দুই বন্ধু করিম এবং কামাল স্কুল জীবন থেকে একসাথে চলাপেরা আড্ডা সবাই এক সাথে চলে। শুধূ রাত কাটানো হয় আদালা। দু জনের বাড়ীও একই এলাকায়। গ্রামের সবাই তাদের কে মানিক জোড় বলতো। অনেক ঘটনা এবং রটনার জন্ম দিয়ে অবশেষে দুজন চাকরিতে গেলেনে। সব কিছু ঠিক ঠাক মতো চলছিল। কোন সমস্যা ছাড়া তারা দিনকাল অতিক্রম করতে ছিলেন। একদিন কামাল কর্মরত অবস্থায় বিদ্যুত এর সর্ট খেলেন, তখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি ভালো হয়ে ঘরে ফিরলেন ঠিকই। কিন্তু কে জানতো এটা তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। দু বছর পর দু বন্ধু বিয়ের পিড়িতে বসলেন অনেক ঘটা করে। বছর না ঘুরতে করিম এর ঘর জুড়ে আসলো নতুন অতিথি। কিন্তু কামাল এর ঘর খালি। এভাবে তিন বছর পার হয়ে গেলো কামাল এর ঘরে কোন সন্তান আসে না। অবশেষে তারা ডাক্তারের আশ্রয় নিলেন। দু জন এর মেডিকেল চেকআপ এর পরে যা ধরা পড়েছে তা হলো কামাল সন্তান জন্মদানে অক্ষম। যা তার দুর্ঘটনার কারন।উক্ত দুর্ঘটনা থেকে তার সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। যা কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। এটা শুনে সুখের ঘরে বিষাদের ছায়া নেমে আসল। পরিবার থেকে প্রচুর চাপ আসছে সন্তান এর জন্য যে, তারা তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মুখ দেখতে চায়। কিন্তু কি করবে কামাল। তারা অসহায়, ব্ন্ধূ করিম এর সাথে আলাপ করে আরো ডাক্তার এর সেবা নিয়েছেন কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায় নি।
দিন দিন কামাল এবং তার স্ত্রী ভেঙ্গে পড়লেন। যা তাহারা তাদের পরিবারের কাছে প্রকাশ করতে পারেনি বা করেনি লোক লজ্জায। এভাবে তো আর চলতে পারে না কিছু একটা তো করতে হবে। তখন অনেক ভেবে চিন্তে সিন্ধান্ত নিলো যে কোন উপায়ে বংশ রক্ষা করতে হবে। কারন কামালের কোন ভাই নাই। তাই তাদের বংশ বিস্তার এখানে শেষ হওয়ার পথে।
কিন্তু কি করবে কোন উপায় না পেয়ে কামাল অনেক কঠিন সিন্ধান্ত নিলেন যে অন্যের সন্তান দিয়ে হলেও তাদের বংশ রক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ কথা সে তার স্ত্রীকে বলার সাহস পেলো না। এভাবে আর কতো দিন চলবে তারপর একদিন সাহস করে স্ত্রীকে বলল। কিন্তু কি করে তা সম্ভব তার উপায় তাদের জানা নেই। যা হোক বন্ধূর সাথে আলাপ করেও কোন সুরাহা মিলে নাই। তারপর তারা উভয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন যে, কামাল তার স্ত্রীকে তালাক দিবে এবং পরিচিত কারো সাথে তাকে বিয়ে দিবে। তার পর এক সপ্তাহ পর সে আবার তাকে তালাক দিবে। কামাল পুনরায় তাকে বিয়ে করবে। যাকে আমাদের সমাজে হিল্রা বিয়ে বলে। যদি এরমধ্যে তার স্ত্রী গর্ভবতী হয়। তাহলে সেই সন্তান কে নিজের পরিচয়ে লালন পালন করবে শুধুমাত্র বংশ রক্ষার জন্য। কিন্তু এই কঠিন কাজটি কাকে দিয়ে করবে। কাকে বিশ্বাস করবে তারা। এটা পরিবারের সদস্যদের জানানো যাবে কি যাবে না। হাজারো প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আছে কামাল।
অবশেষে ব্যাপার টা তার মাকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শুনে মা তো আকাশ মাটি মাথা তোলার অবস্থা। তখন মাকে সব কিছু খুলে বলা হয়। সব শোনার পর মা নিঃশ্বব্দ হয়ে গেলেন। শুধু এটুকু বললেন, আমি কিছু জানিনা যে কোনো কিছুর বিনিময়ে আমার বংশ রক্ষা চাই। যা বোঝার বুঝে গেলেন কামাল।
এখন অপেক্ষা কার হাতে তুলে দিবে তার প্রানপ্রিয় সহধর্মীনিকে। অনেক খোঁজ করার পরে দেখল বন্ধূ করিম ছাড়া আর নির্ভরযোগ্য কোন ব্যাক্তি নেই। তারপর করিম কে বলার পর করিম কিছুতেই রাজি হলো না। কামাল ও নাছোড় বান্ধা তার বংশ রক্ষার জন্য সে মরিয়া। অবশেষে সবকিছু আইন মোতাবেক তারা সম্পন্ন করল লোকচ্ক্ষুর আড়ালে। কাগজ পত্র সব কিছূ বৈধ মোতাবেক হলো। তাদের কোল জুড়ে সন্তান আসল। কেউ জানল না এটা কার সন্তান। জানে শুধূ দুই বন্ধূ মা এবং স্ত্রী। কিন্তু সত্য বলে কথা, তা কোনদিন চাপা থাকে না।একদিন তা জনসম্মুখ্যে প্রকাশ হয়ে গেল। তখন সমাজবাসী তাদের কে বিচারেরর কাঠগড়ায় দাঁড় করাল। কিন্তু তাদের দেখানো প্রমান পত্র দেখে রায় তাদের পক্ষে গেলো। এখানে তাদের কে দোষারোপ করতে পারে নাই। বন্ধুর সহযোগীতায় কালাম পেলো সন্তান।
আসলে এটা কতটুকু বৈধ আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন থাকল?
আমাদের সমাজে এর গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু?
ইসলামে এর বৈধতা কতটুকু?
আপনাদের কাছে উত্তর আশা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১০ রাত ৮:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




