ফেনসিডিলসহ আটক বিচারক জাবেদ ইমামকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করার ঘটনায় পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনারসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম এম এ সালাম বুধবার এই আদেশ দেন।
এই কর্মকর্তারা হলেন- পুলিশের উপ-কমিশনার (রমনা) নুরুল ইসলাম, নিউ মার্কেট থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম, জব্দ তালিকা প্রস্তুতকারী এস আই নূর হোসেন, মামলা লিপিবদ্ধকারী শাফিয়ার রহমান।
বিচারক আদেশে বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে এই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিভাগীর ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দেয়া হলো।
এছাড়া সাত দিনের মধ্যে এই কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের ‘নন-ক্রাইম জোনে’ পদায়নের আদেশ দেয়া হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজী নজীবুল্লাহ হিরু।
এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে।
গত ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নীলক্ষেত এলাকা থেকে ব্যাগভর্তি ফেনসিডিলসহ নিউ মার্কেট এলাকা থেকে ভোলার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জাবেদ ইমামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে তাকে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়, যেখানে তিনি যশোর থেকে এই ফেনসিডিল আনার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তির অনুরোধে টাকার বিনিময়ে তিনি ওই ফেনসিডিল আরেকজনের কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন।
এ ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর আদালতের এক আদেশে জাবেদ ইমামকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে বাধ্য করার বিষয়ে পুলিশের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
এদিন আদালতে হাজির হয়ে তার জবাব দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা দাবি করেন, ঘটনাস্থলে তাদের কেউ সেদিন উপস্থিত ছিলেন না।
“জাভেদ ইমামকে স্টিকার লাগিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করার সঙ্গে আমরা যুক্ত ছিলাম না।”
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মুঞ্জুর আলম ও আশরাফ উল আলম আদালতে শুনানি করেন। আর আসামিপক্ষে কাজী নজীবুল্লাহ হিরুর সঙ্গে ছিলেন প্রশান্ত কর্মকার ও এম এ জলিল।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এদিন বিচারক জাভেদ ইমামের জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
আদালতের লিখিত আদেশে বলা হয়, “যেভাবে গণমাধ্যমের সামনে বিচারক জাবেদ ইমামকে হাজির করা হয়েছে, তা ফৌজদারি কার্যবিধির পরিপন্থী।... পুলিশ বিচার বিভাগকে জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করেছে, যা পুলিশ কর্মকর্তারা করতে পারেন না।”
২০০৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে ২০০৮ সালের মে মাসে সহকারী জজ হিসাবে চাকরি শুরু করেন জাবেদ ইমাম। সম্ú্রতি যশোর থেকে তাকে ভোলায় বদলি করা হয়েছিল।
উৎস
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




