somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৩য় বর্ষপূর্তি পোষ্টঃ (যদিও কিছুটা ক্ষুদ্ধ তবুও) ধন্যবাদ সামু!!!

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুক্ষন আগে বাংলা লেখার জন্য সামু'তে এসে দেখি ব্লগিংয়ের ৩ বছর হয়ে গেছে!

নষ্টালজিক হয়ে পড়লাম, আহ ব্লগ!

২০১০ এর শুরু'র দিকে এক বন্ধুর কাছ থেকে মুক্তমনা ব্লগের নাম শুনে ঢু মারলাম। স্বাভাবিকভাবেই ওদের ইসলাম বিদ্বেষী সব লেখা পড়ে চুপ করে থাকতে পারি নাই। জবাব দেয়ার তাগিদে মুক্তমনার ভার্চুয়াল কি-বোর্ডের একটা একটা অক্ষর ক্লিক করে করে ঘন্টা ধরে একটা মন্তব্য করতাম। প্রথম মন্তব্য পাবলিশ হলো, আল্লাচালাইনা আর লীনা নামের ২জন রিপ্লাইও করলো, এভাবেই চলছিল। কিন্তু ধর্মবিদ্বেষী বিদ্বানদের মাঝে হাসফাঁস করতাম। মাঝে মাঝে ওখানে দেখতাম, সামু'র নামে বেশ নালিশ করতো অনেকে, আমি বুঝলাম, ঐখানেই আমার যাওয়া দরকার। কিন্তু বাংলা দেখা যেত না আমার ল্যাপটপে। কিভাবে যেন ডিসেম্বর মাসে প্রবলেম সল্ভড হয়ে গেল।

সামুতে রেজিস্ট্রেশন করলাম। দেখলাম, বাহ ধর্মপ্রেমী বিদ্বানরাও আছে বাংলা ব্লগ জগতে, এস. এম. রায়হান, ডঃ মাহফুজদের মত খাঁটি ভদ্রলোকদের দেখলাম, এক্স নামের এক চরম হিউমোরাস একজনও ছিল, ম.জ. বাসার নামের আরেক মহাপাপী ছিল, রাগ ইমনের লেখাগুলো দেখে বেশ চমকিতই হলাম, ফিউশন ফাইভকে দেখে বুঝলাম সুন্দর সবসময় সহজ, আসিফকে দেখে মনে হতো ভবিষ্যতে ইসলামিক জাগরন তৈরীর জন্য না বুঝেই 'শক থেরাপী' ব্যাবহার করছে, পারভেজ ভাইকে দেখলাম যৌক্তিক ও সজ্জন ভদ্রলোক, দাসত্বকে মনে হতো বিএনপি নামের একটা একলা তরী, মাঝে মধ্যে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে এসে ঢেউ তুলে যায়, ধীবর ভাইকে দেখতাম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ঝান্ডা নিয়ে দৌড়াতে, দূর্যোধনকে পেলাম অসম্ভব রকমের হিউমোর নিয়ে লেখতে, ইমন জুবায়ের ভাইয়ের মত ঋষিকে দেখলাম এই ব্লগেই, যিনি প্রতিদিন ঢাকা'র উচু ভবন থেকে সুর্যোদয়ের ছবি পোস্ট করতেন আর আমি ফেসবুক থেকে ৬ হাজার কিলোমিটার দুরে বসেই ঢাকা'র সূর্যোদয় দেখতাম। চিরতরুন এবং আমার চেয়ে অনেক বেশি আধুনিক প্রজন্মের ত্রিশোনকু মল্লিক ভাইকে পেয়েছি একটি মাত্র কবিতা দিয়েই। ম্যাভেরিক ভাইকে দেখলাম নিরলস জ্ঞানচর্চা করতে, মশিউর মামা'কে পেলাম যিনি শুধুমাত্র অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্যই জ্বলে উঠে দাড়িয়েছিলেন আমার পাশে, ব্লগার অনিরুদ্ধের কমেন্টেই প্রথম উৎসাহ পেয়েছিলাম। এর বাইরেও বহু ভাল মানুষ দেখেছি, নারী ব্লগারের প্রতি ভাললাগা জন্মেছিল, আবার অনেক অনেক জঘন্য কিন্তু অসহায় তরুনদের ঘৃণাও করেছি।

আমার ইচ্ছা ছিল একেবারে এ্যাকাডেমিক দৃষ্টিতে একেবারে নিরপেক্ষ বিশ্লেষন করা, যেন আমার পড়াশোনার নোট হয়ে যায় সাথে সহব্লগারদের সাথেও এ্যাকাডেমিক কিছু বিষয় শেয়ার করতে পারি। কিন্তু নতুন ঢাকায় আসা অল্পবয়সী কিছু ছ্যাচরা পোলাপানের খোঁচাখুচিতে বুঝলাম আমি ভেজিটেরিয়ান হবার মানে এই নয় যে হায়েনার পাল আমাকে খাবে না।

যাইহোক, এরপর দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়া হয়ে গেল। যা মন চেয়েছে তাই লিখেছি, জেনে শুনে কখনো অন্যায় আক্রমন করি নাই কাউকে, আলোচনা করেছি, ক্যাচাল করেছি, সমর্থন দিয়েছি, ব্যান হয়েছি, ব্যান করিয়েছি, সিন্ডিকেট ভেঙ্গেছি কিন্তু সিন্ডিকেট গড়ি নাই। সামু'তে তো বটেই আমু, সচল, নাগরিক ব্লগগুলোতেও ভিন্ন নিকে যেয়ে মাঝে মধ্যে ঢু মেরে দেশ ও জাতি'র শত্রুদের মখা আলমগীরের মত 'ঝাঁকি' দিয়ে এসেছি।

সবসময় প্রায় একলাই চলেছি, সেজন্যই ব্লগের অশুভ চক্রের সাথে সবসময় লড়াই করতে হয়েছে, তবুও দেশ ও ধর্মের বিপক্ষে যায় এমন কোনকিছুর সাথেই আপোষ করি নাই।

আস্তে আস্তে ব্লগের মেধাবী লেখক-পাঠক কমে গেল, ব্লগ আকর্ষনহীন হয়ে গেল, আমি ফেসবুকে চলে এলাম, ব্লগার হিসেবেই ফেসবুকে ছিলাম এখন স্বনামে আছি, এখন ব্লগে যাই শুধু বাংলা লিখতে আর বড় বড় স্ট্যাটাস পোস্ট করতে!

কিন্তু আমাকে বলতেই হবে যে, ব্লগ আমার জন্য বিশেষ কিছু। এই ব্লগের আকর্ষনের কারনেই আন্ডারগ্র্যাডে প্রত্যাশিত ভাল রেজাল্ট হয় নাই কারন ক্যাচালগুলো সব শুরু হতো পরিক্ষার সময় আর গত ৩ বছর ধরে আমি অতিরিক্ত সময় দিচ্ছি ব্লগিংয়ের পেছনে (যদিও ২০১৩'র শুরু থেকেই ব্লগে প্রায় নেই বললেই চলে), কিন্তু ব্লগ আমাকে রেজাল্টের চেয়ে অনেক বেশী কিছু এনে দিয়েছে।

সামহোয়ারইনব্লগ যেমনই হোক, যাদেরই হোক আমার জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হয়ে গেছে এটা নিশ্চিত।

যদিও আপনাদের প্রতি অনেক যৌক্তিক ক্ষোভ ধারন করি তারপরও আমাকে ব্লগিংয়ের তাগিদ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ মুক্তমনা, আর আমাকে ব্লগার বানানোর জন্য ধন্যবাদ সামু।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪১
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×