ইহজগতের সব হিসাব নিকাশের পালা শেষ। স্বর্গ ও নরকের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীতে সৃষ্ট সকল মানুষ।
স্বর্গের দরজায় একে একে সকলের সাক্ষাৎকার নেয়া হচ্ছে। নাম ডাকার সাথে সাথে একজন একজন করে সামনে এগুচ্ছে। কেউ সাক্ষাৎকারে পাশ করে লাফাতে লাফাতে স্বর্গের দিকে চলে যাচ্ছে, কাউকে আবার পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে নরকে। ইহজগতের হিসাব নিকাশ ক্লিয়ার করে আবুলও অন্য অনেকের মতো স্বর্গে ঢুকে গেল।
একে একে এল মফিজের পালা। স্বর্গের দ্বাররক্ষী মফিজকে প্রশ্ন করার আগেই মফিজ রক্ষীকে প্রশ্ন করলো, ‘আবুলকে কেন স্বর্গে ঢুকতে দেয়া হলো ?’ রক্ষী হকচকিয়ে গেল, সে-ই সবাইকে প্রশ্ন করে তার ভাগ্য নির্ধারণ করছে, আর এই লোক এসে তাকেই কিনা প্রশ্ন করে। রক্ষী আমতা আমতা করে বললো, ‘তাতে আপনার কি ? আপনার হিসাব আপনি দিয়ে যান।’ মফিজ আরো এককাঠি সরেস, ‘অসম্ভব। আবুল একজন ব্রাজিলের সাপোর্টার। যেই স্বর্গে একজন ব্রাজিলের সাপোর্টার চলে যায় সেখানে আমি নাই। আমি গেলাম।
সঙ্গে সঙ্গে আবুল স্বর্গ থেকে বেরিয়ে এসে রক্ষীকে বললো, “দেখসেন, ব্যবহারটা দেখসেন ? আর্জেন্টিনার সাপোর্টার গুলা এমুনই হয়। সবগুলা বেয়াদব।” মফিজ এবার মারমুখী ভঙ্গীতে ছুটে আসে, “আর আপনারা খুব ভালো? আপনাদের সবাইরে চেনা আছে। দুই হাজার দুইয়ে আর্জেন্টিনা যখন আউট হইয়া গেল সেইদিন হাশেমের দোকানে কি করসিলেন মনে আছে?” আবুল আরো চেচিয়ে বললো, দুই হাজার ছয়ে ব্রাজিল যেদিন আউট হইল ওইদিন আপনারা কি করছেন কিছুই ভুলি নাই। আপনাদের মতো এত নিচে আমরা নামিনা!" মফিজ রেগে গিয়ে মারতে গেল, আবুল বললো, "হাত উঠাইবেন ? উঠান! আপনাদের তো আবার হাতটাই বেশি চলে!..."
শুরু হয়ে গেল শোরগোল আর আগের বিশ্বকাপের হিসাব নিকাশ। লাইনে দাঁড়ানো সব মানুষ ব্রাজিল আর্জেন্টিনা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। ঘন্টাখানেক এরকম বিশৃঙ্খলা চলার পরে বের হয়ে এলেন স্বর্গের সিনিয়র কেয়ারটেকার। তিনি ঘোষণা দিলেন, যারা যারা ব্রাজিল আর্জেন্টিনা নিয়ে ঝগড়া করবে তাদের কেউ স্বর্গে ঢুকতে পারবে না। স্বর্গে ঢুকতে হলে পরস্পরের সাথে বন্ধুত্ব করে এরপর ঢুকতে হবে।
তারপর দেখতে দেখতে মফিজ আর আবুলের পেছন পেছন সবাই ঝগড়া করতে করতে নরকের দিকে এগোতে থাকলো!
স্বর্গ ও নরকের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীতে সৃষ্ট সকল মানুষ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।