যৌতুক। তিন অক্ষরের একটা শব্দ মাত্র। তবে এই তিন অক্ষরের শব্দকে ঘিরেই কত কান্না, কত বেদনার গল্প যে আমাদের জীবনে ঘটে যাচ্ছে তা আক্ষরে প্রকাশ করে শেষ করা সম্ভব নয়। যদিও যৌতুক শব্দটা শুনলেই আমরা নিন্দার ঝড় উঠাই কিন্তু বাস্তবে এর প্রসারে আমরা নিজেরাই নিরলসভাবে খেটে যাচ্ছি; হোক সেটা মেয়ে পক্ষ বা ছেলে পক্ষ। বরং বর্তমানে ভদ্রমুখোশে চলমান যৌতুক প্রক্রিয়া আগের দিনের যৌতুকের চেয়েও হিংস্রতর। আর একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এর জন্য মেয়ে পক্ষই বেশি দায়ী। দেখা যাচ্ছে, আগেকার দিনের মত মেয়ের বিয়ের সময় কন্যাদানের সাথে সাথেই যৌতুকের টাকা তিনি সরাসরি দিচ্ছেন না কিন্তু মেয়ে শশুরবাড়ী যাওয়ার পরপরই উপঢৌকনের নামে ট্রাকভর্তি মালামাল পাঠাচ্ছেন ছেলের বাড়ী। ছেলের বাড়ীর লোকজন হাত কচলাতে কচলাতে, “কি দরকার ছিল! কি দরকার ছিল” বলতে বলতে সব কিছু সাদরে গ্রহন করছেন। আর মেয়ের বাড়ীর লোকজন একটা প্রশান্তির অভিব্যাক্তি করছেন, “যাক, আমার মেয়েটাকে শশুরবাড়ী কোন কথা শুনতে হবে না।” এখন আবার ভদ্র সমাজের চক্ষুলজ্জা আরেক ধাপ কমে গেছে। কেউ কেউ বিয়ের সাথে সাথেই সরাসরি বাড়ি লিখে দিচ্ছেন, কেউ বা দিচ্ছেন গাড়ির চাবি, কেউ বা দিচ্ছেন সুন্দর খামে ভরা লাখ টাকার চেক। আবার এই লোক গুলোই সুধী সমাজে কথা বলার সময় যৌতুকের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত যুদ্ধও ঘোষনা করছেন। তবে সব পরিবারেই কিন্তু এমন চর্চা হয় না। অনেক পরিবার সত্যি সত্যিই যৌতুককে সামাজিক সমস্যা হিসেবে বিচেনা করে একে কখনওই প্রশ্রয় দিচ্ছেন না। সুন্দর একটা সমাজ, উন্নত মনুষত্যো জাতি হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে যেকোন মুল্যে যৌতুকের এই কড়াল গ্রাস থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৪