somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিক কেন উন্নত হয়?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নাস্তিক কেন উন্নত হয়? এটা নাস্তিকের প্রশ্ন। কারণ তারা আল্লাহর কঠিন প্রতিপক্ষ। তারা আল্লাহকে মানুষের কল্পিত বিষয় বলে মনে করে। তাদের প্রশ্ন হলো যদি আল্লাহ থেকেই থাকেন তবে তিনি পৃথিবী নাস্তিক মুক্ত করছেন না কেন? তাদের প্রশ্নের সহজ জবাব হলো, আল্লাহ আর সবার মত নন।তিনি চটজলদি কোন কাজ করে পরে পস্তাতে বসেন না। তাঁর কাজে কোন ভুল নেই।

আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ অবাধ্য লোকদেরকে অবকাশে রেখেছেন।অবকাশ তিনি দিয়েছেন মহানুভবতার কারণে। এটা বিপথ ও বিপদ থেকে ফেরার সময়।অতীতে অনেকেই অবকাশ পেয়ে বিপথ থেকে পথে এসেছে। এখনো অনেকেই বিপথ থেকে পথে আসছে এবং ভবিষ্যতেও অনেকে বিপথ থেকে পথে আসবে। কাজেই অবকাশের বিষয় অবশ্যই সংগত। অনেকে হয়ত বলবে এক হাজারটা বিপথে থেকে একটা সুপথে আসলে লাভ কি? হ্যাঁ, আল্লাহ ঐ একটার জন্যই এক হাজারটাকে অবকাশ দিয়েছেন। আল্লাহ সে একজনের পথে ফিরার নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে চান। বাস্তবিক মহাবিপদ থেকে ফিরে মানুষ মহা আনন্দ প্রকাশ করে। সেই সাথে তারা প্রকাশ করে মহা কৃতজ্ঞতা। এতে আল্লাহ মহাখুশী হন।নিজের এ মহা খুশী থেকে তিনি বঞ্চিত হতে চান না। মূলত এটাই পৃথিবী নাস্তিক মুক্ত না করার কারণ। কারণ সেই সব নাস্তিক থেকে অনেকেই তাঁর পথে ফিরে আসে।

তবে নাস্তিকের উন্নতি কেন হয়? কারণ তারা উন্নতির জন্য প্রাণপন চেষ্টা করে। অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ তাদের কষ্টের ফল নষ্ট করেন না। প্রতিপক্ষ বলে নাস্তিকের উন্নতি ঠেঁকিয়ে দিলে কি লাভ হতো? তাতে কি তারা বিপথ থেকে পথে ফিরে আসতো? অনেকেতো বিপদে থেকেও বিপথেই থাকে।সংগত কারণে বেদরকারী বলে আল্লাহ নাস্তিকদের উন্নতি ঠেঁকিয়ে দেন না। কাজেই নাস্তিকের উন্নতি হয় সাধারণ নিয়মে। তারা উন্নতির চেষ্টা করে বলেই তাদের উন্নতি হয়। তাদের উন্নতি হওয়ার সাথে আল্লাহর থাকা বা না থাকার সম্পর্ক নেই। নাস্তিকের উন্নতি হওয়া সূত্রে আল্লাহর না থাকা প্রমাণ করা যায় না।

মুসলমানের অবনতি কেন হয়? মুসলমান উন্নতির চেষ্টাই যদি না করে তবে তাদের উন্নতি হবে কেমন করে? মুসলমানকে মহানবি (সা.) উন্নতির মধ্যে রেখে গেছেন। তাদেরকে বলেছেন মিলে মিশে থাকতে। নিজেদের মাঝে সমস্যা হলে সমাধান করে ফেলতে বলেছেন।কিন্তু তারা কঠিনভাবে নিজেদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন চেয়ে বসলো।যারা হজরত আলীকে (রা.) খলিফা হিসেবে কামনা করলো, তারা অযথা খলিফা ওসমানকে (রা.) হত্যা করে বসলো। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে, সিফফিনের যুদ্ধ, জঙ্গে জামালের যুদ্ধ, নাহারওয়ান্দের যুদ্ধ ও কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হলো এবং এর জের এখনো চলছে। এখনো তাদের মাথায় মিমাংসার চিন্তা নেই। তো এমন মুসলমানের উন্নতি কেমন করে হয়?

আমাদের দেশের রাজনীতিতে কি হয়? সবাই নিজেদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন চায় আর পরের ইচ্ছাকে সম্পূর্ণ দমিয়ে রাখতে চায়।কাকে ঠকিয়ে কে লাভবান হবে সব সময় এ চক্রান্ত চলতেই থাকে। এ কূচরিত্র সংশোধন না হলে মুসলমানের উন্নতি হয়ত হবে না। কারণ ঠকাঠকির ফলতো যুদ্ধ ও সংঘাতই হয়। কাজেই মুসলমানের যা প্রাপ্য সেটাই তারা পাচ্ছে। উন্নতির পথে না হেঁটে অবনতির পথে হাঁটলে আল্লাহ তাদেরকে উন্নতি দিবেন বলে মনে হয় না।

শুনলুম নাস্তিকদের রাষ্ট্র চীন জাপান সুইজারল্যান্ড সুইডেন ও নরওয়ে শান্তি উদ্যান হয়ে আছে। নাস্তিকরা বলে মুসলমান সেখানে যায় কেন? এর সহজ উত্তর একটু খানি শান্তি পাওয়ার জন্য। শান্তি যেখানে আছে যারা শান্তি চায় তারাতো সেখানে যাবেই। এর আর এমন কি কথা। এখন ওদের দেশে গেলেই কি নাস্তিক হতে হবে নাকি? কিন্তু নাস্তিক হয়ে মরনের পরে জাহান্নামে যাবে কে? নাস্তিকতার দাওয়াত দিতে হলে আগে এর সঠিকতার প্রমাণ দিতে হবে, নতুবা লোকেরা নাস্তিকতা গ্রহণ করবে কেন?

শুনলুম মুসলমানদের রাষ্ট্র পাকিস্তান আফগানিস্তান সিরিয়া ইরাক ও ইয়েমেন জাহান্নাম হয়ে আছে। নাস্তিকদের কথা হলো এর পরো মুসলমান ইসলাম ছেড়ে নাস্তিক হয় না কেন? কিন্তু মুসলমান ইসলাম ছেড়ে যাবে কেমন করে? মরার পর চিরস্থায়ী জাহান্নামে তবে যাবে কে? মুসলমানকে ইসলাম থেকে বের করতে হলে আগে ইসলাম সঠিক নয় এর প্রমাণ তাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারতে হবে। কিন্তু নাস্তিক ইসলামের বেঠিকতার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছে কতিপয় প্রশ্ন, তার মধ্যে একটি হলো নাস্তিক কেন উন্নত হয়? তাদের এমন আরো অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে, যে সব প্রশ্ন বাস্তবিক ইসলামের বেঠিকতার কোন প্রমাণ নয়।অবান্তর অযুক্তিকে যুক্তি মনে করে উপস্থাপন করার কারণে অনেকে তাদেরকে নেহায়েত বেকুব বলে মনে করে। এখন অসার যুক্তি উপস্থাপন করলে আর কিভাবেইবা তাদেরকে বুদ্ধিমান মনে করা যায়।

কেউ যদি বলে মুসলমানদের দেশগুলোকে আল্লাহ জান্নাতে পরিণত করছে না কেন? এর জবাবে বলা যায়, আল্লাহ মূলত কারো কাজের বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করেন, কারো কাজ করে দেওয়ার ঠিকাদারী করেন না। তো মুসলমানেরা নিজেদের দেশকে জান্নাতে পরিণত করার ব্যবস্থা না করলে আল্লাহ কেন গায়ে পড়ে তাদের দেশটা জান্নাত বানাতে যাবেন? আল্লাহ নিয়মের বাইরে কিছু করেন না। মুসলমান আল্লাহর পক্ষেরে লোক হলেও নিয়মের মধ্যে না আসার কারণে তারা অনেক সময় আল্লাহর মঙ্গল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। অনিয়মের মধ্যে থেকে কেউ বিপদগ্রস্থ্য হলে তাদের জন্য আর কি করার থাকে?

ক’দিন আগে একজন বলে উঠলো, মুসলমান হিংসুক। সে এটা কিভাবে বুঝলো? কারণ সে কয়েকটা মুসলমানকে দেখেছে যারা হিংসুক। তো কয়েকটা মুসলমান হিংসুক হলে কি সব মুসলমান হিংসুক হয়ে গেল? খুঁজলে মুসলমানের মাঝেও বহু উদারমনা খুঁজে পাওয়া যাবে। আর ইসলাম হিংসা শিখায় না। এখন ছাত্র যদি এমন মেধাহীন হয় যে যা শিখায় তা না শিখে উল্টাটা শিখে তাতে ইসলামের কি দোষ? তবে যারা মেধাবী তারা ইসলাম থেকে উদারতাই শিখে। এখন কতিপয় মুসলমান হিংসুটে হওয়াতে নাস্তিক হয়ে জাহান্নামে যাওয়ার বিষয়ে কি যুক্তি থাকতে পারে?

ইহকাল ও পরকাল মূলত দুই কাল। নাস্তিক এককালের উন্নতির চেষ্টা করছে সে কালের উন্নতি সে পাচ্ছে। আরেক কালের কথা সে স্বীকার করে না সে কালে তাদের যা হওয়ার হবে।অনুরূপ আস্তিক যে কালের কাজ করবে সে কালের উন্নতি তার হবে। যে কালের উন্নতির সে চেষ্টা করছে না সে কালের উন্নতি তার হবে না। এটা হলো প্রকৃত নিয়মের কথা। নিয়মের বাইরে কেউ অর্থহীন প্রশ্নের অবতারণা করলে তার সে প্রশ্নের জবাব দানের দায় কারো নেই।

বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।

প্রাথমিক কথা

ভিন্ন চিন্তা

নাস্তিক্যবাদ

আস্তিক্যবাদ

কোরআন অবশ্যই আল্লাহর বাণী

হজরত মোহাম্মদ (সা.) অবশ্যই আল্লাহর নবি

সব নবি কেন এক এলাকার?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×