গল্পটি বড় হওয়াতে ব্লগারদের অনুরুধে ক্রমান্নয়ে প্রকাশ করছি..
যারা প্রথম পর্বটি পড়েননি, প্লিজ পড়বেন। ধন্যবাদ
শোন ভাবী, তোমাকে এক পাগলের পাগলামী দেখাবো বলে নিতে এলাম। এক্ষনি চলো যাবে আর আসবে।
- কি যে বলোনা, তার কোন ঠিক নেই। আচচছা আগেতো বলো ঘটনাটা কি তার পর না হয় যাওয়া যাবে।
হঠাৎ তমাল পিঁজরের কাছে দাড়িয়ে চেচাতে থাকে; ও দুটোকে নামিয়ে দাও আমি খেলবো।
রেহানা নিজের হাতেই খাঁচাটি নামিয়ে দেয় ছেলের পাশে।
- আন্টি, তোমার এ দুটি পাখীর নিজের কোন ঘর বাড়ী নেই?
তমালের প্রশ্নে মিষ্টি হেসে জবাব দেয় অপলা.
- আছেতো নিশ্চয়।
- কোথায় তাহলে? ওদের ঘরবাড়ী গাছে গাছে পাতায় পাতায়, আর ওদের ওঠোন হলো আকাশে যেখানে ওরা খেলা করে।
- আচছা আকাশের ওপারে কি আছে ?
- আকাশ
- তার ওপারে ?
- আকাশ.
- আকাশ কতো বড় ।
- অসীম। যার কোন সীমা নেই।
- আর কি কি জিনিসের সীমা নেই?
- যেমন বাতাসের।
- আর কি ?
- আমিতো জানিনা সোনামনি, তোমার কেয়া আন্টি এলে তাকে জিগ্যেস করো, সে হয়তো বলতে পারবে। তার পর রেহানাকে উদ্দেশ্য করে অপলা বিড়বিড় করে প্রশ্ন কওে;
- তোমার কি মনে হয় রেহানা কি কি জিনিসের সীমা নেই ?
- আমারতো মনে হয় যে সব জিনিস ছোঁয়া যায়না সেসব এরই সীমা নেই যেমন ধরো দুঃখ অসীম, ভালবাসা অসীম।
- ওফ ভাবী. আপনিও কি তমালের মতো শিশু হয়ে গেলেন? অযাচিত প্রশ্ন যত্তোসব, ছাড়োনতো।
হেসে দেয় অপলা, তাইতো। চলো শুকনো চিড়া ভেজে রেখেছি পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর কড়া কড়ে শরিষার তৈল দিয়ে মেখে খাবো দুজনে।
- না ভাবী, আজ না, আজ চলুন যেকারনে এসেছি। তমাল থাক, এই দশ মিনিটের ব্যাপার।
নাছোরবাšদা রেহানা, একেবারে টেনে হিচড়ে অপলাকে সিড়ি দিয়ে নামায়।
দরজা খুলে দেয় নিরুপম,তারপর চক্ষু ছানাবড়া কড়ে অপ্রত্যাশিত ভাবে অপলাকে দেখে। স্মিত হেসে রেহানাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
- ওফ তুমি পারোও বটে।
অপলা একবার রেহানার দিকে একবার নিরুপমের দিকে নিঃশব্দে তাকায়। সপ্নের ছোঁয়ায় রাংগিয়েছে দৃষ্টি ওদের স¡র্নালী বর্নমালায় লিখেছে প্রেমের উপখ্যান বুকের মানচিত্রে।
ছোট্র একটি ঘর মাত্র। দামী আসবাব বলতে ঘরের কোনে রাখা কালো পাথরের একটি হরিন শাবকের ষ্ট্যাচু। সামনে তাকিয়ে দেবদারু বৃক্ষের মত স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে অপলা। সম¯ত ঘরের দেয়ালে কাঁচা রজনী গন্ধা ও গোলাপের নিখুত কারোকাজ। ফুলদানীতে রাখা রক্তবর্ন গোলাপের মাঝে একটি সবুজ কাঠালচাঁপা, দরজার সামনে পায়ের কাছে বেলীফুল ভরা একটি ডালি। সবকিছু মিলিয়ে এক নেশা ধরা মায়াপুরী। অপলাকে নাড়া দেয় রেহানা তারপর জোগাšতরি আলোর জ্যোতি মুখে এনে বলে;
- ঘুম থেকে জেগে পাশের রুম থেকে এসে দেখি----- এই----। আজ আমার জনম দিন ছিলো।
উদাসী নক্ষত্রের মত মৌন অপলা বিড়বিড় করে বলে; আহারে কি নির্মল সপ্নযাপন। তারপর রেহানার কাধে হাত রেখে অপলা বলে,
- হাজার বছর বেঁচে থাকো।
নিজ ঘরের কথা মনে হতেই দ্রুত পায়ে ঘরে আসে অপলা। সাথে সাথে রেহানাও। দরজা খুলে অপলা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে, শুন্য খাচাঁ পড়ে আছে, তমাল সারা ঘরময় মুনিয়া দুটির পিছু পিছু দৌড়াচেছ ধরার জন্য। দরজা খোলা পেয়ে ফুরুৎ করে পাখী দুটি বাইরে বেরিয়ে যায়। রেহানা অপলার হাত ধরে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে আমি খুবই দুঃখিত ভাবী, আগে জানলে----। রাগে ছেলেকে মারতে মারতে ঘরে নিয়ে যায়। এদিকে অপলার মাথা ঘুরতে থাকে। এক বিভীষিকাময় মুহুর্ত তার চোখের সামনে ভেসে উঠে।
চলবে..
আলোচিত ব্লগ
সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?
যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।
নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন