
সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৪৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৪। নিশ্চয়ই আমরা তাওরাত অবতীর্ণ করেছিলাম; তাতে ছিল পথনির্দেশ ও আলো। নবিগণ, যারা আল্লাহর অনুগত ছিল তারা ইয়াহুদীদিগকে তদনুসারে বিধান দিত, আরো বিধান দিত রব্বানীগণ, এবং বিদ্বানগণ। কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল। আর তারা ছিল উহার সাক্ষী।সুতরাং মানুষকে ভয় করবে না। আমাকেই ভয় কর। আর আমার আয়াতসমূহ তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করবে না। আল্লাহ যা নাজিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা হুকুম প্রদান করে না তারাই কাফির।
সূরাঃ ২ বাকারা, ২৮৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮৬। আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। সে মন্দ যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। হে আমাদের প্রতিপালক যদি আমরা ভুলে যাই অথবা আমাদের ত্রুটি হয় তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না।হে আমাদের প্রতিপালক এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।আমাদের পাপ মোছন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন।
সূরাঃ ২, বাকারা। ১০৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৬। আমরা কোন আয়াত মানসুখ বা রহিত করলে অথবা ভুলে যেতে দিলে তা’হতে উত্তম বা তার সমতুল্য কোন আয়াত আমরা প্রদান করে থাকি।তুমি কি জান না যে আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।
সূরাঃ ২৪ নূর, ৩০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩০। মুমিনদেরকে বল, তারা যেন দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাযত করে। এত তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে। তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ অবহিত।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।
সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ১০ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০। মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভাইদের মাঝে ইসলাহ (শান্তি স্থাপন) কর, আর আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।
* আল্লাহ যা নাজিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা হুকুম প্রদান করে না তারাই কাফির।কিন্তু ভুল-ত্রুটির ক্ষেত্রে আল্লাহর ক্ষমার বিধান রয়েছে।আর ক্ষেত্রে বিশেষ কোন আয়াতের হুকুম মানসুখ হয়।যেমন মুমিন সার্জেন্টের দৃষ্টি তাঁর নারী পেশেন্টের প্রতি সংযত হলে তাঁর অপারেশন সাকসেসফুল নাও হতে পারে। সেজন্য এ ক্ষেত্রে সূরাঃ ২৪ নূর, ৩০ নং আয়াতের বিধান মানসুখ থাকবে। খারেজী মতে হযরত আলী কর্তৃক সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের বিধান প্রতিপালিত হয়নি বিধায় খারেজীরা তাঁকে সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৪৪ নং আয়াত অনুযায়ী কাফের ফতোয়া দিয়ে হত্যা করে ফেলে।অথচ সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ১০ নং আয়াত অনুযায়ী সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের বিধান মানসুখ ছিল। সুতরাং খারেজীদের হযরত আলীকে (রা.) কাফের ফতোয়া দেওয়া ও হত্যা করা সঠিক ছিল না। এভাবে খারিজিরা কঠিনভাবে ইসলাম পালন করতে গিয়ে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায় বা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায়।
সূরাঃ ২ বাকারা, ১৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৪৩। এইভাবে আমি তোমাদিগকে এক মধ্যমপন্থী উম্মতরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি।যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হতে পারেন।তুমি এ যাবত যে কিবলা অনুসরন করতেছিলে উহা আমরা এ এ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করে ছিলাম যাতে আমরা জানতে পারি কে রাসূলের অনুসরন করে আর কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেছেন তারা ছাড়া অন্যদের নিকট এটা (সৎপথ)কঠিন।তোমাদের ঈমানকে ব্যর্থ করে দিবেন আল্লাহ এমন নন।আল্লাহ মানুষদের প্রতি স্নেহশীল-দয়াদ্র।
সূরাঃ ৪ নিসার ১৪৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৪২। হে নবী! নিশ্চয়ই মুনাফেকরা আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করে এবং তিনিও তাদেরকে ঐ প্রতারণায় ফেলে দিচ্ছেন; এবং যখন তারা নামাজের জন্যে দন্ডায়মান হয় তখন মানুষদেরকে দেখাবার জন্যে আলস্যভরে দন্ডায়মান হয়ে থাকে এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে থাকে।
সূরা: ৪৫ জাছিয়া, ৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। এগুলি আল্লাহর আয়াত, যা আমি তোমার নিকট যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। সুতরাং আল্লাহর এবং তাঁর আয়াতের পরিবর্তে তারা কোন হাদিসে বিশ্বাস করবে?
