somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কীর্তণখোলা নদী দখল করে স্থাপনা তৈরী করেছে অপসোনিন

১০ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বরিশালের কীর্তনখোলা নদী দখল করে স্থাপনা তৈরী করেছে দেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অপসোনিন। নগরীর দপদপিয়া এলাকার কীর্তনখোলা নদী ঘেঁষে জেগে ওঠা চরের ৩২ একর জমি নলছিটি ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে অপসোনিন নামে-বেনামে দখল করে সেখানে বাউন্ডারী ওয়ালের কাজ শুরু করে ২০০৭ সালে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কীর্তনখোলা নদী ভরাট করে যে বিশাল এলাকা নিয়ে অপসোনিন তাদের কারখানা নির্মান করছে সেখানে নতুন মেশিন পত্র বসানো হবে। পুরনো জায়গায় তাদের পুরানো ফ্যাক্টরী থেকেই যাবে। শুধু তাই নয়, কীর্তনখোলার জমি দখলের পাশাপাশি নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন মৌজার জমি দখলের অভিযোগে এ পর্যন্তু ৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। আরো দু’টি মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু কোম্পানীর মালিক প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তারা রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কীর্তনখোলা নদীর অপর তীরের জনপদ নলছিটির এলাকার বিশাল একটি অংশ ধীরে ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গত ৮/১০ বছর পূর্ব থেকে ঐ জমি নগরীর দপদপিয়া প্রান্তে জেগে উঠতে শুরু করে। জমি সংলগ্ন অপসোনিন কোম্পানীর পূর্বে ক্রয়কৃত জমি থাকায় ঐ জমির প্রতি দৃষ্টি পড়ে অপসোনিন কোম্পানীর মালিক পক্ষের। তারা জমি ক্রয় কিংবা দখলের জন্য লোক নিয়োগ করে বলে এলাকাবাসী সূত্র জানায়। জমি ক্রয় এবং দখলের দায়িত্ব দেয় আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার বজলুকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠে সাবেক ঐ কমিশনার ও তার সহযোগী চেলাপেলারা। ঐ জমি আয়ত্বে আনার জন্য গঠন করা সন্ত্রাসী বাহিনী। এরপর নলছিটি এলাকার যাদের যাদের জমি ঐ চরে রয়েছে তাদের কাছ থেকে জমির কাগজপত্র এনে অপসোনিন কোম্পানীর নিকট জমা দেয়া হয়। যারা কাগজপত্র দিতে চায়নি তাদেরকে রাতের আঁধারে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় বলে স্থানীয় ভূমিহীন লোকজন জানায়। এভাবে প্রায় ৩২ একর জমির কাগজপত্র অপসোনিন কোম্পানীর নিকট হস্তান্তর করার পর তৈরী হয় স্থাপনা নির্মানের কাজ। ঐ কোম্পানী থেকে ফ্যাক্টরী ম্যানেজার জসীম উদ্দিনকে ঐ জমি আয়ত্বে আনার জন্য তার নিকট দায়িত্ব দেয়া হয়। জসীমউদ্দিন এবং কোম্পানীর নিজস্ব আইনজীবীর মাধ্যমে কোম্পানী ঐ জমি ধীরে ধীরে আয়ত্বে আনে। এতে সহায়তা করে নলছিটি ভূমি অফিসের অসাধু কয়েক কর্মকর্তা। ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অপসোনিন কোম্পানী নামে-বেনামে জমি দখল করতে থাকে।

এভাবে কিছু জমি তারা ক্রয় করলেও মূল ভূমির মালিকরা তার খুব সামান্যই টাকা পেয়েছেন। কিছু টাকা পেয়েছে মধ্যসত্বভোগীরা। এরপর কীর্তনখোলায় পর্যায়ক্রমে যতই চর জেগেছে, অপসোনিনের দখলও ততই বেড়েছে। শেষ পর্যন্তু জমি দখল করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা, কীর্তনখোলা নদী অবৈধভাবে ভরাট করে বাউন্ডারী ওয়াল তৈরী করে করা হয়েছে। নদী ও জলাশয় রক্ষা আইন অনুযায়ী নদীর পাড়ে জোয়ারের পানি যে পর্যন্ত উঠা নামা করে তা নদী হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। কিন্তু অপসোনিন উল্টো নদীর মাঝে পিলার গেড়ে ব্লক ফেলে বালু দিয়ে তা ভরাট করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মান করেছে। প্রভাবশালীদের এ নজিরবিহীন অনিয়ম যেন দেখার কেউ নেই।

নলছিটির প্রকৃত ভূমি মালিকরা জানান- ভুমি জালিয়াত চক্রের হোতাদের সাথে প্রশাসন ও ভুমি অফিসের কর্তাদের গভীর সম্পর্ক থাকায় তারা কখনোই প্রতিকার পায়নি। অপসোনিনকে সহায়তা দিতে খতিয়ানে কাটা ছেড়া ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। ফ্লুইট দিয়ে ঘষা মাজা করে নতুন স্বাক্ষর তৈরী করা হয়েছে। ২৮ একর ৬০ শতাংশ জমি ভূয়া মালিকানা তৈরী করে তাদের কাছ থেকে অপসোনিন যোগসাজোশে ক্রয় করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জমির প্রকৃত মালিকরা নলছিটি সহকারী কমিশনার ভূমি আদালতে ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পায়নি।

এ শক্তিশালী ভূমিদস্যু গ্রুপটি নলছিটি উপজেলা ভূমি অফিসের তৎকালীন কানুনগো ওমর মোল্লা, সার্ভেয়ার আবুল এর সহযোগিতায় নলছিটি উপজেলা ভূমি অফিসে একটি ভূয়া ও জাল মিসকেস দায়ের করে ওহাব মাঝি ও মোতলেব মাঝির ষোল আনা জমি কথিত অহেদ আলীর নামে নাম জারী করা হয়। ২০০৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জমির প্রকৃত মালিক ওহাব মাঝি ও মোতলেব মাঝি ভূমি অফিসে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য গেলে তহসিল অফিস থেকে তাদের জানানো হয় তাদের জমি ১৪৩ ধারার বিধান বলে ২০এন/০১ এর বরাতে অহেদ আলী হাওলাদার নামে ষোল আনা অংশ রেকর্ড হয়েছে। আঃ ওহাব মাঝি ঝালকাঠী মহাফেজ খানায় ২০ এন/০১ এর মিউটেশন মোকদ্দমার আরজী ও শেষ আদেশের নকল পাওয়ার জন্য ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী আবেদন করেন। মহাফেজ খানায় ৫৪৩নং স্মারকে ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী নলছিটি সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে ঐ মোকদ্দমার ফলাফল প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হলেও জমির প্রকৃত মালিক বঞ্চিতই থেকে গেছেন। আঃ ওহাব মাঝি ও মতলেব মাঝি ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর নলছিটি সহকারী কমিশনের ভূমি আদালতে একটি মিসকেস দাখিল করে ১৫০ ধারামতে যারনং ৭এন/২০০৮-২০০৯ নলছিটির তৎকালীন এসিল্যান্ডের দায়িত্বে থাকা ইউএনও আব্দুর রহমান তরফদার ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর আদেশ দেয়। এ আদেশ এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।

সুত্র জানায়, ভুমি জালিয়াত চক্রের হোতা নগরীর রুপাতলী এলাকার একাধিক ব্যক্তি স্থানীয়দের সর্বনাশ করে অপসোনিনকে ভূমি দখলের সহায়তা করে দিয়েছে।
সুত্র এখানে
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×