অনেক ভারতীয় দের দেখি কেবল পেয়াজ, আলু, কাঁচা মরিচ এসবের উদাহরন দিয়েই সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি দের আক্রমন কে প্রতিহত করে! তাই আমরা বাংলাদেশে কি কি পন্য রপ্তানি করি সেই বিষয়ে আমাদের জানা থাকা দরকার।
ভারত যেসব পন্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে, তার মধ্যে প্রধান ৩ টি আইটেম হলো.....
১) রিফাইন্ড পেট্রোলিয়াম বা পরিশোধিত তেল। বাংলাদেশে কাঁচা খনিজ তেল পরিশোধন করার একটি মাত্র তেল শোধনাগার আছে। যেটাও তৈরি হয়েছিল পাকিস্তান আমলে! যা বাংলাদেশের চাহিদা পূরণ করায় অক্ষম হওয়ায় ভারত থেকে সরাসরি পরিশোধিত খনিজ তেল কিনতে হয়।
২) বিশুদ্ধ সুতা বা পোশাক তৈরির জন্য সুতা। বাংলাদেশের বিশ্বের সবচেয়ে সস্তার গারমেন্টস সেক্টরের জন্য সবচেয়ে সস্তায় সুতা জোগান দেয় ভারত। যা পৃথিবীর কোন দেশ থেকে সম্ভব নয়।
৩) তুলা। সুতা এর পাশাপাশি ভারত থেকে সবচেয়ে সস্তা ও সাশ্রয়ী মূল্যে তুলা ও বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। এই তুলা বাংলাদেশে নিয়ে সুতা তৈরি করা হয়।
এবার আসি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথায়। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড হচ্ছে ওদের গারমেন্টস সেক্টর। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫% আসে এই গারমেন্টস তথা পোশাক রপ্তানি থেকে! একবার কল্পনা করুন যে একটি দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫% ই আসে একটি মাত্র পন্য থেকে! কতটা দূর্বল জায়গা এটা। আর এই গারমেন্টস সেক্টরে বহু মানুষ কাজ করে বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা পারিশ্রমিক এ। বাংলাদেশের বহু মানুষের জীবন-জীবিকা চলে এই গারমেন্টস ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে।
আরেকটি জানার বিষয় হলো বাংলাদেশের এই অতি সস্তা শ্রমিক দ্বারা তৈরি সস্তা মূল্যের গারমেন্টস পন্য রপ্তানি হয় আমেরিকা ও ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে। সেটাও একেবারে বিনা শুল্কে। কারন বাংলাদেশ এখনো অফিশিয়ালি একটি গরীব দেশ। উন্নয়নশীল দেশের তকমা পায়নি। তাই উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ কে পন্য রপ্তানি তে শুল্ক ফ্রি সাহায্য দেয়। পৃথিবীর যেসব দেশ এখনো উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে পারেনি, তাদের পন্য রপ্তানি তে শুল্ক ছাড় দেয় আমেরিকা ও ইউরোপের উন্নত দেশগুলো। বাংলাদেশ ও এই সুবিধার মাধ্যমেই সস্তায় পোশাক রপ্তানি করতে পারে। আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে পোশাক অর্ডার করে কেবল শুল্কমুক্ত হওয়ার কারনে তুলনামূলক সস্তা হওয়ায়।
বাংলাদেশের এহেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে চলে ভারত থেকে অতি সস্তা কাঁচামাল(সুতা এবং তুলা) এর জোগান এর কারনে।
এছাড়াও বাংলাদেশের গারমেন্টস সেক্টরে ইউরোপীয় ও আমেরিকান ক্রেতা দের সাথে দরদাম সামলানো, ডিল করা ইত্যাদির জন্য ওদের নির্ভর করতে হয় দক্ষ ভারতীয় কর্মী দের উপর। কারন একাজে উপযুক্ত দক্ষ জনবল নেই বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের পোশাক এর বায়িং হাউস গুলো সব ভারতীয়রা সামলায়! যারা বিদেশি ক্রেতা দের সাথে যোগাযোগ রাখে।
এছাড়াও বাংলাদেশে গারমেন্টস সেক্টরের ২৫% ভারতীয় কোম্পানি দের মালিকানায়। ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি ভারতে কারখানা না খুলে বাংলাদেশে ইউনিট খুলে বসে আছে সস্তা শ্রমিক আর শুল্কমুক্ত রপ্তানি বাজার ধরার জন্য।
(আন্তর্জাল থেকে পাওয়া)