somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণকারী, অপহরণকারী ও খুনিদের ক্রসফায়ারে দিন, দেশ ঠান্ডা হয়ে যাবে

৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Be cruel to the criminals to be kind to the others. Be cruel to the rapists, kidnappers and murderers to be kind to all the good citizens of the country.

'Be cruel to be kind' - শেক্সপীয়রের এই কথাটিকে আমি আমার মতো করে উপরে বলেছি। আমরা যদি দেশের নিরীহ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই, যেখানে ধর্ষণ, অপহরণ ও খুনের মতো কোনো নৃশংসতা থাকবে না, তাহলে ধর্ষণ ও অপহরণকারী এবং খুনিদের প্রতি কঠোরতম এবং চরমতম নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করতে হবে, যাতে জীবন হারানোর ভয়ে এই অপরাধচক্র সর্বদা আতঙ্কগ্রস্ত থাকে, এবং অপরাধ সংঘটনের আগে শতবার পরিণতির কথা ভেবে অপরাধ সংঘটন থেকে বিরত থাকে।

আপনাদের যদি মনে থেকে থাকে- এ দেশে ২০০৩/২০০৪ সালের দিকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। ঠিক ঐ সময়ে ক্রসফায়ারে কয়েকটা সন্ত্রাসীকে ফেলে দেয়া হলো, ব্যস, সারা দেশ ঠান্ডা। আমরা অনেকদিন খুব শান্তিতে ছিলাম শুধু এই ক্রসফায়ারের কারণে।

ইদানীং ধর্ষণের হার ভয়াবহ মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে। ৩/৪ বছরের শিশুও এই ধর্ষণযজ্ঞ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। সম্প্রতি বগুড়ার রূপা প্রামাণিক নাম্নী মেধাবী এক ছাত্রী বাসযোগে বগুড়া থেকে ময়নসিংহ যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাসের কন্ডাক্টর, হেল্পারসহ ৫জন নরপশু কর্তৃক চলন্ত বাসের ভেতরই ধর্ষণের শিকার হন, এবং তিনি চিৎকার, কান্নাকাটি করলে ঘাড় মটকে তাকে হত্যা করা হয়। তার মৃতদেহ মধুপুর বনে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়। এই ঘটনা আদিম যুগের বর্বরতাকেও ম্লান করে দেয়। নৃশংসতার এর চেয়ে অধিক নিকৃষ্ট উদাহরণ আর কী হতে পারে? এসব পশুদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার আছে বলে কি আপনারা মনে করেন? আমি মনে করি না এই নিকৃষ্টতম, রোমহর্ষক ঘটনা ঘটানোর পর তারা বেঁচে থাকুক।

গত কয়েক মাসের ঘটনা যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে এমনও দেখতে পাব যে, আজ এক জায়গায় ৮ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করা হয়েছে, এর এক বা দুদিন পরই অন্য এক জায়গায় ৩ বছরের মেয়েশিশুকে ধর্ষণ করে টয়লেটে তার লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। অভিজাত হোটেলে মেয়েবন্ধুদেরকে জন্মদিনের নাম করে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে উচ্চবিত্ত ঘরের সন্তানেরা গণধর্ষণ করেছে। বগুড়ার তুফান সরকার প্রথমে নিজে, পরে তার সাঙ্গ পাঙ্গরা কলেজে ভর্তিচ্ছু ছাত্রীকে গণধর্ষণ করেছে। বিগত বছরগুলোতে ধর্ষণ, খুন, অপহরণ তো কম হয় নি, কিন্তু সেগুলোর শাস্তি কার্যকর হতে কি আমরা দেখেছি? সেগুলোর বিচার হচ্ছে আদালতে, বছরের পর বছর পার হয়ে যাচ্ছে, রায় হচ্ছে, বিবাদীরা আপিল করছে, বিচারকার্য প্রলম্বিত হচ্ছে, আর মাঝখান থেকে তুফান সরকারগণ নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে ধর্ষণকার্য চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জানে, এতে তারা ধরা খাবে না, বা ধরা খেলেও প্রভাব প্রতিপত্তির জোরে দুদিনেই বেকসুর খালাস পেয়ে যাবে, অত:পর আবার পুরোদমে ধর্ষণ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বে।

এ অবস্থা নিরসনের জন্য আমার মতে পথ একটাই- বি ক্রুয়েল, এই নরপশুদের ধরার সাথে সাথে ক্রসফায়ারে দিয়ে দিন। বলবেন, এটা অমানিবক, বিচারবহির্ভুত? বলুন। পশুদের জন্য মানবিকতা নয়, বিচারও নয়। ওরা যেমন জঘন্যতম অপরাধ করে, ওদের উপরও একই আচরণের বিকল্প নেই। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে এটাও আইনে পরিণত করে ফেলা যেতে পারে। সংসদে বিশেষ বিল পাশ করা যেতে পারে, কিংবা প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অর্ডার জারি করে ক্রসফায়ারকে আইনে পরিণত করা যেতে পারে। এটা হাস্যকর, যুগপৎ নিষ্ঠুর শোনালেও বৃহত্তম জাতীয় স্বার্থে এখন এটা জরুরি হয়ে পড়ছে, আমার মতে।

