somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা মেয়েদের কথা মনে রাখি, মেয়েরা ভুলে গেছে

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আদি রূপ - খসড়া


পারুলের মতো সুন্দরী মেয়ে আজও দেখি না; সারাদিন কেটে গেছে ওর উড়ন্ত ওড়নার রংধনু দেখে, 'আমার দিকে ফিরেও তাকায় নি'- কেটে গেছে দিনের পর দিন এভাবেই; বহু বহুদিন।

ওর বিয়ে হয়ে গেলো। যুবকেরা দলে দলে সন্ন্যাসে গেলো। গেলাম আমিও। চৈত্রনিদাঘে, জলসঙ্গমে খুন হয়েছি পারুলের কথা ভেবে। পারুল পলকে সব দিয়ে দিল ওর বরকে- কোথাকার কোন্‌ উড়ো পুরুষ, উড়ে এসে পেয়ে গেলো আজীবন স্বত্বাধিকার। আকৈশোর বিন্দু বিন্দু যত্নে ওর বাড়ন্ত বুকে জমতে দিয়েছি মধু, একদিন আমাদেরই সম্পদ হবে ভেবে - আমাদের গ্রাস কেড়ে নিল উপনিবাসী বর! আমার কথা একবারও ভাবে নি পারুল; কাউকে কখনো।

বীনা সুলতানা; ঝিনুক; নার্গিস; ওরা খুব সুখে আছে স্বামীদের সংসারে। ওদের অঢেল আহ্লাদ দেখি, আর করাতের মতো কে যেন চিড়ায় আমাদের পাঁজরের হাড়। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে, আর তীর্থের প্রেমিকদের বিমর্ষ বিলাপে ওদের ব্যাপক বিনোদন হয়।

'কষ্ট নিস না দোস্‌।' শাহনাজকে আজ কবিতা শোনালে ও শুধু এটুকু সান্ত্বনাবাক্য আওড়ালো। আর বললো, 'যাকে নিয়ে এসব মহৎ কবিতা লিখেছিস, সে খুব ভাগ্যবতী।' আমার খুব লোভ হয়েছিল শাহনাজ বলবে, 'তুই কি জানিস, আমিও কতোরাত নির্ঘুম কাটিয়েছি তোর কথা ভেবে? তোর কথা মনে পড়তেই বুক থেকে ঠেলে নামিয়ে দিয়েছি বরকে!' শাহনাজ বললো না। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে।


২য় রূপ - ২য় খসড়া

পারুলের মতো সুন্দরী মেয়ে আজও দেখি না; সারাদিন কেটে গেছে ওর উড়ন্ত ওড়নার রংধনু দেখে, 'আমার দিকে ফিরেও তাকায় নি'- কেটে গেছে দিনের পর দিন এভাবেই; বহু বহুদিন।

ওর বিয়ে হয়ে গেলো। যুবকেরা দলে দলে সন্ন্যাসে গেলো। গেলাম আমিও। চৈত্রনিদাঘে, জলসঙ্গমে খুন হয়েছি পারুলের কথা ভেবে। পারুল পলকে সব দিয়ে দিল ওর বরকে- কোথাকার কোন্‌ উড়ো পুরুষ, উড়ে এসে পেয়ে গেলো আজীবন স্বত্বাধিকার। আকৈশোর বিন্দু বিন্দু যত্নে ওর বাড়ন্ত বুকে জমতে দিয়েছি মধু, একদিন আমাদেরই সম্পদ হবে ভেবে - আমাদের গ্রাস কেড়ে নিল উপনিবাসী বর! আমার কথা একবারও ভাবে নি পারুল; কাউকে কখনো।

বীনা সুলতানা; ঝিনুক; নার্গিস; ওরা খুব সুখে আছে স্বামীদের সংসারে। ওদের অঢেল আহ্লাদ আর স্বামীদের সাথে উৎফুল্ল ঢলাঢলি দেখি, আর করাতের মতো কে যেন চিড়ায় আমাদের পাঁজরের হাড়। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে, আর তীর্থের প্রেমিকদের বিমর্ষ বিলাপে ওদের ব্যাপক বিনোদন হয়।

'কষ্ট নিস না দোস্‌।' শাহনাজকে আজ কবিতা শোনালে ও শুধু এটুকু সান্ত্বনাবাক্য আওড়ালো। আর বললো, 'যাকে নিয়ে এসব মহৎ কবিতা লিখেছিস, সে খুব ভাগ্যবতী রে!' আমার খুব সাধ হয়েছিল শাহনাজ বলবে, 'তুই কি জানিস, আমিও কতোরাত নির্ঘুম কাটিয়েছি তোর কথা ভেবে? তোর কথা মনে পড়তেই বুক থেকে ঠেলে নামিয়ে দিয়েছি বরকে!' শাহনাজ বললো না। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে।

