somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বান্দরবান এর অদেখা রূপ (পর্ব-৩) রেমাক্রিখুম

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বান্দরবান এর অদেখা রূপ (পর্ব-১) মেঘের কাছাকাছি
বান্দরবান এর অদেখা রূপ (পর্ব-২) বড় পাথর

আমরা যখন তিন্দু পৌছলাম আকাশ তখনও মুখ গোমরা করে আছে। তিন্দু বাজার দেখে পেটের ক্ষুধাটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। মনে পড়ল সকাল থেকে এ পর্যন্ত পেটে মুড়ি ছাড়া আর কিছু পরে নি। কিন্তু একি......!!!! :| :|
বাজারে গিয়ে দেখি আমাদের আগের দুটো দল এসে সব খাবার শেষ করে গেছে। এমনকি কলা পর্যন্ত নাই। :(( :(( :(( কি আর করা চা আর বিস্কুট দিয়ে ক্ষুধাটাকে কোনরকমে চাপা দিলাম। তিন্দুতে বেশি সময না কাটিয়ে আমরা রওনা দিলাম রেমাক্রির উদ্দ্যেশ্যে।
যত আগাচ্ছিলাম বৃষ্টি তত কমে আসছে। চারপাশের পাহাড়ি সৌন্দর্য কয়েকশ গুন বাড়িয়ে দিচ্ছিল বর্ষার সবুজ। কত রকমের সবুজ যে হতে পারে না দেখলে বিশ্ষাস করা কঠিন।





এররকম প্রচুর ঝরনা পরবে রেমাক্রি যাওয়ার পথে।

মাঝে একবার নৌকাথেকে নামতে হল। এ পর্যন্ত যতবার নেমেছিলাম তার মধ্যে এবারে সবচেয়ে গভিরে নামতে হয়েছিল। আমার প্রায় কাধ পর্যন্ত ডুবে গিয়েছিল। (যদিও আমার উচ্চতা খুব একটা ভাল!!! না :!> :!> :#> :#> )


যাই হোক চড়াই উতরাই পেরিয়ে এগোতে এগোতে মাঝি আমাদেরকে দূরের পাহাড়ে দৃষ্টি আকর্ষন করল। দেখলাম কিছু ঘর দেখা যাচ্ছে। আমরা গন্তব্য স্থল দেখতে পেয়ে একটু স্বস্তি পেলাম।


রেমাক্রি বাজার

কিন্তু একটা বড় সারপ্রাইজ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল তা আমরা তখনো ভাবতে পারিনি।
বেশ কিছুক্ষন আগানোর পরে আমাদের কানে পানির স্রোতের আওয়াজ আসতে লাগল। আরো কিছুক্ষন আগানোর পর যা দেখলাম তা দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
রেমাক্রি খাল এ যায়গায় এসে সাংগুর সাথে মিশেছে। জায়গার নাম রেমাক্রিখুম। বাংলাদেশে এররকম জলপ্রপাত আছে আর তার সামনে আমি দাড়িয়ে আছি এ কথা বিশ্বাসই হচ্ছিল না।


এটা বাংলাদেশে বিশ্বাস হয়?





ততক্ষনে আমরা নৌকাকে ঘুরিয়ে রেমাক্রিখুম এর পাশে নিতে বললাম। নৌকা একপাশে রাখার সাথে সাথে আমরা নেমে পরলাম পানিতে। এখান পাথর গুলো বেশ পিচ্ছিল।খালি পায়ে না নামাটাই উত্তম। আমরা জুতো পরে নামার পরেও কয়েকজন আছাড় খেল!!!
আপনি হেটে প্রায় পুরো জলপ্রপাতের উপর দিয়ে হাটতে পারবেন।




এখানে এসে এইরকম ভাব আপনি ধরতেই পারেন.........!!

আমরা এখানে বেশ কিছুক্ষন সময় কাটানোর পরে নাফাখুম এ যাওয়ার পথটা একটু দেখে আসতে চাইলাম। যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু হল হাটা। নাফাখুম এ যেতে হলে রেমাক্রিখুম ধরে ভেতরের দিকে আপনাকে এগোতে হবে।


নাফাখুম এর পথে


নাফাখুম এর পথে



এররকম প্রচুর পাথর চোখে পরবে নেফাখুমএ যাওয়ার পথে।



নেফাখুমএ যাওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই!!

কিছুক্ষন আগানোর পর আমরা খেয়াল করলাম আমাদের সাথে আমাদের গাইড নেই!!! মেজাজ টা কেমন লাগে। গাইড ছাড়া আমরা আর বেশিদূর এগোলাম না। তা ছাড়া সূর্যি মামাও ততখনে একদিকে হেলতে শুরু করেছে। কি আর করা আমরা ফেরত আসলাম। ফেরত এসে দেখি আমাদের নৌকা নেই সেখানে দাড়িয়ে আছে উপজাতিদের একটা নৌকা!!! এবার দু:শ্চিন্তায় পরে গেলাম। উপজাতিদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম আমাদের নৌকা বাজারে চলে গেছে। তারা বলল তাদের নৌকায় আমরা দুইজন যেতে পারব কি আর করা দুইজনকে পাঠালাম আমাদের নৌকাকে খুজে নিয়ে আসতে। কিছুক্ষন পর আমাদের নৌকা আসল। গাইড ব্যাটাকে একধাপ ঝাড়ার ইচ্ছাটা খুব কষ্ট করে সংবরণ করলাম। রেমাক্রি বাজারে এসে আমরা বি,ডি.আর. এর কাছে রিপোর্ট করলাম। তারা আমাদের কে রেমাক্রি রেস্ট হাউজে থাকার ব্যবস্থা করে দিল।
আমরা ফ্রেশ হয়ে খাবার এর ব্যবস্থা করতে গেলাম। খাবার এর ব্যবস্থা করতে করতে রাত্র হয়ে গেল। ।ঈদের তিনদিন পর চাদের যে আকার হয় তাতেই চাদের যে আলো না জানি ভরা পূর্ণিমায় চাদের কি অবস্থা হয়। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম এর পরের বার ভরা পূর্ণিমায় চাদের আলোতে নেফাখুম এ বারবিউ করতেই হবে!!
রাত্র প্রায় আটটায় আমরা রাতের খাবার খেলাম। খাবার টা বেশ ভাল ছিল। পেট ভরে খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পরলাম পরেরদিনের অভিযানের জন্য। কারন আগামীকাল আমাদের তাজিংডং যাত্রা।B-)B-)

চলবে...........

ছবি ব্লগ (বান্দরবানের অদেখা রূপ-১)

ছবি ব্লগ (বান্দরবানের অদেখা রূপ-২)
৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×