somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবাস্তব ঘটনা অবলম্বনে সত্য কাহিনি - আমার প্রিয় বন্ধু ও তার রচিত বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থাবলি

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শ্রোতাবন্ধু, প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আশা করি সকলেই ভালো আছেন। এ কয়দিন আপনারা উপর্যুপরি ফুডানিগিরির গল্প পড়তে পড়তে ফেডাপ হইয়া গেছেন। আজ কিছু সিরিয়াস বিষয় নিয়া হাজির হইলাম। আজ আমার সবচাইতে প্রিয় বন্ধু ও তার রচিত বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থাবলি সম্পর্কে আপনাদের কিছু গল্প বলবো। অবশ্য, আজকের গল্পগুলি অবাস্তব ঘটনা অবলম্বনে একেবারে সত্য গল্প। এ গল্পের প্রতিটা চরিত্রই বাস্তব। দৈবাৎ কোনো বাস্তব চরিত্রের সাথে এর কোথাও কোনো অমিল পরিলক্ষিত হলে তা ভুলতালীয় বলে গণ্য করতে হবে।

আমার প্রিয় লেখকের নাম খলিল মাহ্‌মুদ।

আপনারা জেনে টাস্কিত হবেন যে, খলিল মাহমুদের চেহারার সাথে আমার চেহারার একেবারে হুবহু মিল রয়েছে। চেহারার এই মিল থাকাটাই ও আমার প্রিয় লেখক হওয়ার প্রধান কারণ। আশ্চর্য কথাটা কী জানেন? ওর প্রথম লেখা কবিতাটা আমিই প্রথম পড়েছিলাম। এমনকি, ওর প্রথম গল্পটাও আমিই প্রথম পড়েছিলাম। ওর সব লেখালেখির উদ্ভব ঘটে আসলে আমার মস্তিস্কে। সেগুলো ওকে বলি। ও লেখে। তারপর আমাকে পড়তে দেয়। আমি পড়ে দিলে ও স্বস্তি পায়।

খলিল মাহ্‌মুদের প্রথম উপন্যাসের নাম 'স্খলন'। এটি লেখা শুরু হয় ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে এবং শেষ হয় ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে।
২০০২ সালেই বাংলাবাজারের আমির প্রকাশনের কাছে পাণ্ডুলিপি জমা দেয়া হয়। তৌহিদুল ইসলাম কনকের 'আমির প্রকাশন' খুব অখ্যাত একটা প্রকাশনী হলেও কনকের ব্যবহার ও আন্তরিকতা ছিল অপরিসীম। বাংলাবাজারে তার প্রকাশনী ছিল আমাদের মতো আরো অনেকের আড্ডার জায়গা। লক্ষ্মীবাজারে থাকতো কলিজিয়েট স্কুলের ইংলিশ টিচার এবং আমাদের ক্লাসমেট জনাব শাহজাহান মিয়া। শাহজাহান এবং আমি, মাঝে মাঝে আমাদের আরো কয়েকজন ক্লাসমেট যেমন আব্দুল করিম, জাহিদুল ইসলাম, ইমরান এবং পরিচিত আরো কেউ কেউ কনক ভাইয়ের ওখানে আড্ডা দিতাম। সেই আড্ডাখানায় খলিল মাহ্‌মুদও আমাদের সাথেই থাকতো।

২০০৩ সালের বইমেলায় খলিল মাহ্‌মুদের 'স্খলন' বের হয় আমির প্রকাশন থেকে। ঐ বছর খলিল মাহ্‌মুদ আরো দুটি উপন্যাস যথাক্রমে 'খ্যাতির লাগিয়া', 'অন্তরবাসিনী' এবং একটি ছোটোগল্পের বই 'সুগন্ধি রুমাল' শেষ করে এবং আমির প্রকাশনের কাছে জমা দেয়। ওগুলো একুশে বইমেলা ২০০৪-এ প্রকাশিত হয়।

