গণমাধ্যমের জন্য তৈরি করা সম্প্রচার নীতিমালা তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)।
প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান খসড়া নীতিমালাটি পর্যালোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, "তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য গণমাধ্যম সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এই স¤প্রচার নীতিমালা তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটা বড় অন্তরায় হবে, যা মানুষের তথ্য জানার অধিকার এবং তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।"
গণমাধ্যমের জন্য একটি সম্প্রচার নীতিমালা সম্
প্রতি তৈরি করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিতে 'জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা'র প্রাথমিক খসড়া অনলাইনে প্রকাশের সুপারিশ করেছে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
প্রস্তাবিত এ নীতিমালা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে একটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে- এ মন্তব্য করে ইফতেখার বলেন, "আমরা আশা করবো, সরকার এমন একটি পদক্ষেপ নেবে যাতে খসড়া নীতিমালাটি বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক একটা নীতিমালা গৃহীত হয়।"
বুধবার ছিলো আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তথ্য অধিকার ফোরাম ওই কর্মসূচি আয়োজন করে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করেন, তথ্য অধিকার আইন মন্ত্রণালয়গুলো থেকে তথ্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।
"অনেক সময় মন্ত্রণালয়ে গেলেও এ কথা বলা হয় যে এ তথ্য অধিকার আইন আমাদের বেলায় প্রযোজ্য না। এই দ্বিমুখিতা থেকে সরকারকে উঠে আসতে হবে," বলেন তিনি।
২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে দেশে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর রয়েছে। আইন পাসের সময় একে যুগান্তকারী বলে আখ্যায়িত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে এরপরও তথ্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ধরে ইফতেখার বলেন, "প্রধানমন্ত্রী বলবেন এক কথা, উপদেষ্টা-মন্ত্রীরা বলবেন এক কথা। তাতে এই আইন বাস্তবায়নে কোনো সুবিধাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না।"
যে কোনো দপ্তরের তথ্য চাওয়া যায়
তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যে কোনো সরকারি/বেসরকারি দপ্তরের তথ্য চাওয়া যেতে পারে।
তবে কোনো ব্যক্তিগত তথ্য, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ তথ্য, কপিরাইট বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য, আদালত অবমাননার শামিল বিচারাধীন বিষয় সম্পর্কিত কোনো তথ্য, ইত্যাদি প্রকাশ বা প্রদান তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৭ ধারা অনুযায়ী বাধ্যতামূলক নয়।
তথ্য দেওয়ার সময়সীমা
তথ্য অধিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ২০ দিনের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। তবে তথ্য প্রদানের সঙ্গে একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট জড়িত থাকলে ৩০ দিনের মধ্যে এবং চাওয়া তথ্য কোনো ব্যক্তির জীবন-মৃত্যু, গ্রেপ্তার এবং কারাগার থেকে মুক্তি সম্পর্কিত হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
১৭৬৬ সালে সর্বপ্রথম ফিনল্যান্ড তথ্য অধিকার আইন প্রবর্তন করে। ফিনল্যান্ড তখন সুইডেনের সীমানাভুক্ত ছিলো। পরে বাংলাদেশসহ ৮০টিরও বেশি দেশ এ তথ্য জানার অধিকারকে আইনের স্বীকৃতি দিয়েছে।
তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ২০০১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আন্দোলনকর্মীরা মিলিত হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে এই দিবস পালনের সিন্ধান্ত নেয়।
তখন থেকে প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন করে আসছে।
'প্রস্তাবিত সম্প্রচার নীতিমালা তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তরায়'
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া
১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।