সূরাঃ ১০১ কারিয়া, ৬ নং ও ৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। তখন যার পাল্লা ভারী হবে
৭। সেতো লাভ করবে সন্তোষ জনক জীবন।
সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। এভাবে রং বেরং- এর মানুষ, জন্তু ও আন’আম রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে (ওলামা) আলেমরাই তাঁকে ভয় করে।নিশ্চয়্ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল।
* মোনাফেরা ইসলাম পালন করে শিথিল ভাবে। ইসলাম বিষয়ে সন্দেহের কারণে তাদের অবস্থা এমন হয়। কিন্তু ইসলামে সন্দেহ থাকলে কেউ মুসলিম হয় না। ইহকালে এরা মুসলিম হিসাবে পরিচিত থাকলেও পরকালে তারা মুসলিম সাব্যস্ত হবে না। অপারগতায় ক্ষমার বিধান থাকায় এবং ক্ষেত্র বিষয় আল্লাহর বিধান মানসুখ হওয়ার বিষয় থাকায় মুমিন মধ্যম পন্থা অবলম্বন করে। এরা পরিস্থিতি অনুযায়ী মধ্যম পন্থায় ইসলাম পালন করে। ওমুক কথা সহিহ হাদিসে আছে এমন কথা একদল লোক বলে সেই কথায় অনেক বাড়াবাড়ি করে। আমি তাদেরকে বলি সেই কথা সহিহ হাদিস এটা কে বলেছে? তারা বলে ইমাম বোখারী (র.) বলেছেন। আমি বলি তাঁকে কে সহিহ বলেছে? তো যিনি নিজেই সহিহ নন তিনি কোন কথাকে সহিহ হাদিস বলেছেন তাতে কার কি? বাস্তব কথা হলো হাদিস সহিহ হলেও তা’ পালনযোগ্য হয় না যদি সেই হাদিসের বিধান মানসুখ হয়। আর হাদিস তো বটেই আয়াতও যদি মানসুখ হয় তবে তা পালন যোগ্য থাকে না। সুতরাং সহিহ হাদিস নিয়ে হৈ হাঙ্গামা সঠিক কাজ নয়। তাহলে ইসলাম পালন হবে কিভাবে? সাহাবায়ে কেরাম (রা.) রাসূলের (সা.) অনুসারী হবেন। সাহাবার (রা.) পরের লোকগণ সাহাবার (রা.) পাল্লাভারী জামায়াতের সাথে থাকবেন। তাঁদের পরের লোকগণ ওলামার পাল্লাভারী জামায়াতে সাথে থাকবেন। আয়াত এ পদ্ধতির গরমিল হলে মানসুখ হবে। হাদিস এ পদ্ধতির গরমিল হলে বাতিল হবে।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৪১০৫ নং হাদিসের (হত্যা বৈধ হওয়া সম্পর্কে অধ্যায়) অনুবাদ-
৪১০৫। হযরত শরীক ইবনে শিহাব (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার আকাঙ্খা ছিল যে, আমি রাসূলুল্লাহর (সা.) কোন সাহাবীর সাথে সাক্ষাত করবো এবং খারেজীদের ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাস করবো। ঘটনা চক্রে ঈদের দিন আবু বরযা আসলামীকে (রা.) তাঁর কয়েকজন সাথীর সাথে দেখলাম। আমি জিজ্ঞাস করলাম, আপনি কি খারেজীদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট কিছু শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি নিজের কানে শুনেছি, চক্ষে দেখেছি। একদা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট কিছু মাল আসে। তিনি তাঁর ডান দিকের এবং বাম দিকের লোকদের মধ্যে বন্টন করে দেন এবং যারা তাঁর পিছনে ছিল, তিনি তাদেরকে কিছুই দিলেন না। তখন তাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে মোহাম্মদ (সা.) আপনি ইনসাফের সাথে বন্টন করেননি। সে ছিল কাল রং বিশিষ্ট। মুড়ানো মাথা এবং সাদা কাপড় পরিহিত। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সা.) অতিশয় রাগান্বিত হয়ে বললেন, আল্লাহর শপথ! তোমরা কাউকে আমার পর আমার থেকে অধিক ইনসাফকারী দেখতে পাবে না। অতঃপর তিনি বললেন, শেষ যুগে এমন কিছু লোকের আবির্ভাব হবে, মনে হয় ঐ ব্যক্তি ঐ সকল লোকের মধ্যে হবে। তারা কোরআন তেলাওয়াত করবে, কিন্তু কোরআন তাদের গলার নীচে ঢুকবে না।তারা ইসলাম হতে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেমন তীর শিকার হতে বের হয়ে যায়। তাদের চিহ্ন হলো তাদের মাথা মুড়ানো থাকবে। তারা এভাবে প্রকাশ পেতে থাকবে এবং তাদের শেষ দলটি দাজ্জালের সাথে বের হবে। যদি তোমরা তাদের পাও, তবে তাদেরকে হত্যা করবে। কেননা, তারা সৃষ্টির মধ্যে সবচাইতে অধম।
* কোরআন পাঠ করে যারা কোরআন বুঝে না, তারা খারেজী হয়ে যায়। এদের একজন তো রাসূলের (সা.) ভুল ধরেছে। এদের একদল তো হযরত আলীকে (রা.) কাফের ফতোয়া দিয়ে হত্যা করে ফেলেছে। এখনো হাদিস-কোরআনের দোহাই দিয়ে এরা মুসলিমদের মাঝে ব্যাপক গোলযোগ সৃষ্টি করছে। অথচ কোরআন-হাদিস ক্ষেত্রে বিশেষ মানসুখ থাকে। সুতরাং ইসলামের সঠিক পথে থাকতে নিজে নিজে কোরআন হাদিস পালন না করে ওলামার পাল্লাভারী জামায়াতের অনুসরনে কোরআন হাদিস পালন করলে আর খারে খারেজী হতে হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


