ট্রেনের ভিতর একজন আরেকজনকে জিজ্ঞস করলেন, 'কি দাদা, অফিসে চল্লেন?' ঝাঁঝালো উত্তর এলো, 'তা নয় তো কি? সকালবেলা ভিড় ঠেলে বাইজিবাড়ি যাচ্ছি নাকি?'
একটা ট্রেন স্টেশানে দাঁড়িয়ে আছে, একজন লোক হন্তদন্ত হয়ে এসে জানলার ধারে বসা ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলেন, 'দাদা এটা কি সব স্টেশনে থামবে?' ভদ্রলোক পেপার থেকে চোখ সরিয়ে গম্ভীরভাবে উত্তর দিলেন, 'কেন আপনি কি সব স্টেশনে নামবেন?'
চলন্ত ব্যান্ডেল লোকালে একজন ট্রেনের হাতল ধরে ছুটতে ছুটতে প্রশ্ন করলেন, 'দাদা, এটা কি ব্যান্ডেল?' তাৎক্ষণিক নির্বিকার উত্তর ভেসে এল, 'না এটা হ্যান্ডেল।'
দমদম থেকে সন্ধ্যেবেলার নারকীয় ভিড় জয় করে একজন একটা ট্রেনের পাদানীতে কোনওক্রমে ঠাঁই পেয়েছেন। গোটা শরীরের ৮০% দরজার বাইরে, কেবল একহাতে একটা হাতল কোনওক্রমে ধরতে পেরেছেন। ট্রেন গতি নিয়ে নিয়েছে আর তার কানের পাশ দিয়ে পোষ্টগুলো সাঁইসাঁই করে চলে যাচ্ছে। ভদ্রলোক চিৎকার করছেন, 'দাদা, একটু চাপুন, একদম ঝুলছি যে।' ভেতর থেকে কে একজন উদাস গলায় বলে উঠলো , 'শুধু ঝুললে হবে? মাকে বলুন কমপ্ল্যান দিতে।'
নিজের কলেজ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ট্রেন প্রায় হাওড়া স্টেশন ছাড়বে, ঠিক সেই সময় এক যুবক জিজ্ঞাসা করে উঠলো, 'দাদা, বালি ধরবে?' শুনতে পেলাম একজন ব'লে উঠল, 'সিমেন্ট লাগালেই ধরবে।'
বালি স্টেশনে নামার আগে একজন ব'লে উঠল, 'সামনে কি সব বালি?' ভীড়ের মধ্যে থেকে উত্তর এলো, 'কয়েকটা সুগ্রীবও থাকতে পারে।'
একদিন প্রচন্ড ভীড়। প্রায় কামরা খালি করে সবাই বালি স্টেশনেই নামবে। ভিতর থেকে একজন প্রশ্ন করল, 'দাদা বালি কোন দিকে পড়বে?' কেউ একজন ব'লে উঠল, 'যে দিকে ডালা খুলবে, সে দিকেই পড়বে।'
বিধাননগর স্টেশনে দাড়িয়ে আছি। একজন হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে স্টেশনে দাঁড়ানো অন্য একজনকে জিজ্ঞাসা করলো, 'দাদা কোন ট্রেন আসছে?' লোকটি নির্বিকার চিত্তে উত্তর দিলো, 'লোকাল ট্রেন।'
সোনারপুর স্টেশনে একজন বয়স্কা ভদ্রমহিলা আর এক জনকে ডাকছে, 'এ টেঁপি দেবড়ে আয়, নক্কী পোঁ দেচে।' অর্থাৎ কিনা, এ টেঁপি দৌড়ে আয়, লক্ষীকান্তপুর লোকাল হর্ণ দিচ্ছে।
শেষমেশ, মেট্রোর রোজকার একটা ঘটনা বলি।
রবীন্দ্র সরোবর ছাড়ার পর..
- দাদা, আপনি কি উত্তমকুমার?
- না আমি ক্ষুদিরাম।
- তাহলে একটু সাইড দেবেন দাদা, আসলে আমি উত্তমকুমার, পিছনে মাষ্টারদা আর নেতাজীও আছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৮