somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটা দমবন্ধ অবস্থায় আছি

১১ ই মে, ২০১৯ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগ যখন উন্মুক্ত ছিল, সেই সময়ে ব্লগপেইজটা সারাদিনই পিসিতে ওপেন থাকতো। পিসিও ততক্ষণই অন থাকে যতক্ষণ আমি জেগে থাকি। যদিও ব্লগে লগিন অবস্থায় থাকি, কিন্তু ব্লগে সারাক্ষণ থাকা হয় না। কাজের ফাঁকে ঢুঁ মারি, মন ভালো থাকলে বা ব্লগিং করার ইচ্ছে হলে ব্লগে ঢুকি। কিন্তু আমার আইএসপি'র উপর খড়্গ পড়লো মাত্র কিছুদিন আগে। হঠাৎ একদিন দেখি ব্লগে ঢুকতে পারছি না। পারছি না তো পারছি না, কিছুতেই না। অস্থির হইয়া গেলাম। ভিপিএন দিয়া ব্লগে ঢোকার উপায়টুপায় কোথাও কিছু পাওয়া গেল না। অস্থির ভাবেই ফেইসবুকে একটা স্টেটাস দিলাম- কীভাবে ব্লগে ঢোকা যায় সে ব্যাপারে সাহায্য চেয়ে। স্টেটাসে অনেকে সাজেশন দিলেন, এবং ইনবক্সেও মেসেজ পেলাম জাদিদ ভাই, সৈয়দ তাজুল ইসলাম ও সায়েম মুন ভাইয়ের। খুব অস্থির অবস্থায় গুঁতাগুঁতিও করলাম আন্ধাকুন্ধাভাবে; সাকসেস পেতে বেশ সময় লাগলো। ব্লগে ঢুকতে পেরে আমার আমার মুক্তির আনন্দ যে কী পরিমাণ হয়েছিল তা বোঝাতে পারবো না। কিন্তু, ব্লগে ঢুকতে না পারায় মনের ভেতর যে ক্ষোভ ও কষ্ট জমা হয়েছিল, তা এই আনন্দের চাইতে বহুগুণ বেশি ছিল।

ব্লগ কোনোদিন এরকম একটা সংকটে পড়বে, অন্যকেউ তা ভেবেছেন কিনা জানি না, কিন্তু আমার মাথায় কোনোদিন এটা কল্পনায়ও আসে নি। যেদিন প্রথম জানতে পারলাম যে এ ব্লগটাকে পর্নোসাইটের লিস্টে ঢোকানো হয়েছে, সাথে সাথেই আমার মনে হয়েছিল- এটা আনাড়ি হাতে করতে গিয়ে ভুলভাবে ভুল লিস্টে ঢুকে গেছে, সময়মতো তারা সংশোধন করে দেবেন। অনেকের দুঃখ, হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ দেখে আমি মনে মনে হাসতাম আর বলতাম- এত কান্নাকাটির কিছু নাই, অল্প কয়েকদিন পরই ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু অল্প কয়েকদিন পর ঠিক তো হলোই না, বরং জানতে পারলাম, ভুল করে নয়, সত্যিকারভাবেই এটাকে পর্নোসাইট হিসাবে প্রচার করা হচ্ছে। তার পরের ইতিহাস তো আমরা সবাই জানিই।

জাহিদ অনিকের ফেইসবুক স্টেটাসে ব্লগারদের ক্লাসিফিকেশন পড়লাম। অনেক ক্ষোভ, হতাশা নিয়াই ব্লগ থেকে দূরে আছি। ভিপিএন দিয়া ব্লগে ঢুকলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর টাইম আউট হয়। পিসিতে অন্যান্য কাজ করতে গেলেও মাঝে মাঝে টেকনিক্যাল কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যার ফলে ভিপিএন অফ করতে হয়। বার বার অফ অন করতে খুব বিরক্ত লাগে, তখন মেজাজ উঠে যায় আরো চরমে।

ব্লগ খোলা থাকলে ব্লগিং করি বা না করি, পেইজটা পিসিতে ওপেন থাকে। এটাই একটা সুখ। এটাকে একটা উপমা দিয়া প্রকাশ করা যায়। মা যখন বাসায় ঘর গেরস্থালিতে ব্যস্ত, ছোটো বাচ্চারা তার চারপাশে গুটি গুটি করে হাঁটে, খেলে। মা তাকে দেখে। সে স্বস্তিতে ও নিশ্চিন্ত থাকে। বাচ্চারা দূরে গেলেই মায়ের টেনশন বেড়ে যায়। ব্লগিং ব্যাপারটাও এরকম। এই ব্যাপারটা ব্লগ যখন উন্মুক্ত ছিল, তখন বুঝি নি। বুঝি এখন- যখন ভিপিএন দিয়া ব্লগে ঢুকি। দেখি, ব্লগ এখনো সজীব আছে। ব্লগে ঢোকার সময় একটা শঙ্কা কাজ করে- হায়, এটাকে চিরতরে বন্ধ করে দেয় নি তো! কিন্তু ব্লগে ঢোকার পর বিরাট একটা স্বস্তিতে বুক ভরে যায়?

ফেইসবুকে জাহিদ অনিকের স্টেটাসে একজন কমেন্ট করেছিলেন- ভিপিএন দিয়া ব্লগে ঢুকতেও ভয় করে, কেউ যদি বলে, আমরা এটা বন্ধ করেছি- তোমরা ঢুকছো কেন? এটা যুগপৎ হাসির খোরাক জোগায়, আবার মনের ভেতর ভয়ও ঢুকিয়ে দেয়। কিন্তু এ ভয়টা একেবারেই অমূলক হয়ে ওঠে, যখন ভাবি - যে অভিযোগে এ সাইটকে পর্নোসাইট বলা হচ্ছে, আমি তো এখানে ঢুকে কোনো পর্নোগ্রাফি করছি না। এখানে পর্নোগ্রাফির লেশমাত্র উপস্থিতি নাই। তাহলে আমার ভয় পাবার কি কোনো কারণ আছে?

বেশ একটা দমবন্ধ অবস্থায় আছি। আগের মতো সারাক্ষণ ব্লগপেইজ ওপেন করে থাকতে পারছি না বলেই এই অবস্থাটা ফিল করছি।

মানুষ মাত্রই ভুল করে; আমরা আশা করছি, যারা ভুল কাজটি করেছেন, তাদের ভুলও অচিরেই ভেঙে যাবে। ব্লগও আমাদের সবার জন্য আগের মতো উন্মুক্ত থাকবে, আমার দমবন্ধ অবস্থাটাও কেটে যাবে।

কেন আশা বেঁধে রাখি, কেন দীপ জ্বেলে রাখি- মিতালী মুখার্জী
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৯ রাত ১:১৮
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×