এক
সকাল থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে। মুনের এমন দিন খুব ই পছন্দ। সারাটা দিন পাতলা কঁাথা গায়ে জরিয়ে বিছানতে আধশোয়া হয়ে উপন্যাস পড়া যায়। কিন্তু আজকের দিনটা অমন শান্তিপূণর্ না। ঘুম ভাঙ্গলো বাবা-মার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে।
এই ব্যাপারে মুন যার পর নাই বিরক্ত। কােজর েময়েটা চা দিতে এসে কাপখানা ভাংলো। নাস্তার েটবিলে পিকলু মুনের িডম পোচের কুসুম খানা েভঙ্গে েফল্ল। ঘরথেকে বের হওয়ার সময় বাপ্পি ফোনে জানালো আজকে কোচিং-এ ক্লাস হবেনা।
তার মানে আজকে আর ঘর থেকে আর বেরুনো হবেনা। মুনের খুশি হবার কথা, তার বদলে মেজাজ গরম হচ্ছে। পিকলু তৈরি হয়ে স্কুলে চলে গেল। বাবাও বেরিয়ে গেল। মা কাপড় গুছােচ্ছ। নানু বাড়ি যাবে। ৩ দিনের আগে আসবে না। মাসে ৩-৪ বার ঝগরা করে মা তার বাপের বাড়ি যান। ঘটনাটা এখন নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাড়িয়েছে।
সবাই চলে যাবার পর মুন কিছুখন বারান্দায় দাড়িয়ে থাকলো। কিছুখন তিন গোয়েন্দার একটা বই নিয়ে পৃষ্টা উল্টালো। একটু ফেস বুকে বসলো। নাহ্ কিচ্ছুই ভালো লাগছেনা। মুন তার ঘরের মদ্ধে পায়চারি করতে লাগলো।
দুই
সকাল থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে। সালমা খুবই বিরক্ত বোধ করে এমন দিনে।
উঠোনটা পর্যন্ত কাদা কাদা হয়ে যায়। কিন্ত আজকে সালমার ঘটনা টাও উল্টো।
বেড়ার ফঁাক দিয়ে আসা সকালের আলোয় ঘুম ভাঙলো সালমার। জানালার পাশে আমড়া গাছটাতে একটা হলদে পাখি ঘাড় ঘুরিয়ে ডাকছে। জালা ঘর থেকে মার গলা শোনা গেল।
ও রে সালুউউউউ, বলি মুখ পুড়ি আর কত ঘুমাবি। ইশকুলে যাতি হবিনা না-কি?
মার কথায় ফিক করে হেসে দিল সালমা। তাড়া তাড়ি করে বিছানা ছাড়লো। কোন মতে বিছানাটা একটু গুছিয়ে দৌড়ে জালাঘরে মার পাশে দ-হয়ে বসে পড়ল। চুলার পাশ থেকে একটা কয়লা তুলে দাত মাজলো। মা ছিটা রুটি বানাচ্ছে। সাথে লাল লাল আলু ভাজি। কোন মতে দুইটা রুটি নাকে মুখে গুজে বই খাতা একটা পলিথিন ব্যাগে ভরে দৌড় দিল। একটু আসতেই দেখলো রজব একটা বড় কচুপাতা মাথায় ধরে দাড়িয়ে আছে।
কিরে কি খবর? সালমা দৌড়ে রজবের কাছে এসে জিঞ্জেস করলো।
রজেবের েচাখ চক চক করছে।
দুটা ফুটিছে, বুঝলি। এই টুুকুনি এক একটা। দেকবি ত চল।
চল।
সালমা বেনি দুলিয়ে সায় দিল। রজবের উত্তেজনা ওর মদ্ধেও প্রবাহ হল।
দুজনে হাত ধরাধরি করে দৌর দিল উত্তরের জলাটার দিকে।
বাহ্ কত সুন্দর। ধরি?
সালমা এক দৃিষ্টতে টুনটুনির ছানা দুটাকে দেখছে।
নাহ্। ধরিসনে। মরি যাতি পারে।
রজবের চোখে মুখে বেশ একটা অবিভাবক সুলভ ভাব।
সালমা আকাশের দিকে তাকালো। আরো অনেক্খন বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। হঠাৎ কি মনে হতে, পলিেথনের ব্যাগ থেকে বই গুলো বের করে রজবের হাতে দিল।
ব্যাগটা পািখর বাসার উপরের একটা ডালে সুুন্দর করে আটকে দিল। এখন আর ছানা দুটোর গয়ে পানি লাগবেনা। দুইজনের মুখেই হাসি ফুটে উঠলো।
ইশকুলের ঘন্টা শুনা যাচ্ছে। সালমা আর রজব বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দৌড়চ্ছে। রজবের কচু পাতাটা কোথাও ফেলে এসেছে। ওরা ভিজছে আর হাসছে আর দৌড়াচ্ছে।
তিন
মুন কখন যেন ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে। ওর ঘুমন্ত মুখটা হাসি হাসি। ও সপ্ন দেখছে, একটা জংলা যায়গায়, কোন এক নাম না জানা গাছের ডালে কোন এক অচেনা পাখির বাসায়, দুটো ছানা পোনা বৃষ্টিতে গড়া গড়ি খচ্ছে। মুন হাত বাড়িয়ে ছানা দুটোকে আড়াল করলো। সে ওদের ভিজতে দিবেনা। মুন হাসছে। ওর ঘুমন্ত মুখে রাজ্যের সপ্নালুতা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




