somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পলায়ন

০৪ ঠা জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি দুঃখ বিলাস
কষ্টের নীল সাগরে করি বসবাস
দুঃখ অথবা কষ্ট নয় গলার ফাঁস
তবুও একগুয়ে টেকে সব একদিন
প্রার্থনা জানাই প্রভুর কাছে
পাঠিয়ে দাও অন্য কোথাও
মিটিয়ে দিবো ঠিকই জন্ম সৃষ্টির ঋন।

চলে প্রার্থনার পর প্রার্থনা
কেন জানি তা মন্জুর হয় না
অনিশ্চতায় দুদল্যমান এ মন
তবুও ইচ্ছা পুরণে ইচ্ছা সঙ্গী সারাক্ষন।

অবশেষে একদিন প্রার্থনা হয় মন্জুর
আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নীল সাগর থেকে বহুদুর
বিস্তৃণ ধু ধু সেই মরু শহর
মরিচিকা আর বালির ফাঁদ কিছু দুর পর পর
অগণিত দিন আর রাত হেটে হেটে পার হয়ে যাই
এই আশায় যদি নতুন কিছুর সন্ধান পাই
বিষ বাষ্পে ভরা প্রখর সূর্যে শুনি বিষাদের রাগিণী
রাতের স্নিগ্ধ চাঁদ আসে নিয়ে সন্জীবনী।

এভাবে অনেকদিন পর
দেখা পাই নতুন এক শহর
সেখানে গাছ আছে, ফুল আছে, পাখী আছে
মানুষ আছে। তাদের মনে লোভ , হিংসা, পাপ, তাপ সবই আছে।
আছে বিষাদে ভরা বিষন্নতা।
হিংস্রতা, রুক্ষতা, বন্যতা।
এত কিছুর পরে তাদের জীবনে জড়িয়ে আছে ভালবাসা
তারা বেঁচে আছে নিয়ে দু'চোখ ভরা স্বপ্ন আর আশা।

বেচে থাকার জন্য বেছে নিই এই শহর
তৈরি করি সেখানে এক কুড়ে ঘর
অভ্যস্ত হয়ে উঠি শহরের আলো বাতাসে
আর কল্পনার ফানুস উড়াই মনের আকাশে।

হঠাৎ একদিন শহরে এসে হাজির হয় 'খারাপ সময়'
সূর্য তখন সারাটা সময় মাথার উপরেই রয়
দিন যায়, যায় সপ্তাহ, মাসের পর মাস
'খারাপ সময়' হয়ে থাকে শহরের গলায় ফাঁস।
শহর পুড়ে পুড়ে ছাই হতে থাকে প্রচন্ড তাপে
বিশ্বাসীরা বলে এটা হচ্ছে শহরবাসীর পাপে
তারা জড়ো হয়ে দলবেধে প্রভুর কাছে প্রার্থনা জানায়
নিজের কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা চায়
কেউবা আবার আকাশ বাতাস কাপিয়ে চিৎকার করে
'বৃষ্টি চাই, বৃষ্টি চাই, আমরা সবাই বাঁচতে চাই' প্রভুর তরে।

প্রভু নিশ্চয় তার সৃষ্টির প্রতি নয় এত নিষ্টুর
কালো মেঘ ভেসে আসে, সরে গিয়ে প্রখর রোদ্দুর
শহরের মাথার উপর, মেঘে ঢাকা মৃত দুপর
বিষন্ন বিকেল রুপে জন্ম নেয় নতুন করে
কালো মেঘের ভেলায় চড়ে।

এরকম একটা অলস সময়ে, বারন্দায় বসে একাকী
বদ্ব চোখ আর খোলা মনে চলে ভাবনার দেয়ালে আকা আকি
হঠাৎ শুকনো পাতার মর্মর শব্দ
ভাবনায় ছেদ ঘঠায় মনে মনে ক্ষুব্দ
তাকিয়ে দেখি আমার উঠনোর শেষ মাথায়
হেটে যাচ্ছে অচেনা এক মানবী সুর তুলে শুকনো পাতায় পাতায়
হঠাৎ কি ভেবে সে পিছনে তাকায়
বিষন্ন বিকেলেও তাকে এক টুকরো রোদের হাসির মতই দেখায়
মন ভরে উঠে অজানা এক ভাল লাগায়
হাসির ঝিলিক মিলিয়ে যেতে না যেতেই সে চলে যায়
এ মন চায়, আবার যেন তার দেখা পায়।

তারপর...অনেকদিন তার দেখা নেই
প্রায় ভুলতে বসেছি আমি তাকে যেই
সে ধীর পায়ে নুপরের ছন্দ তুলে আসে
এক টুকরো রোদ যেন আবার হাসে।

পরিচয় হয়, কথা হয়
মানবী নিজের কথা অকপটে কয়
মানবীর জীবনও বিষাদে ভরা
তবে তার মনটা নয় আর সবার মত মরা

সে ঘাস ভালবাসে, ভালবাসে ঘাসফড়িং
সে প্রজাপতি হতে চায়, উড়তে চায় তিড়িং বিড়িং
সে বৃষ্টি ভালবাসে, ভালবাসে বৃষ্টি ভেজা আকাশ
সে ভালবাসে সবুজ ধানের ক্ষেতে দোল দেয়া বাতাস
জোছনা রাতে চাদের আলোয় সে নদীর বুকে ভাসতে চায়
সে জোনাক পোকা ধরতে চায়
তবে একা নয়, একজন সঙ্গী যেন পায়।
তার স্বপ্নে, সারি সারি ইউকিলিপট্যাস আছে দাড়িয়ে
গাছের মাঝ দিয়ে পায়ে চলা পথ গেছে দুরে কোথাও হারিয়ে
নির্জন সেই পথ ধরে, হাতে পরে হাত রেখে
সে হাটতে চায় সুখ স্বপ্ন বুকে একে একে।

তার এই স্বপ্নগুলো আমার স্বপ্নহীন জীবনে দেয় দোলা
ভাবি জড়িয়ে যাচ্ছি মায়ায়, যাবে কি তাকে সহজে ভোলা

আমি দুঃখ বিলাস
মায়া, বন্ধন, ভালবাসা মনে হয় যেন গলার ফাঁস
মায়া, বন্ধন, ভালবাসায় খুব ভয় পাই
এসব থেকে অনেক দুরে থাকতে চাই
নেই তাই আর কোন উপায়
জানাতে হবে বিদায়
ছাড়তে হবে এ শহরের মায়া
মাড়িয়ে সব স্মৃতি ছায়া
বের হতে হবে খুঁজে নতুন শহরের
হোক তা যত দুরের, যত কষ্টের।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×