এবার নারীদের পোশাক নিয়ে কিছু বলি:
এদের ক্ষেত্রেও একই কথা - ঊর্ধসীমা ও নিম্নসীমা থাকবে। তারা তাদের পরিবেশ, ইমানের দৃঢ়তানুযায়ী এর মধ্যে বিচরণ করবে।
নারীদের পোশাকের ইসলামের বিধান:
১. সতর ঢাকতে হবে। এটা ফরজ। (সতর হল: মুখমন্ডল, দুই হাতের তালু, পায়ের তালু বাদে সকল শরীর)
২. পোশাক ঢিলেঢালা হওয়া বাঞ্চনীয়।
৩. বুকের উপরে ওড়না থাকবে
৪. যা সহসাই প্রকাশিত হয়ে যায় তা বিনা অন্য কোন অংশ খালি না রাখা। অন্যভাবে, এ্যাকাডেমিক, অফিসিয়াল ইত্যাদি কাজকর্মের সময় যা প্রকশিত হয়ে যায় তা ভিন্ন কথা। (সুরা নুর: ৩০ - ৩১)
৫. বাজে স্টাইলের পোশাক পড়ে নিজেকে কুরুচি সম্পন্ন হিসেবে প্রকাশ না করা
এই যা বিধান আরকি। এখন তার পোশাক কি হবে - সেলোয়ার কামিজ না শাড়ী, বোরকা না অন্য কিছু - সেটা যার যার ব্যপার। কথা হল উপরের শর্ত গুলো রক্ষা করা। আমি এমন অনেক বোরকা দেখেছি যা মানুষকে আরও বিশ্রী ভাবে উপস্থাপন করে, আবার এমন সেলোয়ার-কামিজ-স্কার্ফ সমেত মানুষ দেখেছি যারা উপরের বিধান সমুহ মেনে নিজেদের অনেক মার্জিতা হিসেবে প্রকাশ করেছেন।
শাড়ি নামটা শুনলেই আমি আতকে উঠি। আমার খালা - মামি দের দেখেছি কীভাবে তারা পেট-পিঠ (সরি ফর ডিস ল্যাঙ্গুয়েজ ) বের করে শাড়ি পরিধান করে। তোমাকে যে ম্যাডামের কথা বলেছিলাম তিনিও মাঝে মধ্যে শাড়ি পড়েন; বিশ্বাস কর দেখলে সম্মানে, শ্রদ্ধায় মন ভরে উঠে। আমাদের নবীন বরণের সময় মোট ছাত্রীর একটা ছোট অংশ শাড়ি পড়েছিল। তারা যখন আমার সামনে এসে পোজ দিয়ে হাসলো, আমি মনে মনে বললাম এত সস্তা করলে তোমাদের। তোমাদের সম্পর্কে আমাদের কত কৌতুহল থাকে তা তোমরা নিজেরাই মিটিয়ে দিচ্ছ।
আমাদের পুরুষদের অনেক দোষ দেখানো হয় (এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে আমরা নারীদের যথেষ্ঠ সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছি)। একটি ক্ষেত্র আমার মনে হয় নারীদের পুরুষের কাছ থেকে শেখার আছে। আমরা ফুল হাতা শার্ট পড়ি (যার জন্য পড়া টা অতটা জরুরী নয়) তারা পড়ে হাফ হাতা, কোয়ার্টার হাতা, ইভেন হাতা ছাড়া। আমাদের বুক, পিঠ ঢাকা থাকে (যা ঢাকা অতটা প্রয়োজনীয় নয়) আরা তারা এক্ষোত্রে উদাসহীন। আমরা মোটা কাপড়ের প্যান পড়ি, আর.... আমার মনে এভাবে তারা পরিবেশ দুষিত করছেন। বাসার ছোট মেয়ে মাকে দেখে, বোন বড় বোনকে দেখে, হলের জুনিয়র সিনিয়রকে দেখে এই অদ্ভু্ত নোংরামীটা রপ্ত করে নিচ্ছে।
প্রকৃতি গত ভাবেই পুরুষরা সেক্সুয়ালি একটু এ্যাগ্রেসিভ, অন্তত নারীদের চেয়ে। এ অবস্থায় তারা যদি পুরুষদের সামনে এভাবে ইজি, এবং সহজলভ্য হন সেটা চরম দু:খজনক।
এখন চারদিকে নারীর কমোডিফিকেশান (পণ্যকরণ) চলছে। যেমন ধরুন, গাড়ির "শো", মোবাইল সেটের শো, ইত্যাদিতে পণ্যের (যেমন গাড়ি) পাশে নারীকে যে ভাবে সাজানে হয়ে থাকে তা উপরের কমেন্টকেই প্রমান করে। দেখুন এখানে মালিকের (পুজিপতি) লক্ষ্য হল মানুষ অন্তত নারীর শরীরের আকর্ষণেও তার পণ্যের দিকে নজর দিবে।
তারা (পুজিপতিরা) বিভিন্ন 'ডে' এরচ প্রচলন করেছেন। বলা হচ্ছে এগুলো আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ।এক্ষেত্রও আমরা নারীর অবমানা দেখে হতাশা হই।
ডেটিং সংস্কৃতি আমাদের দেশে একটি নয়া সংস্করণ। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হল এগুলো আমাদের দেশে অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়ে গেছে। এহেন কর্মকান্ড এখন আর গোপনে পরিচালিত হয়না। পাবলিকলি হচ্ছে। আমরা এ কালচারে সোসিয়েলাইজড হয়ে যাচ্ছি।
মুলকথা সমাজের বর্তমান গতিবিধি নারী সমাজকে সম্মান দেখাতে চরমভাবে ব্যর্থ। আর এ সম্পর্কে ইসলামের বিধানাবলীর স্বার্থকতা, যৌক্তিকতা, বাস্তবতা, এবং শ্রেষ্ঠত্ব এখানেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




