somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিতা থেকে গান || এমন একটি ছবি : একটি সুপ্রভাবিত কিশোর-কবিতা থেকে গান || আমার লেখা ও সুর করা

০১ লা মে, ২০২৫ রাত ১২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৮০-৮৩ সালে আমরা যখন ৭ম-১০ম শ্রেণিতে পড়ি, ঢাকা জেলার বান্দুরা (নবাবগঞ্জ থানা) থেকে এক তুখোড় ইংরেজি শিক্ষক এসে যোগদান করলেন আমাদের মালিকান্দা হাইস্কুলে (ঢাকা জেলার দোহার থানা)।



স্যারের নাম উৎপল চন্দ্র সাহা। স্যার ইংরেজি ক্লাসে পাঠ্যবিষয় তেমন পড়ান না, পড়ান শেক্সপিয়র- টু বি, অর নট টু বি দ্যট ইজ দ্য কোয়েশ্চন। আমরা বুঝি না কিছুই- কেবল হাঁ করে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি; মুগ্ধ না হয়ে খুব বিরক্ত হই। কারণ, পরীক্ষার পড়া আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আরো আছে- তিনি শুধু ইংরেজিই না, বাংলাও পড়ান। বাংলা ক্লাসে রবীন্দ্রনাথের 'ছুটি' পড়াতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস থেকে শুরু করে ছোটোগল্পের ইতিবৃত্ত বয়ান করতে থাকেন। আমরা যথারীতি বিরক্ত হই- ফটিকচরিত্র আলোচনা অধিক গুরত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। এই উৎপল স্যারের কাছেই জীবনে প্রথমবারের মতো সুকান্ত ভট্টাচার্যের নাম শুনেছিলাম- তিনিই প্রথম 'ছাড়পত্র'-এর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।

উৎপল স্যার একদিন সৈয়দ আলী আহসানের 'আমার পূর্ব-বাংলা' কবিতাটির ভূয়সী প্রশংসা করলেন এবং সেটি পাঠ করে শোনালেন। অন্য একদিন পাঠ করলেন 'ছবি' নামক একটা কবিতা (কবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল)। তাঁর বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যের সেরা কবিতা যে-গুলো, তিনি আমাদের সে কবিতাগুলো পাঠ করে শোনাতেন বিভিন্ন ক্লাসে।

আমি তখন কবিতা লিখতে শুরু করেছি। একটা-দুটা ট্র্যাংক ভরে গেছে (ক্লাস টেনের শেষের দিকে)! এতো এতো কবিতার মধ্যে সুকান্ত, নজরুল, জসীমউদ্‌দীনের প্রভাবপুষ্ট কবিতার সংখ্যাই বেশি- কিন্তু যে-কবিতাটিতে 'ছবি' ও 'আমার পূর্ব-বাংলা'র সুস্পষ্ট প্রভাব বিদ্যমান, সেটির নাম 'এমন একটি ছবি'। এটির সুনির্দিষ্ট রচনাকাল আমার মনে নেই, তবে ১৯৮০ থেকে ১৯৮৬- এর মধ্যিখানে যে-কোনো একদিন লিখেছিলাম তা নিশ্চিত। নীচে আমার 'এমন একটি ছবি' জুড়ে দিলাম। ১৬ ডিসেম্বর ২০১২-তে লেখা এ নিয়ে ব্লগপোস্টটির লিংক দিলাম কমেন্টের ঘরে। 'এমন একটি ছবি' কবিতাটি ২০০৫ সালের মহান একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অন্বেষা'য় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (প্রকাশক : ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ)।

আমার নিজের লেখা কবিতায় সুর দিয়ে গান তৈরির একটা শখ জেগেছে আমার মধ্যে। এর আগেও কয়েকটা কবিতায় সুর দিয়ে গান করেছি, আগামীতেও স্বরচিত কবিতা থেকে গান করার ইচ্ছে দিনে দিনে প্রবলতর হচ্ছে।

এবার 'এমন একটি ছবি' কবিতায় সুর দিয়েছি। গানটি কেমন হলো জানালে খুশি হবো।

এমন একটি ছবি
- খলিল মাহ্‌মুদ

এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী :
যেখানে পাহাড়ের কোলে
ছলছল ঝরনাধারার রোদে ঝিলিমিলি
উদার আকাশে
চপলা মেঘ-পরীদের মত্ত নাচানাচি
কিংবা
রুপালি নদীর তটে তটে
হাওয়ায় হাওয়ায় দোদুল সাদা কাশবন।

এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী :
যেখানে সবুজে ঘেরা
হাজার পাখির একটি নিবিড় বন
ঝিলের জলে
সাদা সারসের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যাবলি
মাঝিরা রঙিন পাল তোলে নায়ে পুবালি বাতাসে
কাজল দিঘিতে
প্রস্ফুটিত একটি শাপলার মোহন হাসি
কৃষাণের হাতে ধানের একগুচ্ছ সোনালি শিষ
এবং
সারি সারি পাটের সবুজ বীথি।

এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী।
অথচ এই ছবিটি
আমি প্রতিদিন নয়ন ভরে দেখি।
তুমি যদি ছবিটি দেখতে চাও
একবার তাকাও এই বাংলায় :
কোনো নিপুণ শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়,
অথচ কেমন সতেজ
শ্যামল সুন্দর এই ছবিটি।

গানে 'ছলছল' শব্দের জায়গায় 'চঞ্চল', 'নয়ন'-এর জায়গায় 'দু চোখ' এবং 'কিংবা'র পরে 'ধরো' শব্দটা যোগ করা হয়েছে।

কবিতা, সুর ও মূল কণ্ঠ : খলিল মাহ্‌মুদ
এ-আই কভার : সোনারু
কবিতা রচনাকাল : ১৯৮৬
সুর সৃষ্টি : ২৫ এপ্রিল ২০২৫

গানের লিংক : প্লিজ এখানে ক্লিক করুন - এমন একটি ছবি

অথবা নীচের লিংকে ক্লিক করুন।




এ কবিতার উপর একটি পুরোনো পোস্ট :

এমন একটি ছবি - একটি সুপ্রভাবিত কিশোর-কবিতা
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০২৫ রাত ১২:৩৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×