আপনারা অনেকেই হয়তো সুষুপ্ত পাঠকের নাম শুনে থাকবেন। আজ থেকে প্রায় ২০/২২ বছর আগের কথা। নিরাপত্তার খাতিরে ওনার আসল নাম এবং পরিচয় গোপন করছি। কারনটা আপনারা হয়তো অনেকেই জেনে থাকবেন। জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ওনার খ্যাতিটাই ওনার নিরাপত্তার জন্য এখন হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওনার সর্বাঙ্গিক সাফল্য এবং মঙ্গল কামনা করছি।
ফিরে যাই যা বলছিলাম সেই প্রসঙ্গে, আজ থেকে প্রায় ২০/২২ বছর আগে ওনার সাথে আমার দেখা হয় আমাদের দোতলা ফ্ল্যাটে। ওনার মা আমাদের বাসায় কাজ করতেন। মাসিক ৩০০ টাকায় মোটামুটি সব কাজই করে দিতেন। আর আমার আম্মাও ছিলেন ভালো মানুষ। সেই সুবাদেই পাঠকদার মা তার সমস্ত সাংসারিক জটিলতা আমার মায়ের সাথে শেয়ার করতো। সেই সময় পাঠকদার বয়স কত হবে বলতে পারছিনা। তার মা কাজের সময় তাকে আমাদের সাথে রাখতেন, মাঝে মাঝে টুকটাক কাজও করে দিতে হতো পাঠকদাকে.....দোকানে পাঠানো, মাঝেমাঝে বাজারে যাওয়া এইসব আরকি। মাঝে মাঝে বাজার থেকে ফিরলে যে টাকা বাচতো, তার থেকে কিছু টাকা মা পাঠকদাকে দিতেন। ঈদ আসলে পাঠকদার মা আর পাঠকদার জন্য মা কাপড় চোপড় কিনে দিতেন। কোনো ঈদে পাঠকদার মার জন্য না পারলেও পাঠকদার জন্যতো থাকতোই।
ঈদের কথা আসায় আর একটা বিষয় মনে পরলো। আমাদের দুটি ধর্মীয় উৎসবেই অর্থাৎ ঈদ-উল-ফিতর এ যাকাত এবং ঈদ-উল-আযহায় কুরবানিকৃত মাংসের ৩ ভাগের ২ ভাগ আত্মীয় স্বজন আর গরীব দুখীদের দানের কথা বলা হয়েছে। আমি আমার মাকে সবসময়ই এই দায়িত্ব সততার সাথে পালন করতে দেখেছি। যাই হোক, পাঠকদার মা আমাদের বাসায় কাজ করতেন বলেই ওনার জন্য আলদা করে কুরবানির মাংস মা সবসময়ই রেখে দিতেন। সেই মাংস পেয়ে উনি যে কি পরিমান খুশি হতেন! একবার গরুর গোশত রান্না করে আমাদের জন্যও নিয়ে আসছিলেন....এবং বলা বাহুল্য ওনার রান্নার হাত কিন্তু যথেষ্টই ভালো। যাই হোক সেই পাঠকদাকে দেখলাম ঈদের কিছুদিন আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কুরবানি নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কথা লিখতে। এতে দেখলাম অনেকেরই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে, তবে আমার ধর্মীয় অনুভূতিতে কিন্তু আঘাত লাগেনি। বরং আমি একটু অবাক হয়েছি।এক সময়কার ময়লা ছেঁড়া আপনার সেই সার্ট থেকেও যে দুর্গন্ধ ছড়াতো পাঠক দা!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