somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কী নিয়ে লিখবো ?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিউজল্যান্ডে বছর দশেক আগের ঘটনা দিয়ে শুরু করি। তৎকালীন পরিবেশ মন্ত্রীর উপর একটি হিসেব নিয়ে বেশ তুলকলাম কাণ্ড ঘটে গেলো, দশ হাজার নিউজল্যান্ড টাকা মন্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা হলো, কীভাবে জমা হলো তিনি ভেবে পাচ্ছেন না। এ নিয়ে মিডিয়াও বেশ ঘাটাঘাটি শুরু করতে লাগলো। বিরোধী পক্ষও এ নিয়ে বেশ মাতামাতি শুরু করলো। একমাসের মাথায় দল তাকে মন্ত্রিত্ব হতে বহিস্কার করে দিলো। তবুও এ নিয়ে নানান কানাঘুষা চলছেই, মন্ত্রী দুর্নীতিবাজ, সরকারি টাকা মেরে খেয়েছেন। রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি নানান কথা। সরকার একমাসের মাথায় তাকে কাজ থেকে ইস্তেফা দিলেন, পরবর্তী একমাসের আগেই এমপি পদও চলে যায়। তিনিও সহজ মনে কাজ থেকে রেহাই নেন। জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন প্রকাশ্যে। আর বাংলাদেশ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। একজন মন্ত্রীর কাছে চারহাজার কোটি টাকা কিছুই না।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে বরাদ্ধ দেখিয়ে লুটপাট করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এমন সংবাদ এসেছে গণমাধ্যমে। নতুন করে ফন্দি এঁটে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে খয়রাতি জন্য বরাদ্ধ লুট করছে ক্ষমতাসীনরা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কারা ধর্মের নামে অপকর্ম করছে? দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মুসলমানদের ওয়াজ , মাহফিল, এতিমখানায় খাদ্য ও হিন্দু ধর্মালম্বীদের নামযজ্ঞসহ বিভিন্ন ধর্মের জন্য এ অর্থ বরাদ্ধ করে থাকে। ধর্মের কাজে সরকারের সহযোগিতার উদ্যেগ ভালো হলেও তা বাস্তবায়নে বেশ নাজুক অবস্থা। বিশেষ কায়দায় ক্ষমতাসীনরা লুটেপুটে খাচ্ছে এ অর্থ। অস্তিত্বহীন বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ লুটের অভিযোগ এসেছে খোদ মন্ত্রণালয়ের একটি সিন্ডিকেটের বিরদ্ধে। শুধুমাত্র মাগুরা জেলাতেই ১,৭৭৬ টি মাহফিল ও নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানের জন্য ২৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। যার ৯৫ ভাগ ভুয়া, সেখানে নামে বেনামে ও মিথ্যে মাহফিল দেখানো হয়েছে।

কী নিয়ে লিখবো ভাবছি, অনেক ইস্যু হাতের কাছে। বানভাসি মানুষের কষ্টের জীবন যাপন, বিরোধী দলীয় নেত্রীর ইংল্যান্ড সফর ও আওয়ামীর ভাবনা। এরশাদের সম্প্রতি ভারত সফর, ভারতের রাষ্ট্রপতির বিদায় সহ উপজেলার নির্বাহী এক কর্মকর্তার মামলার হাকিকত, পাহাড় ধসে করুণ মৃত্যুর মিছিল,জিএমজির ঋণ কেলেঙ্কারি বেক্সিম গ্রুপের ইত্যাদি নানান ইস্যু। ভাবলাম একটু মিলিয়ে মিশিয়ে লিখি।

রাজধানী শহর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, প্রবল বর্ষায় এই দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পায়। মুক্তির পথ জনগণের সামনে ঢাকা পড়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাময়িকও কোন পথ দেখাতে পারছেন না। নিয়মতান্ত্রিক বাইরে রাস্তায় কাটাকাটি, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এই দুর্ভোগ আরও বেশি বেড়েছে। এই সমস্যা এক বা দুয়েক সপ্তাহের নয় চলছে মাসের পর মাস। সরকারের পক্ষ হতে দ্রুত নিরসনের উদ্যেগ নেই। জনগণ খুবই অসহায় এবং নিরুপায়। শীঘ্রই মুক্তির পথও খোলা নেই।
চট্রগ্রামে গলাপানিতে মানুষের এখন চলাচল। শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদ সহ সিডিএ, হালিশহর, চান্দগাও এলাকার বাসিন্দাদের পানির সাথে সকাল বিকেল খেলা করতে হয় নিয়মিত। জোয়ার ভাটার সাথে পানি উঠছে আর নামছে। কারো সঙ্গে দেখা করতে হলে সময়ক্ষণ ঠিক করে যেতে হয়। দেশের ব্যবস্থপনা প্রায় যায় যায় অবস্থা। নগরীর পরিকল্পনা বেশ দুর্বলতায় ভুগছে। পুরাতন ঢাকার অবস্থা না বলাই ভালো। লালবাগে আমার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বাড়ি, গত সপ্তাহের প্রথম দিকে রাতে গিয়েছিলাম সেখানকার অবস্থা বলবার নয়। বর্ষায় সোয়ারেজের কাজ ধরেছে। প্রায় দুইমাসের অধিক সময় অতিবাহিত হচ্ছে কাজের গতি বেশ স্থবির। জনস্বাস্থ্যের পরিস্থিতি করুণ। ময়লার ভাগার প্রতিটি গলির মুখ। ঢাকার প্রায় অংশের রাস্তার অবস্থা খারাপ। কয়েকদিনের বর্ষায় তা আরও খারাপের পথ নিয়েছে। ভাঙ্গন আর গর্তে এবড়ো থেবড়ো অবস্থা। জলাবদ্ধতা তো আছেই। তিরিশ মিনিটের পথ চলতে মানুষের ব্যয় করতে হচ্ছে আড়াই হতে তিন ঘণ্টা। প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে লাখো কর্মঘণ্টা।

দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন খোলা ড্রেনগুলো এরই মধ্যে ময়লায় ভরাট হয়ে গেছে, দীর্ঘদিন পরিষ্কার পরিছন্ন না করায় তা শক্ত হয়ে পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষণে পানি ফুলে উঠে এবং জনজীবনে প্রভাব ফেলে। এই দুর্ভোগের শেষ কোথায়? যানবাহনে পানি ঢুকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় এবং প্রবল যানজটের সৃষ্টি করে। প্রতি বছর এই নগরবাসীর নরক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়। এ নিয়ে সরকারের কোন চিন্তা ভাবনা উদয় হচ্ছে না।
প্রতিনিয়ত বাড়ছে ঢাকার পরিধি। কিন্তু বর্ধমান এই ঢাকা দ্রুত নগরায়নের সাথে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠতে পারছে না। পরিকল্পিত নগরায়ন কী তা জানে না উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্টজনেরা। সব বয়সের, শ্রেণীর, পেশার কথা চিন্তা করে বাসযোগ্য ও পরিবেশ বান্ধব নগর গড়ে তোলার দাবি জনসাধারণের। বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠা আবাসন অবকাঠামো এক তৃতীয়াংশই অপরিকল্পিত। তাই বেশির ভাগ মানুষদের পোহাতে হয় নানান যন্ত্রণায় ও সমস্যায়।

বন্যায় বসতভিটা হারিয়ে আশ্রয়হীন লাখো পরিবার, সাতটি জেলায় প্রায় ৮২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১০ হাজার ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন। সরকারি পক্ষ হতে কোন সাহায্য পাচ্ছেন না বলে তারা গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন। গত দিন কয়েক আগে কক্সবাজারে পাহাড়ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ফের দেখা দিয়েছে বন্যা, পানিবন্দি লাখো মানুষ। এই নিয়ে সরকারের মাঝে তেমন কোন উদ্যেগ নেয় সহায়তার। কেমন আছে বানবাসীর জনপদ তা মাঝে মাঝে টিভির পর্দায় দেখা যায়।
গত ২৬ জুলাই দৈনিক সমকাল পত্রিকা তার হেডলাইন করেছে সাবেক এক মন্ত্রীর দুর্নীতির বিষয় ইস্যু করে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টুকুর দুর্নীতির ফাইল গায়েব করাকে কেন্দ্র করে। দুদুকের অনুসন্ধান তাই বন্ধ! সাড়ে তিন বছরের আগে নামে বেনামে তিনি ১৬১ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ গড়েছেন, তাই তার নামে অভিযোগ জমা পড়েছিলো কিন্তু সেই ফাইল এখন গায়েব হয়ে গেছে! তাই দুদক কিছু করতে পারছেন না।

সরকারের দীর্ঘ প্রায় আট বছরের অধিক সময়ের শাসনে দেশের সম্পদ কতোখানি তাদের পকেটে ঢুকেছে তা চিন্তাও করা যাবে না। পাহাড়ি অঞ্চলের কথা বলতে গেলে বিস্তর কথা বলতে হবে। প্রতি বছর এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, কিন্তু প্রতিরোধে সরকারের পক্ষে কার্যকরী কোন পক্ষেপ নেই। পাহাড় কাটাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকার কেন যেন চুপ থাকে বরাবরই। খবরে এসেছে ত্রাণ না পাওয়ার কথা বলে দেওয়ায় সরকারের দলীয় এক নেতা এক ব্যাক্তিকে কান ডলে দিচ্ছেন। পানিতে কোলের সন্তান নিয়ে একটু আশার চাহনি দেখছেন এক নারী, এমন দৃশ্য দেখা যায় পত্রিকায় পাতায়। সরকারের কোন মন্ত্রী বা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও যাননি এই দুর্গত মানুষের দৃশ্য দেখার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×