কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি:মি:। সৃষ্টিকর্তা যেন রূপসী বাংলার সব রূপ ঢেলে দিয়েছে বালুর আঁচলে। খোলা জীপে, স্পীড বোটে বা ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো আর সমুদ্রের বালির বিছানায় দাঁড়িয়ে শামুক-ঝিনুকের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে উপভোগ করা যায় সূর্যাস্তের অনাবিল আনন্দ।
খুব বেশীদিন আগের কথা না হঠাৎ করেই কোন বিশাল প্ল্যান ছাড়া একদিন দলবল নিয়ে বেড়িয়ে পরেছিলাম এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সারারাত বাস জার্নি করে রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল বেলায় বাস থেকে নেমেই দেখি বিশাল সমুদ্র! এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না!
সবাইকে একটা সারপ্রাইজ দিতে, যাওয়ার আগেই নেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে পেলাম হোটেল দি কক্স টুডে। ছবি দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম! বাংলাদেশে এত চমৎকার হোটেল আছে! তার উপর আবার দেখি আমার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে এই হোটেলের সাথে নানা রকম ডিসকাউন্টও আছে! বুক করে নিলাম হোটেল। পৌঁছানোর পর যখন সবার মাথায় ঢুকল চিন্তা, কই থাকব!! ঠিক তখন শেষে সবাইকে নিয়ে গেলাম হোটেল দি কক্স টুডে তে। হোটেল দেখে তো সবার চক্ষু চড়কগাছ! আমার ক্রেডিট কার্ডে বেশ ভালো ছাড় ও পেলাম! তবে আফসোস আমার গোল্ড কার্ডে ৩৫% ডিসকাউন্ট, প্লাটিনাম কার্ড থাকলে ৪০% পেতাম আর সিগনেচার কার্ডের উপর নাকি ৫০%!!!
এরপর শুরু আমাদের সমুদ্র দর্শন। কক্সবাজারের নাজিরার টেক থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত বীচ। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে উক্ত সি বীচ অবস্থিত। এর মধ্যে লাবনী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। কক্সবাজার হতে প্রায় দশ কি:মি: দক্ষিণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিমছড়ি। হিমছড়ি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা রয়েছে। কক্সবাজার শহর হতে মেরিন ড্রাইভ সড়কে সমুদ্র আর পাহাড়ের মধ্যদিয়ে প্রাণচঞ্চলতায় জীপে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে অনায়াসে বেড়িয়ে আসা যায় ঝর্ণাধারা প্রবহমান হিমছড়িতে।
বাইরে থেকে খাওয়াদাওয়া সেরে হোটেলে গেলাম। হোটেলের পুলে কোমর পর্যন্ত ডুবিয়ে রিলাক্স করলাম কিছুক্ষণ। সেখানেও পেলাম ২৫% ডিসকাউন্ট! হোটেলের বারান্দা থেকে বিচের এত সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় যে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
রাতে ডাইনিং এ ডিনারে গিয়ে দেখি আবারো ১০% ডিসকাউন্ট!! বন্ধুদের কাছে ভালই পার্ট নিলাম
আর কি। আফসোস লাঞ্চটা কেন যে বাইরে করেছিলাম!
হাতে সময় থাকলে এখনই ঘুরে আসুন দলবলসহ কিংবা প্রিয়জনকে নিয়ে। এত সুন্দর বিচ পৃথিবীর কোথাও পাবেন না।