ইউক্রেনেও মরে, ফিলিস্তিনেও মরে। তবে আমি চাই যুদ্ধ না হোক। কিন্তু যুদ্ধ নিজে এসে গায়ের উপর পড়লে না করে কি উপায় থাকে?
ইসরায়েলের প্রতি আমার নসিহত হলো, ফিলিস্তিনীরা শেষ হলেও তোমাদের যুদ্ধ শেষ হবে না। অন্য জাতির মুসলিমরা তারপর তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসবে।সুতরাং ফিলিস্তিনীদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে কিভাবে ভালো থাকা যায় তোমাদেরকে সেই পথ খুঁজতে হবে। তোমরা যদি ফিলিস্তিনীদের রাষ্ট্রের সবটা চাও তবে তোমাদেরকে সেই রাষ্ট্রের সবটাই হারাতে হবে। তোমাদের সাময়িক সাফল্যে উত্তেজিত হয়ে লাভ নাই। কারণ মুসলিম ফিরে ফিরে আসে। মোহাম্মদ ঘুরী তরাইনের প্রথম যুদ্ধে হেরে, দ্বিতীয় যুদ্ধ জিতে শত শত বছরের জন্য ভারতে মুসলিম শাসন পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করেছে। তারপর বৃটিশ ভারত নিয়ে ছেড়ে গেলে এখানে মুসলিমরা দু’টি রাষ্ট্র পেয়েছে। এখন ভারত এ দু’টি রাষ্ট্র ফিরে পেতে চিন্তা করছে। এ দু’টি রাষ্ট্র নিতে গিয়ে তাদের নিজের রাষ্ট্রটাই হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং বেশী লোভ করা ভালো নয়। বেশী লোভ কারো জন্যই মঙ্গল জনক নয়। তারচেয়ে কম লোভ করে শান্তিতে থাকা ভালো। সেটা ইসরাইলীদের জন্য ভালো এবং ফিলিস্তিনীদের জন্যও ভালো। শান্তির জন্য দুই রাষ্ট্র মানো এবং শান্তিতে থাক। নতুবা যুদ্ধ চলতেই থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




