
সরকার পক্ষ এবং এর বিরোধীপক্ষ সম্মত যে তন্ত্র সেটাই গণতন্ত্র। কারণ গণ তথা জনগণ থেকে সরকার পক্ষ এবং এর বিরোধীপক্ষের কোন পক্ষকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। উক্ত উভয় পক্ষের যে কোন এক পক্ষকে বাদ দিয়ে যে তন্ত্র সেটা গণতন্ত্র নয়, বরং সেটা হলো ষড়যন্ত্র। গণতন্ত্রের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতার বৈধ অধিকার পাওয়া যায়। আর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশে যে ক্ষমতা দখল করা হয় তা’ মূলত অবৈধ ক্ষমতা।
গতকাল দেশে নির্বাচনের একটা তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সরকার পক্ষ আনন্দ মিছিল করেছে এবং বিরোধী পক্ষের অধিকাংশ তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। যে পক্ষের কারণেই হোক এটা ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রের দায় বিরোধী পক্ষের হলে জনগণ ব্যাপক হারে ভোট দিয়ে বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পারে। ষড়যন্ত্রের দায় সরকার পক্ষের হলে জনগণ ব্যাপক হারে ভোট না দিয়ে সরকার পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পারে। তবে আমাদের দেশে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে না গেলেও ভোট হয় এবং তখন নির্বাচন কমিশন বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। এসব হলো গণতন্ত্রের সাথে তামাসা। একটা অনুন্নত দেশ হিসাবে আমাদের দেশে ষড়যন্ত্র ও তামাশা হয়।
আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে অনেকে ঘণতন্ত্র বলেন। কারণ ঘনবস্তুর মত এর ছয়টি তল আছে। এতে অতল, বিতল, উতল, চিতল, বোতল ও শীতল নামক ছয়টি তল আছে। সেজন্য কখনই এটি সমতল নয়। অতল মানে গভীর। সেজন্য জনগণ এর নাগাল না পেয়ে এতে হাবুডুবু খায়। বিতল মানে বিবিধ রকমের তল। সেজন্য জনগণ এটা চিনে উঠতে পারে না। এটা জনগণের চির অচেনা থেকে যায়। উতল মানে উতলা তল। জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো- এর বিরোধী পক্ষের উতলা শ্লোগানে জনগণ উতলা হয়ে পড়ে। চিতল মানে চিৎ হয়ে পড়া তল। এতে অনেক সময় সরকার অথবা বিরোধী পক্ষ চিৎ হয়ে পড়ে জনগণের হাসির কারণ হয়। এতে উভয় পক্ষ এমন সব কান্ড করে যেন মনে হয় তারা বোতলের লাল পানি পান করে। এতে শীতল তথা ঠান্ডা লড়াই চলতেই থাকে। সংগত কারণে এতে লেভেল প্লেইং হয় না। সুতরাং নিতান্ত বাধ্য হয়ে লোকেরা একে ঘণতন্ত্র বলে।
রানু বলে সে রাজনীতি বুঝে না। সেজন্য সে বলে আমি রাজনীতি বিষয়ে ভালো লেখি না। আমার প্রতি তার মন্তব্য থেকে বোধগম্য সে আসলেই রাজনীতি বিষয়ে বড় অবোধ। সে অবোধ, কারণ সে জানে রাজনীতি বিষয়ে লিখায় আমার হাত বাঁধা। কারণ আমি সরকারী চাকুরী করি। আমাকে লিখতে হয় ধরি মাছ না ছুঁই পানি ক্যাটাগরিতে। বিরোধী পক্ষের একজন বলল, আপনি তো সরকার পক্ষ। আমি বললাম সেজন্য আমি বলি, জয় বাংলা। তোমরা ক্ষমতায় আসলে না হয় ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলব। আমার বাপও এমনই করেছে। আমরা তোতা পাখির মত। সরকার যা বলে আমরা তাই বলি। সরকার যা করতে বলে আমরা সেটাই করি। বল বীর, বল চির উন্নত মম শীর- আমরা এমন না। এমন হলে কি আর চাকুরী করি? এমন হলে তো চাকুরী ছেড়ে মনিবি করতাম। গণতন্ত্রের হিসাবে আমাদেরও বাক স্বাধীনতা থাকার দরকার ছিলো। তখন হয়ত আমিও মনখুলে রাজনীতি বিষয়ে লিখতে পারতাম। আর তখন হয়ত রানুর কাছ থেকে একটা বাহবাও পেয়ে যেতাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



