সারাদেশে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ আর নারী নির্যাতন। টাঙ্গাইলের মধুপুরে স্কুল ছাত্রীর গণধর্ষণের পর সামহোয়ার ব্লগে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া,নরপশুদের নিঃশ্বাসে বিষাক্ত সমগ্র বাংলাদেশ,বাঙালী প্রতিবাদী হও । শিরোনামে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন ব্লগার অপূর্ণ সাহেব তার ডাকে সাড়া দিয়ে সারাদেশে তুমুল ঝড় উঠে ধর্ষণকারীদের ফাসিঁর দাবীতে। "ধর্ষকদের জন্য একটাই আইন চাই , ৯০ দিনের মধ্যে ফাঁসী চাই । যাবজ্জীবন কিংবা জরিমানা নয় ।" দাবীতে রাজপথে নেমেছিলাম আমি আমরা। তখন আমি অনলাইনে নতুন। সামু'তে এই প্রতিবাদের ঝড় আমার মনে এনে দিয়েছিলো বিশাল শক্তি। দৃঢ় মনোবল নিয়ে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে লেখালেখি করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে করেছিলাম মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচি। দেশের আনাচে কানাচে পৌছে গিয়েছিলো এই অগ্নিঝরা প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ। কিন্তু কিছুদিন পরেই থেমে গেলো আন্দোলন। কাজের কাজ কিছুই হলোনা। আবারও আগের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বেড়ে গেছে ধর্ষণ, গনধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণের মতো নৃশংস নির্মমতা।
বাংলাদেশে ধর্ষণ করা ডালভাত হয়ে গেছে। ধর্ষণকারীদের রক্ষার্থে জনপ্রতিনিধি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীও বাহিনীও উঠে পড়ে লাগে। কোনো যুবক কাউকে ধর্ষণ করলে তাকে ডাক্তারী সার্টিফিকেট দিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক বানানো হয়। এদের কোনো উপযুক্ত শাস্তিও হয়না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধর্ষিতা বা ধর্ষিতার পরিবার মামলা করতে ভয় পায়। আবার মামলা করলেও প্রাণনাশের সঙ্কায় ভুগতে হয় সারাক্ষণ।
এবার টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করলো মাসুদ (২৫) নামের এক যুবক ও তার এক সহযোগী। নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। চিৎকার যেনো না করতে পারে সেজন্য মুখ বেঁধে নেয় তারা। এ ঘটনা যেনো কাউকে না বলে , এই জন্য দেয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি। ধর্ষিতা মেয়েদুটো টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এখন। কিছুক্ষণ পরপরই তারা চমকে উঠছে। গোঙানি দিচ্ছে বিকট শব্দে। লোকজন দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠছে। বমি করছে বার বার। বমির সাথে বের হয়ে আসছে রক্ত। এব্যাপারে ডা. জাকিয়া রশিদ শাফি বলেন, মেয়েটির অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। প্রচন্ড ভয় পাওয়ায় যাকে দেখছে চিৎকার দিয়ে উঠছে। মারাত্মক নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানোর ফলে পাকস্থলিতে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বমির সাথে রক্ত আসছে ও গোঙানি দিচ্ছে।
এদিকে ধর্ষক মাসুদ ও তার সহযোগী স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুল মাসুদ লিটনের স্নেহভাজন হওয়ায় মিমাংসার কথা বলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কাউকে কিছু না বলার জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। মামলা করলে ক্ষতি হবে বলে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। স্থানীয় গ্রাম্য মাতব্বর ফজলুর রহমান ও শাহদত হোসেন লেবু ইউপি সদস্যর সাথে সুর মিলিয়ে ধর্ষকের পক্ষ অবলম্বন করছে।
নানা জল্পনা-কল্পনার পর ধর্ষিতার এক ছাত্রীর পিতা মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রবিবার সকালে মাসুদকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত আরেক যুবকের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অথচ এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য তার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমনকি সাংবাদিকরা নিউজ করতে গেলেও ইউপি সদস্য আসাদুল মাসুদ লিটন বলেন লেখালেখির কোন দরকার নেই। গ্রামের মাতব্বরদের সাথে কথা বলে বিষয়টি আমি দেখছি।
সামান্য একজন ইউপি মেম্বারের ছত্রছায়ায় থেকে লম্পট মাসুদ একের পর ধর্ষণ করেই চলেছে। কি হবে এই ধর্ষণের বিচার? কিছুই হবেনা। পুলিশ এদের গ্রেফতার করবে শুধু মাত্র তাদের পকেট ভরানোর জন্য। মেম্বারদের তোপের মুখে একসময় মামলা প্রত্যাহার করে নিবে ধর্ষিতাদের বাবা। আর পকেট ভরবে পুলিশের আর গ্রাম্য মাতাব্বরদের।
ছি! ছি! ছি! ধিক্কার এসব মানুষরুপি জনপ্রতিনিধিদের। যারা নরপশু ধর্ষকদের পক্ষে কথা বলেন। আমার মতে এসব রেপিস্টদের বিচার করার আগে জনসম্মুখে বিচার করা উচিত এসব জনপ্রতিনিধিদের। যারা একটি নারীর ইজ্জতের দামাদামি করে মিমাংসা করে দিয়ে নিজেদের পকেট ভরায়।
থু!!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




