প্রচণ্ড গরমে বাসের সব যাত্রী যখন হাসফাস করছে, তখন আপনার অদূরেই বসা যে লোকটিকে দেখবেন গরমে নেয়ে উঠেও দিব্যি টাই বেধে নির্বিকার বসে আছে, বুঝবেন তিনি ডেসটিনি করেন। পোশাকে আশাকে বাঙ্গালীকে স্মার্ট করতে বাংলাদেশে ডেসটিনি একটি রহমত স্বরূপ। শরীরে বাতাস প্রবেশের সর্বশেষ দরজা শার্টের কলারকেও শক্ত করে টাই দিয়ে আটকে দেন তারা। কোন গরম কি চুলকানী, কোনটাই তাদের টলাতে পারেনা।
যে অলস লোকটিকে দেখলে বোঝা যেতনা আসলে সে দাড়ি রেখেছে না সেভ করতে সময় পায়নি, হঠাৎ করে যদি দেখেন সে এখন নিয়মিত ক্লিন সেভড উইথ পরিপাটি চুল, বুঝবেন নির্ঘাত সে ডেসটিনিতে যোগ দিয়েছে। যার শার্ট পেছন থেকে ক্যালেন্ডারের পাতার মত বটে থাকতো, ডেসটিনিতে যোগ দেয়ার পর থেকে তার শার্ট সর্বদা স্ত্রি করাতো থাকেই, চকচকে সু-এর সাথে ইন করাও থাকে। যার শার্টের হাতার বোতাম ঠিকমত দেখা যায়না, সে এখন দামী ক্লিপ ব্যবহার করে। সমাজের যুবকদেরকে স্মার্ট হিসেবে উপহার দিতে ডেসটিনির এই অবদান আপনি কিভাবে অস্বীকার করবেন?
মুখচোরা যে ছেলেটি সহজে কারো সথে মেশেনা, সে অপরিচিত লোকদের সাথে অতিদ্রুত মিশে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লেকচার দিয়ে আগামীর 'দেশ গড়ার অংশীদার' হিসেবে নাম লিপিবদ্ধ করায়। আপনি বুঝতে না চাইলেও আপনাকে জোড় করে বুঝিয়ে আপনাকে বারবার ফোন করে, নক করে বুঝতে বাধ্য করে যে ছেলেটি, সে ডেসটিনিতে যোগ দেবার ফলেই এই 'অভূতপূর্ব' যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই বেকারত্বের ভারে নুয্য সমাজকে এভাবে যোগ্য ছেলে উপহার দেয়ার এই দায়িত্ব পালনকারী ডেসটিনিকে আপনি কিভাবে স্বীকৃতি না দিয়ে পারবেন।
তাই একটি কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে জাতি গঠনে ডেসটিনির অবদান আমাদেরকে স্বীকার করতেই হবে।
অবশ্য কতিপয় অর্বাচীন ডেসটিনির নাম শুনলে মুখ বাঁকা করেন। তারা বলেন, যে প্রডাক্টের মার্কেটিং এই কোম্পানী করে থাকে, সেসব প্রডাক্টের আদৌ কোন চাহিদা আমাদের সমাজে নেই, শুধু কমিশনের লোভে জোড় করে এই প্রডাক্ট চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। উপরন্তু, প্রডাক্ট শুধু নামে, বাস্তবে এটি একটি দালালী ব্যবসা, যা জাতির কতিপয় যুবককে লোভী ও বিবেচনাহীন পদার্থে পরিণত করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেনা।
আমরা এ সমস্ত 'অর্বাচীনদের' কথায় কান না দিয়ে ডেসটিনির এই অবদান স্বীকার করার মাধ্যমেই নববর্ষের প্রথম দিবসটি কৃতজ্ঞতাময় করতে চাই।