somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক রাজধানী

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্ত বুদ্ধি ও মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার চরণক্ষেত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সংস্কৃতিক রাজধানী নামে পরিচিত। এখানকার পরিবেশ মুক্ত প্রাণের সন্ধান করে। বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি একেবারেই আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে বিভিন্ন ভাবে এখানে সাংস্কৃতিক চর্চা চলতে থাকে। গড়ে ওঠে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিভিন্ন সময় নাটক, কবিতা পাঠের আসর, সংগীতানুষ্ঠান, বির্তক, সেমিনার ও বিভিন্ন বিনোদনমুলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এই সব সংগঠন ক্যাম্পাসবাসীর চিত্তে প্রশান্তি আনতে অনন্য ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আশির দশকের শুরু থেকে বিভিন্ন থিয়েটার ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সৃজনশীল সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি করতে এসব সংগঠন বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। প্রাথমিক অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্রুপদ, শতদল, সাংস্কৃতিক চক্র, সাংস্কৃতিক সংসদ, উচ্চারণ, উত্তরায়ন নামক সংগঠন গুলো সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে। এ ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড টিএসসিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হলেও বিভিন্ন বিভাগ গুলো নিজের মতো করে সাংস্কৃতি চর্চা করে। এসব বিভাগের মধ্যে অন্যতম হল নাটক ও নাট্যতত্ত্ব, ইংরেজি, বাংলা, সরকার ও রাজনীতি, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ উল্লেখযোগ্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিদ্যালয়ের চলমান কয়েকটি সাংস্কৃকি সংগঠনের পরিচয় তুলে ধরা হল:

জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার: দেশের মানুষের সা¤প্রদায়িকতা ও নিপীড়নবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এই সংগঠনটি ১৯৮০ সালে গঠিত হয়। এ সংগঠনের মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে শকুন্তলা, প্রেমপুরাণ, সয়ফুলমুলক, সংবাদ কার্টুন, ক্রীতদাস ও নিউটনের তৃতীয়সূদত্র বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
ধ্বনি: সংগঠনটির পথচলা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। গণমুখী শিক্ষা চেতনায় বিশ্বাস, আবৃতি, বাক উৎকর্ষতা ও শুদ্ধ উচ্চারণ চর্চার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ধ্বনি সংগঠনটি। সংগঠনটি বিভিন্ন সময় আবৃতি উৎসব, কবিতা উৎসব, আলোচনা সভা ও বাক উৎকর্ষতা বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে।
আনন্দন:সুস্থ সমাজ ও বিকশিত মেধা নিয়ে লড়াই করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দন প্রতিষ্ঠা হয় ২০০১ সালে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে এ সংগঠনটি আয়োজন করে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানমালা। আবৃতি চর্চা, গণসংগীত প্রশিক্ষণ, রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তীএসব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে সংগঠনটি।
গণশিল্পী সংস্থা: ১৯৯৯ সালে সুস্থ সমাজ ও সৃজনশীল মানুষ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে গণশিল্পী সংস্থা জাবি শাখার।মে দিবস, পহেলা বৈশাখ, বিভিন্ন নাট্য উৎসব, লোকসাংস্কৃতিক উৎসব আয়াজনের মাধ্যমেএগিয়ে চলছে এই সংস্থা।
জলসিড়ি: বাবুই পাখির মতো সৃষ্টিশীল হওয়ার বাসনা নিয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন জলসিড়ি আত্মপ্রকাশ করে ২০০২ সালে। সংগঠটি বিভিন্ন সময় ছবি আকা, ধ্রুপদী সংগীত সন্ধ্যা, গান, কবিতাসহ বিভিন্ন ধরনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা ও ক্যাম্পাসে অতিথি পাখীদের রক্ষণাবেক্ষনের আত্মপ্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নেচার স্টাডি এন্ড কনজারভেশন ক্লাব। এছাড়া আরো রয়েছে বেশকিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। রোটারেক্ট ক্ল্ াঅব জাহাঙ্গীরনগর, জাহাঙ্গীরনগর সায়েন্স ক্লাব, লিও ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটি, জাহাঙ্গীরনগর স্টুডেন্টস ফিল্ম সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটি কম্পিউটার এসোসিয়েশন, ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার জাহাঙ্গীরনগর শাখা, সাংস্কৃতিক পরিষদ, জাসাস, জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটি ডিবেটিং সোসাইটি, চারণ সংস্কৃতিক কেন্দ্র, উত্তরণ, বাধন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটি এডুকেশন ক্লাবসহ আরো অনেক সংগঠন। দেশের সাংস্কৃতিক বিশ্বিবিদ্যালয় নামে খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সংস্কৃতি চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ। এখানে রয়েছে ৭০০ আসন বিশিষ্ট সর্ববৃহৎ অডিটোরিয়াম ও মুক্ত অনুষ্ঠানের জন্য রয়েছে মুক্তমঞ্চ। এছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্মুক্ত আকাশে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আয়োজন করে বিভিন্ন নাট্যোৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যারা ভূমিকা রেখেছে এবং পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদের মধ্য অন্যতম হলেন, হুমায়ন ফরীদি, মেহেদী হাসান, ফারুখ আহমেদ, শহীদুজ্জামান সেলীম, অভিনেত্রী সুমাইয়া শিমু, দারুচিনির নায়িকা জাকিয়াবারী মম, বিন্দু, প্রখ্যাত নাট্যকার সেলিম আল-দীন, হুমায়ন রশিদ প্রমুখ।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৫৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×