সংবিধান সংশোধনের একচ্ছত্র ক্ষমতা যদি আমার হাতে থাকতো, মাইরি বলছি, স্বামীদের সাথে মেয়েদের এহেন রংতামাশা, ঢলাঢলি আইন করে করতাম সংবিধানবিরোধী, অবৈধ। এসব মূলত ক্লাসমেট আর বিয়েপূর্ব-প্রেমিকগণের ফুর্তির বেসাতি, যাদের বিরান জীবনে একখানা বউ জোটে নি অদ্যাবধি।


নায়িকাদের নামবদল, স্বামীদের ভয়ে - ৩য় রূপ


শিমুলের মতো সুন্দরী মেয়ে আজও দেখি না; সারাদিন কেটে গেছে ওর উড়ন্ত ওড়নার রংধনু দেখে, ‘আমার দিকে ফিরেও চায় নি’- কেটে গেছে দিনের পর দিন এভাবেই; বহু বহুদিন।

ওর বিয়ে হয়ে গেলো। যুবকেরা দলে দলে সন্ন্যাসে গেলো। গেলাম আমিও। চৈত্রনিদাঘে, জলসঙ্গমে খুন হয়েছি শিমুলের কথা ভেবে। শিমুল পলকে সব দিয়ে দিল ওর বরকে- কোথাকার কোন্ পামর পুরুষ, উড়ে এসে জুড়ে গেলো আজীবন দখলে। আকৈশোর বিন্দু বিন্দু যত্নে ওর বাড়ন্ত বুকে জমতে দিয়েছি মধু, একদিন আমাদের সম্পদ হবে এ ভেবে- মোক্ষম গ্রাস কেড়ে নিল উপনিবেশী বর! আমার কথা একবারও ভাবে নি শিমুল; নয় কাউকে কখনো।

সায়ন্তনি; কনকচাঁপা; রঞ্জনা; ওরা খুব সুখে আছে ‘পরপুরুষের’ ঘরে। ওদের অঢেল আহ্লাদ আর স্বামীদের সাথে অবাধে উৎফুল্ল ঢলাঢলি দেখি, আর করাতের মতো কে যেন চিড়ায় আমাদের পাঁজরের হাড়। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে, আর তীর্থের প্রেমিকদের বিমর্ষ বিলাপে ওদের ব্যাপক বিনোদন হয়।

‘কষ্ট নিস না দোস্।’ জুঁইকে আজ কবিতা শোনালে ও শুধু এটুকু সান্ত্বনাবাক্য আওড়ালো। আর বললো, ‘যাকে নিয়ে এসব মহৎ কবিতা লিখেছিস, সে খুব ভাগ্যবতী রে!’ আমার খুব সাধ হয়েছিল জুঁই বলবে, ‘তুই কি জানিস, আমিও কতোরাত নির্ঘুম কাটিয়েছি তোর কথা ভেবে? তোর কথা মনে পড়তেই বুক থেকে ঠেলে নামিয়ে দিয়েছি বরকে!’ জুঁই বললো না। মেয়েরা পাষণ্ডিনী; ওরা কেবল বরকেই বোঝে।

সংবিধান সংশোধনের একচ্ছত্র ক্ষমতা যদি আমার হাতে থাকতো, মাইরি বলছি, স্বামীদের সাথে মেয়েদের এহেন রংতামাশা, ঢলাঢলি আইন করে ঘোষণা করতাম সংবিধানবিরোধী, অবৈধ। এসব মূলত ক্লাসমেট আর বিয়েপূর্ব-প্রেমিকগণের ফুর্তির বেসাতি, যাদের বিরান জীবনে অদ্যাবধি বউ জোটে নি... একদা একখানা অর্বাচীন বউ জুটে গেলেও বউমণিরা ঘড়ায় তোলা নিত্যব্যবহার্য জল, বান্ধবীরা সুগভীর সন্তরণদিঘি।


__________________________________________
‘কেতকীর সঙ্গে আমার সম্বন্ধ ভালোবাসারই, কিন্তু সে যেন ঘড়ায়-তোলা জল- প্রতিদিন তুলব, প্রতিদিন ব্যবহার করব। আর লাবণ্যর সঙ্গে আমার যে ভালোবাসা সে রইল দিঘি, সে ঘরে আনবার নয়, আমার মন তাতে সাঁতার দেবে।’

শেষের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৫৩
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×