somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্য : ভারত চীন যুদ্ধ !!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

*মন্ত্র*

স্থান - বেজিং সেন্ট্রাল ডিফেন্স হাসপাতাল।
কাল - ১৩/১২/২০২২‚ গভীর রাত।
অজস্র থ্যাঁতলানো বিভৎস মৃতদেহ পড়ে আছে যত্রতত্র। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুড়িয়ে ফেলার তোড়জোড় হচ্ছে। তিনজন সিস্টার হাতে ক্লিপবোর্ডে সাঁটা কাগজে মৃতদেহ গুনতি করছেন। তাদেরও খুব তাড়া। এক জেনারেল এসে সিস্টারদের জিগ্যেস করে জানতে পারলেন যে ওনারা মৃতদেহ কাউন্ট করছেন ! জেনারেল সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিশর্মা হয়ে মান্দারিন ভাষায় কুশ্রী গালাগাল বর্ষণ করে হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন ক্লিপবোর্ড, ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেললেন কাগজ। ওদের বরখাস্ত করার হুমকি দিয়ে চললেন পাশের ওয়ার্ডে।
সেখানে প্রচুর সংখ্যায় সাংঘাতিক আহত, কোমায় চলে যাওয়া, অল্প আহত এমন নানারকম পেশেন্ট কাতরাচ্ছে। পুরো ওয়ার্ডে রাউন্ড দিয়ে এসে নিজের চেয়ারে বসলেন। একটা কাগজে খস খস করে রিপোর্ট লিখলেন। একটা ফোন কল এল। লেখায় বাধা পেয়ে প্রথমে বিরক্তি প্রকাশ করে আড়চোখে এল সি ডি তে নাম টা দেখেই তড়াক করে লাফ দিয়ে স্যালুট ঠুকে একটা দীর্ঘ মেয়াদি ইয়েসসস স্যর !! স্বয়ং জিং পিং !! কিছু উত্তেজিত কথা নিচুগলায় ফিসফিস করে বিনিময় হল। লেখা শেষ করে একজন কে আদেশ করলেন অল্প আহত একজন সৈনিককে তার কাছে আনতে।
একজন অসম্ভব কষ্ট করে খোঁড়াতে খোড়াতে কাছে এলে তার কাছে জানতে চাইলেন ঠিক কি হয়েছিল। সে মান্দারিন ভাষায় যা বললে তার মানে এইরকম, আমরা তো তৈরি ছিলাম যে ওরা আসলেই আচমকা লোহার রড, পাথর, তারকাঁটা ইত্যাদি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বো।সেই মত ঝাঁপিয়ে পড়লাম। ওরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে অনেকেই মার খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল, কেউ কেউ মরেও গেল। তারপরেই স্যর কি বলবো কি একটা অদ্ভুত শব্দ করে অনেকেই উঠে দাঁড়িয়ে আমাদের পাল্টা মার দিতে থাকল, আর অনবরত সেই শব্দ বলতেই থাকল !! আমাদের অনেক সৈন্য এক এক ঘায়েই সব মরে গেল ! কিছু পরে ইন্ডিয়ানরা আরও দল বেঁধে এল হাতে সব লাঠিসোঁটা নিয়ে আর প্রত্যেকের মুখে সেই অদ্ভুত পবিত্র মন্ত্র ! আপনি স্যর বললে বিশ্বাস করবেন না ওদের হাতে এমনি অনেক মার খেয়েছি কিন্তু যদি ওরা একই মার ওই মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে দেয় তবে সেই মারের চোট ভয়ানক হয় !!
তুমি এবার যাও -
আদেশ পেয়ে সে খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলে যায়। জেনারেল আরও অনেক আহত সৈনিকের ইন্টারভিউ নিলেন, নোট করলেন। কিন্তু সবচেয়ে ভাবাচ্ছে ওই সেই "মন্ত্র" !! প্রত্যেকের মুখেই ঘুরে ফিরে সেই "মন্ত্রের" কথা ! কি জানি ইন্ডিয়া সাধু-সন্তদের দেশ, অনেক মন্ত্রটন্ত্র জানে। কিন্তু মন্ত্রটা কি তা তো জানতেই হবে। কি মন্ত্র জিগ্যেস করলে ভালভাবে বলতেও পারেনা ভাষার উচ্চারণের সাংঘাতিক বিভ্রাটে। একজন অতি কষ্টে মনে করে বলেছিল "মাং চোং", "ব্যাঙ চোং", "গাঙ তোং দেংগা" ইত্যাদি। হয়তো এসব ধাপ্পাবাজি ! কমিউনিস্টদের কোন মন্ত্র-টন্ত্রে বিশ্বাস করাই পাপ ! শেষে একজন মৃত কর্নেল পাওয়া গেল যে সিভিয়ার অন্ডকোষ বার্সট করে মারা গেছিল তার বুকে একটি হাই রেজোলিউশন মাইক্রোফোন রাখা ছিল, উন্নত দেশ বলে কথা! শত্রুসৈন্যের মৌখিক শব্দ, প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি রেকর্ড করে অনেক কিছু সাইকোলজিক্যাল বিশ্লেষণ করতে হয়!
জেনারেলের আদেশে অতি উচ্চ ভল্যুমে বোস সাউন্ড সিস্টেমে বাজানো হল। একথা জেনে রাখা ভাল যে সূক্ষ্মতম পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ওরা কখোনই নিজেদের দেশীয় জিনিসে ভরসা করেনা !!
সমস্ত ওয়ার্ড, পাশের ওয়ার্ড স্টিরিও ফোনিক আওয়াজে গমগম করে উঠল........
মাদারচোদ,বহেনচোদ,লাঊড়ে কা লৌন্ড,তেরা গাঁড় তোড় দেঙ্গে........!!!!
এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখা গেল !!
কিছু আহত সৈনিক বেডে শুয়ে কেউ স্যালাইন, কেউ ব্লাড,কেউ অক্সিজেন নিচ্ছিল। এই ইন্ডিয়ান "মন্ত্র" শুনে সব ছিঁড়ে খুঁড়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে সিস্টারদের, ডাক্তারদের ধাক্কা মেরে হাসপাতালের দরজা খুলে গভীর অন্ধকারে বিলীন হয়ে গেল !!

(সাম্প্রতিক সময়ে তাওয়াং বর্ডারে ভারতের সেনাদের কাছে চীনা সেনারা প্রচন্ড মার খেয়ে পালাতে বাধ্য হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই রম্যটি লিখেছেন আমার বন্ধু পঙ্কজ কুমার দাস।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×