এই সময়ে খলিল মাহ্‌মুদ ওর বন্ধুবান্ধব, যেমন আব্দুল করিম, শাহজাহান, ইমরান আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম ও শাহনাজ আক্তারকে নিয়ে 'সবুজ অঙ্গন' নামে একটা লিটল ম্যাগ বের করে। ‘সবুজ অঙ্গন’ সারা দেশের নতুন লেখকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সবগুলো পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে, বেশ কিছু জেলা, উপজেলা ও কলেজে সবুজ অঙ্গনের সাহিত্য-প্রতিনিধি ছিল। তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে লেখা সংগ্রহ করে পাঠাত। খলিল মাহমুদ ওগুলো সম্পাদনা করতো, কিন্তু সম্পাদক হিসাবে অন্য নাম (যেমন ফারিহান মাহমুদ, ছোটো ছেলে, উজ্জ্বল হোসাইন) ব্যবহার করতো। পরে অবশ্য, অন্য আরেকজনকে দিয়েও সম্পাদনা করানো হয়।

এরপর খলিল মাহমুদের আরো বেশ কয়েকটা বই বের হয়, যেমন ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে আই-ফ্রেন্ড (উপন্যাস, ২০০৫), অন্বেষা (কবিতা, ২০০৫), সবুজ অঙ্গন অণু-গ্রন্থ সংকলন (সম্পাদিত, ২০০৫), সবুজ অঙ্গন অণু-উপন্যাস সংকলন (সম্পাদিত, ২০০৬), নিঃসঙ্গ সময়ের সুখপাখি (কবিতা, ২০০৭), কালের চিহ্ন (গল্প, ২০১৫) এবং এক রঙ্গা এক ঘুড়ি থেকে অসম্পর্কের ঋণ (কবিতা, ২০১৬)।
আমার অ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী, খলিল মাহমুদের সেরা উপন্যাস হলো 'খ্যাতির লাগিয়া', সেরা কবিতাগ্রন্থ 'অসম্পর্কের ঋণ' এবং সেরা গল্পগ্রন্থ 'কালের চিহ্ন'।

খলিল মাহ্‌মুদের প্রিয় বই ফেইসবই। তার প্রিয় চ্যানেল 'ইউটিউব চ্যানেল Sonabeej। তার প্রিয় ব্লগারের নাম 'সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই।' তার ফেইসবুক চ্যানেলের নাম খলিল মাহমুদ। ফেইসবুকে তার ৩টা অ্যাকাউন্ট আছে। পাবলিক অ্যাকাউন্টে ফ্রেন্ডলিস্টের সংখ্যা ৫০০০ করে (ইদানীং কিছু কমানো হয়েছে, যাতে নতুন কাউকে ভর্তি হবার সুযোগ দেয়া যায়)। তার গুগল অ্যাকাউন্ট ৪টারও অধিক- ছবি এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট ভার্চুয়াল স্টোরেজের জন্য এগুলো করা হয়েছে। তার ব্লগের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা অনেকগুলো হলেও নানা কারণে ওগুলো বন্ধ অবস্থায় আছে। এতগুলো অ্যাকাউন্ট ওপেন করার কারণ খুব ইন্টারেস্টিং। প্রতিবারই অ্যাকাউন্ট ওপেন করার সময় আইডিতে কিছু না কিছু বানান ভুল হতো। ওগুলো সংশোধন করে পরের নিকটা ওপেন করা হতো। ভাগ্যদোষে পরের নিকেও বানান ভুল হতো। এভাবে সর্বশেষ ‘সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই’ নিকে সে থিতু হয়েছে। তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা।

সবচাইতে মর্মান্তিক ব্যাপার হলো, তার ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এতগুলো হলেও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মাত্র একটাই।

সিঙ্গারা, পুরি, পেঁয়াজু আর ছোলাভুনা হলো খলিল মাহমুদের প্রিয় খাবার। নেশা বলতে ফেইসবই পড়া আর ইউটিউব চ্যানেল দেখাকেই সে বুঝে থাকে। সে লেখার সময় লেখে, কাজের সময় কাজ করে, খাওয়ার সময় খায় আর বিশ্রামের সময়ে আরাম করে। সে হাঁটার রাস্তায় হেঁটে চলে, গাড়ির রাস্তায় গাড়িতে যায়। সে দিনে জেগে থাকে, রাতে ঘুমায়।

খলিল মাহমুদের বইগুলোর সফটকপি ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে। এই লিংকে ক্লিক করুন। কমেন্টের ঘরে লিংক দেয়া আছে প্রতিটা বইয়ের জন্য।

খলিল মাহ্‌মুদকে আপনারা চিনতে পারছেন তো? সে আর কেউ নয়, সে আমাদের প্রিয় খলিল মাহ্‌মুদ।

০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০


সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৯
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×