এগুলো যে হারে বেড়ে যাচ্ছে, অতিসত্বর এগুলো থামানো না গেলে পরিস্থিতি শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এবং একসময়, যখন দেখা যাবে প্রচলিত আইনের ফাঁক গলে অপরাধীরা বেরিয়ে আসছে, কিংবা অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না, তখন জনরোষ সৃষ্টি হবে এবং জনগণ নিজেদের হাতেই আইন তুলে নিয়ে গণপিটুনিতে এদের ধংস করে দিতে পিছ পা হবে না।

এ জন্য কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুত কিছু ড্রাস্টিক একশন নেয়া, যাতে ধর্ষণকারী, অপহরণকারী ও খুনিদের আত্মা ভয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে থাকে এবং নিজেদের জান বাঁচানো নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ওদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে হবে। ইন্সট্যান্ট ক্রসফায়ার ছাড়া আতঙ্ক সৃষ্টি করা আদৌ সম্ভব নয়।

এ নৃশংসতা দূর করার জন্য আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে খুব আন্তরিক হতে হবে এবং দলের মধ্যে এ ধরনের অপরাধী থাকলে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আমরা বুঝি যে, ধর্ষক, খুনি, অপহরণকারী, বা অপরাধীদের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল নেই, তবে তারা যে দল করে তার নাম হতে পারে 'জাতীয় ধর্ষণ, অপহরণ ও খুন পার্টি'। প্রতিটি দলের উচিত দলের ভেতর এ ধরনের কোনো অপরাধী থাকলে দল থেকে তাদের বিতাড়িত করা। সম্প্রতি কিছু হয়েছে আমরা দেখেছি, তবে তা হয়েছে অপরাধ সংঘটনের পর। আমি মনে করি, যাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেইস আছে তাদের সাময়িকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। পরে আদালতে তারা নিরপরাধ প্রমাণিত হলে দলে ফিরবেন, অন্যথায় চিরতরে বহিস্কৃত থাকবেন। তারা যেন নতুন করে অন্য দলে না ভিড়তে পারে, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। দেশের স্বার্থেই দলের মধ্যে চিরুনি চালিয়ে এ ধরনের অপরাধীদের চিহ্নিত করে দল থেকে ছাঁটাই করতে হবে। এতে সব দলেরই সম্মান বাড়বে, জনপ্রিয়তা বাড়বে এবং দেশের মানুষও শান্তি পাবে। অপরাধীকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে নিরপেক্ষভাবে তাকে অপরাধী হিসাবেই ট্রিট করতে হবে। আমাদের ঘরে ঘরে বালক-কিশোররাও আজকাল রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে, তদ্রূপ, কিছু কিছু নেতা-কর্মীর ভয়াবহ অপরাধ-প্রবণতার জন্য রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের একটা ঘৃণাভাবও কাজ করছে সবসময়। দলের মধ্যে সত্যনিষ্ঠ ও নিরপরাধ নেতাকর্মীর উপস্থিতিই পারে রাজনীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা পজিটিভলি পালটে দিতে।

আশ্চর্য !! ৩১ আগস্ট রাত ১০টা

রূপা প্রামাণিকের ঘটনা এত ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার মাঝখানে আজও দুটি ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া গেলো। মিরপুরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে, কেউ বলছেন এটাও গণধর্ষণ। অন্যত্র ক্লাস ফোরের এক বাচ্চাকে ইদের জামা কিনে দেয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। চারদিকে এসব কী হচ্ছে? কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এই বর্বরতা থামানোর জন্য কঠোরতম পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া উপায় নেই। রূপার ঘটনার ব্যাপারে আজ টিভিতে দেখলাম জনগণও খুব সোচ্চার এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাপারে। ওরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর দেরি কেন, এখনই জনসমক্ষে জবাই করা হচ্ছে না কেন?

আমরা নিরীহ জনগণ। স্ত্রী, মেয়ে, বোন, ভাগ্নি, ভাতিজি সবই আমাদের আছে। কিন্তু এ অবস্থার মধ্যে শান্তিতে থাকা যায় না- কখন কোথায় কী ঘটে যায়। মানসিক শান্তি এবং স্বস্তির খুব দরকার। এ শান্তির জন্য ঐ নরপশুদেরকে প্রকাশ্যে বলি দেয়া ছাড়া অন্য কোনো মহৌষধ দেখছি না আপাতত।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০৫
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×