একেই তো সেটা মধ্যযুগ! চারিদিকে কুসংস্কার! তারউপর খোদ সিংহাসনে যে বসে আছে সে ধর্মান্ধ তাহলে প্রজাদের চোখ আর খোলে কিভাবে?
ফলে কাশ্মীর ( এবং সারা ভারত ) ছিলো কুসংস্কার আর অশিক্ষায় ডুবে।
তা এমন এক সময় মানে ১৬৯২ সালের মে মাসের ঘটনা এটা। রমজান মাস চলছে তখন। সবাই রোজা রাখছে। হঠাৎ মীর হসেন নামে কোনো এক আগন্তুক এসে ( সম্ভবত পীর টাইপ কেউ হবে) ঘাঁটি গাড়ল তখত-ই-সুলাইমান পাহাড়ে। সেখানেই তার আশ্রম হলো। স্বাভাবিকভাবেই নতুন কেউ আসায় আশেপাশের এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য আর কৌতুহল শুরু হল।
তা একদিন সে হঠাৎ বলল তার আশ্রমে সে আলো দিয়ে সাজাবে। সম্ভবত দীপাবলীর অনুকরণ করতে চেয়েছিল বেচারা। তা যেদিন তার আশ্রমে আলোকসজ্জা করার কথা ছিলো‚ সেদিন বিকেলের কিছু আগে হঠাৎ শুরু হলো তুমুল ঝড়, বৃষ্টি আর বজ্রপাত! পুরো উপত্যকা অন্ধকারে ছেয়ে গেলো।
ফলে সূর্য ডুবে গেছে ভেবে ইফতার করে নিলো উপত্যকার সবাই।
আর এদিকে ঘন্টা দুই পরে ঝড় থেমে‚ মেঘ কেটে সূর্য উঠে গেলো! ব্যস সবার মাথায় হাত। সবাই রাগে - দুঃখে - ভয়ে পাগল হয়ে গেলো।
আর এই সব রাগ গিয়ে পড়ল সেই মীর হুসেনের উপরে। যে‚ ওই হতভাগা হিন্দুদের মতো আচরণ করার চেষ্টা করেছিল বলেই সেই গুনাহে ( পাপে) এমন হয়েছে। সবাই দলে দলে আক্রমণ চালালো মীর হুসেনের দরগায়। মুমিনদের ধর্মপালনে আঘাত হানার অভিযোগ করা হল মীর হুসেনের বিরুদ্ধে!
এবং এই অভিযোগ মেনে নিয়ে মুঘল প্রশাসন হুসেনকে কাশ্মীর থেকে বের করে দিলো।
[ source - এ শর্ট হিস্ট্রি অফ আওরঙ্গজেব‚ যদুনাথ সরকার ]
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:৩৮